26.4 C
Dhaka
Friday, August 1, 2025

ট্রাম্পের সঙ্গে ব্যক্তিগত সমস্যা নেই, রিপাবলিকান দলেও বন্ধু আছে: ড. ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সঙ্গে তার কখনও কথা হয়নি। তাই তার ব্যক্তিগত কোনো সমস্যা নেই। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটিক পার্টির মতো রিপাবলিকান পার্টিতে তার বন্ধু আছে বলেও জানান ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সম্প্রতি কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেন তিনি। আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন (কপ২৯) চলাকালে এ সাক্ষাতকার নেয়া হয়। পরে গত রোববার (১৭ নভেম্বর) সাক্ষাতকারটি সম্প্রচার করে আলজাজিরা।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আল-জাজিরার সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ড. ইউনূস বলেন, এগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন প্রোপাগান্ডা। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, বেশিরভাগ প্রোপাগান্ডার উৎস ভারত, তা সে যে কারণেই হোক, হতে পারে এই উত্তেজনা জিইয়ে রাখার জন্য। কিন্তু বাস্তবে এর কোনো অস্তিত্ব নেই।

আরও পড়ুনঃ  জামায়াত ক্ষমতায় এলে হিন্দুরা সবচেয়ে বেশি যে সুবিধা গুলো পাবে : রফিকুল ইসলাম

সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা বেড়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, সহিংসতা বাড়েনি। আমি বলব, সহিংসতা কমেছে। বিপ্লবের সময় সহিংসতা শুরু হয়েছিল। হিন্দু বা অন্যান্য ধর্মাবলম্বী হওয়ার কারণে তাদের ওপর সহিংসতা হয়নি।

তাদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগের লোক ছিল। সুতরাং সহিংসতা হয়েছিল আওয়ামী লীগ-সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে।…তারা (গণ-অভ্যুত্থানকারীরা) আওয়ামী লীগের লোকজনের ওপর ক্ষুব্ধ ছিল। আর এসব ব্যক্তি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিল।

ট্রাম্প ও তার প্রশাসনকে সামলানো প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অতীতে ট্রাম্পের সঙ্গে আমার কখনো যোগাযোগ হয়নি। সুতরাং তার সঙ্গে আমার কোনো ব্যক্তিগত সমস্যা নেই। কিন্তু যদি দলের কথা বলি, আমার রিপাবলিকান পার্টিতেও বন্ধু আছে, ডেমোক্রেটিক পার্টিতেও বন্ধু আছে।

আমাকে কংগ্রেসনাল স্বর্ণপদক দেয়ার ব্যাপারে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ ভোট দিয়েছিল, তাতে উভয় দল থেকে শতভাগ সম্মতি মিলেছিল। সেখানে কোনো সমস্যা নেই। সুতরাং, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হয়েছেন বলে হঠাৎ করে নতুন কোনো সমস্যার উদয় হবে, আমি তেমনটি মনে করি না।

আরও পড়ুনঃ  সাগরে প্রবল ঘূর্ণিঝড় দানা, সবশেষ বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে যে বার্তা দিলো আবহাওয়া অধিদপ্তর

তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি, কে প্রেসিডেন্ট হলেন তার ওপর নির্ভর করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি বদলে যায় না। এটি অনেকটাই স্থিতিশীল। ফলে, এই অঞ্চলের জন্য ট্রাম্প ভিন্ন কোনো অবস্থান নেবেন না বলেই বিশ্বাস করেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান।

শেখ হাসিনার পতন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আপনি বাংলাদেশে অবস্থান করলে এমনটা ভাবতে আপনাকে পাগলাটে হতে হবে। শিক্ষার্থীরা রাজপথে বিক্ষোভ করেছেন, প্রাণ দিয়েছেন। যখন মব (উচ্ছৃঙ্খল জনতা) সবদিক থেকে তার (শেখ হাসিনা) বাসার দিকে যাচ্ছিল, তখন তার পরিবারই তাকে পালাতে বলেছে। কারণ, অন্যথায়, মব পুরো বাড়ি দখল করবে।…এই পরিস্থিতিতে দেশ থেকে বের হতে সহায়তার জন্য তিনি সেনাবাহিনীকে ডেকেছিলেন। আর সেনাবাহিনী তাকে দেশ থেকে বের হতে, ভারতে চলে যেতে সহায়তা করেছিল। এভাবেই বিষয়টি ঘটেছিল।…এটা ছিল শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। আর তাতে দেশের সব মানুষ যোগ দিয়েছিল।

আরও পড়ুনঃ  মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারকে পেটানো কে এই যুবক

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার পতনের সময় আমি তখন দেশে ছিলাম না। তাই ঘণ্টায় ঘণ্টায় কী ঘটছিল, তা আমি জানতে পারছিলাম না। গণমাধ্যমে যা আসছিল, আমি শুধু তা-ই জানতে পারছিলাম। আমি চূড়ান্ত ফলাফল জানতে পেয়েছিলাম।…কারণ আমাকে সরকার গঠনের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আমাকে ফোন করে বলা হয়েছিল, আমরা আপনাকে সরকার গঠনের জন্য আমন্ত্রণ জানাই। এই পরিস্থিতিতে দেশে তিন দিন সরকার ছিল না। কারণ, আমি দেশে ছিলাম না। দেশে আসার পর আমি শপথ গ্রহণ করি। এভাবে সরকার গঠিত হয়। সুতরাং তখন এই অনিশ্চয়তা, অপ্রত্যাশিত বিভিন্ন ঘটনা ঘটছিল। এ সবকিছু ঘটানোর জন্য কেউ কোথাও থেকে পরিকল্পনা করেনি। এ রকম কিছু ঘটেনি।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ