32.5 C
Dhaka
Saturday, July 12, 2025

পুলিশ কর্মকর্তার রিভলবারের আঘাতে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে গেছেন মিঠু!

এবার বরিশালে অনলাইনে জুয়া খেলার অজুহাতে এক যুবককে রিভলবারের বাট দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে উজিরপুর থানার অন্তর আহমেদ নামে পুলিশের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এতে মানসিক সমস্যায় ভুগছেন ওই যুবক। চিনতে পারছেন না পরিবারের কাউকে। চিকিৎসাধীন আছেন বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের বিচার দাবি করেছেন স্বজনরা। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

এদিকে হাসপাতালের শয্যায় অস্বাভাবিক আচরণ করছেন এই যুবক। চিনতে পারছেন না নিজের স্ত্রী-সন্তান এবং পরিবারের কাউকেই। সুস্থ ও স্বাভাবিক মানুষটির এই দশা কীভাবে হলো? স্বজনরা জানান, গত ৩০ মে সন্ধ্যায়, বরিশালের উজিরপুর উপজেলার মুন্ডপাশা গ্রামের বাসিন্দা মেহেদী হাসান মিঠু বাড়ির আঙিনায় বসে বন্ধুদের সঙ্গে মোবাইলে লুডু খেলছিল।

আরও পড়ুনঃ  ‘আরিফুলকে কতদিন বলেছি, আমার জীবনটা শেষ করে দিস না, নিউজ আইটেম বানাইসনা’

সেসময় উজিরপুর থানার সাব ইন্সপেক্টর অন্তর আহমেদ দুজন পুলিশ উপস্থিত হন। মোবাইলে জুয়া খেলা হচ্ছে বলে দাবি করে পুলিশ। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এর এক পর্যায়ে এসআই অন্তর তার সঙ্গে থাকা রিভলবারের বাট দিয়ে মিঠুর মাথায় একাধিক আঘাত করেন।

মিঠুর চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এলে জুয়া খেলার অপরাধে তাকে আটকের হুমকি দেন এসআই অন্তর। পরে ২০ হাজার টাকা ঘুষ দিলে মিঠুকে ছেড়ে দেয়া হয় বলে জানান স্বজনরা। এরপর অসুস্থ হয়ে পড়লে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় মিঠুকে। বর্তমানে মানসিক রোগীর মতো আচরণ করছেন মিঠু।

আরও পড়ুনঃ  ঢাবিতে কোটা আন্দোলনের সমন্বয়ককে মারধর ছাত্রলীগের

এদিকে ভুক্তভোগী মিঠুর বাবা হারুন মেয়া বলেন, ‘আমার ছেলেকে কোনো ধরনের কারণ ছাড়াই মারধর করা হয়েছে। অসুস্থ হয়ে পড়লে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছি। বর্তমানে মানসিক রোগীর মতো আচরণ করছে আমার ছেলে। এমন ঘটনার বিচার চাই।’

এ সময় ভুক্তভোগী মিঠুর মা তাসলিমা বলেন, ‘আমি অনেক অনুরোধ করছি তারপরও পুলিশ আমার কোনো কথা শোনেনি। গলা চেপে ধরে মারধর করছে মিঠুকে। আমার সুস্থ ছেলেকে মানসিক রোগী বানিয়ে ফেলেছে। এ ঘটনার বিচার চাই।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত এসআই অন্তরের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। যদিও এসআইয়ের পক্ষেই সাফাই দিয়েছেন উজিরপুর থানার ওসি। অবশ্য অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। এদিকে উজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবু জাফর বলেন, ‘এসআই অন্তরের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি।’

আরও পড়ুনঃ  রংপুরের ৩৩ আসনে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করলো জামায়াত

এদিকে বরিশালের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো রেজোয়ানুল ইসলাম বলেন, ‘এসআই অন্তরের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখব। যদি এসআই অন্তরের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে ভুক্তভোগী মিঠু মানুসিক ট্রমার ভেতরে আছেন। তাই তাকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের মধ্যে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ