26.2 C
Dhaka
Thursday, July 31, 2025

নামের মিল থাকায় মাদক মামলায় জেল খাটলো ‘নিরপরাধ’ কলেজছাত্র

গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আসামির সঙ্গে শুধুমাত্র নাম ও বাবার নামের মিল থাকায় মাদক মামলায় এক কলেজছাত্রকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় গোদাগাড়ী মডেল থানা পুলিশ। পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে আদালতের মাধ্যমে মঙ্গলবার (১৪ মে) কলেজ শিক্ষার্থীকে কারাগার থেকে বের করে মুক্তি দেয় পুলিশ।

এর আগে গত সোমবার (১৩ মে) ওই কলেজছাত্রকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় থানার এসআই আতিকুর রহমান।

ভুক্তভোগী কলেজছাত্রের নাম ইসমাইল হোসেন (২১)। তিনি গোদাগাড়ী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের ফাজিলপুর গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে। তার মায়ের নাম মোসা. মনোয়ারা বেগম। ইসমাইল গোদাগাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের একাদশ শ্রেণীর মানবিক বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র।

অন্যদিকে, মাদক মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আসামির নাম ইসমাইল হোসেন (২০)। তিনি গোদাগাড়ী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের লালবাগ হেলিপ্যাড গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে। তার মায়ের নাম মোসা. বেলিয়ারা। আসামি ইসমাইল পেশায় কাঠমিস্ত্রি। মাদকমামলায় আসামি হওয়ার পর থেকে সে ভারতের চেন্নাইয়ে কাঠমিস্ত্রির কাজ করছে।

আরও পড়ুনঃ  নারায়ণ*গঞ্জে বিএনপির মিছিলে গুলি করা ডিবির সেই কনক গ্রে*ফতার

কলেজছাত্র ইসমাইল হোসেনের ভাই আব্দুল হাকিম রুবেল জানান, গত রোববার (১২ মে) এশার নামাজের সময় গোদাগাড়ী মডেল থানার এসআই আতিকুর রহমান আমাদের বাড়িতে আসে। এসময় তিনি একটি মাদক মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেখিয়ে আমার ভাই ইসমাইল হোসেনকে ধরে নিয়ে যায়।আমরা এসআইকে বার বার বলেছি তার নামে কোনো মাদক মামলা নেই। এসময় তার জাতীয় পরিচয়পত্রও দেখানো হয়েছে। গ্রেপ্তারি পরোয়ানার সঙ্গে গ্রাম, মায়ের নাম ও বয়স মিল নেই সেটিও দেখানো হয়।তারপরও এসআই জোরপূর্বক আমার ভাইকে ধরে নিয়ে যায় এবং পরের দিন ৫০ গ্রাম হেরোইন রাখার দায়ে মাদকদ্রব্য আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠায়।

আরও পড়ুনঃ  ছেলেরা বেশির ভাগ সময় গাড়িতেই কাজ করতে বাধ্য করে

মামলাটির বিবরণে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট রাত পৌনে ১১টার দিকে গোদাগাড়ীর মাদারপুর জামে মসজিদ মার্কেটের সামনে থেকে রাজমিস্ত্রি ইসমাইল হোসেনকে ৫০ গ্রাম হেরোইনসহ গ্রেপ্তার করে রাজশাহী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

রাতেই তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে গোদাগাড়ী মডেল থানায় মামলা করেন ডিবির এসআই ইনামুল ইসলাম। পরদিন তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এর এক মাস পর গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর মামলার অভিযোগপত্র দেয়া হয়।

চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি ইসমাইল হোসেন জামিনে মুক্তি পায়। এরপর সে ভারতের চেন্নাই চলে যায়। সেখানে গিয়ে তার বাবার সঙ্গে কাঠমিস্ত্রির কাজ করছে। তার বাবা আব্দুল করিম ছয় বছর ধরে চেন্নাইতে রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  বিভেদ ভুলে এক হচ্ছে গণ অধি*কার পরি*ষদের দুই গ্রুপ

পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে নাম্বার সংগ্রহ করে ইমু অ্যাপসে যোগাযোগ করা হলে নিজে মাদক মামলার আসামি কথা স্বীকার করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আসামি ইসমাইল হোসেন।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার সকালে গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি আব্দুল মতিন বলেন, কিছুটা ভুল বোঝাবোঝি হয়েছে। মূল আসামির সঠিক ঠিকানা পাওয়া গেছে। যাকে ভুল করে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল তার জন্য আদালতে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। পরে তাকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।

গোদাগাড়ী সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি) সোহেল রানা বলেন, কিভাবে এ ধরণের ভুল হল বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ