বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় এক শিক্ষার্থী হত্যার ঘটনায় মামলা না নেওয়ায় রাজধানীর লালবাগ থানায় অবস্থান নিয়েছেন ছাত্র-জনতা। আজ শনিবার রাতে নিহত শিক্ষার্থী খালিদ সাইফুল্লাহের পরিবারের করা মামলা না নেওয়ার জেরে এই অবস্থান গ্রহণ করেন তারা।
এসময় সেখানে সেনাবাহিনীরও উপস্থিতি দেখা গেছে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখার সময় সেখানে তাদের অবস্থান করতে দেখা গেছে।
জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিহত খালিদের বাবা ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে লালবাগ থানায় এসেছিলেন। কিন্তু থানা পুলিশ মামলা নিতে গড়িমাসি করে।
পরে বিষয়টি জানাজানি হলে ছাত্র-জনতা থানায় অবস্থান নেন। এসময় থানার ওসি খন্দকার হেলাল উদ্দিন থানা থেকে সটকে পড়েন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
আরও পড়ুনঃ বরিশালে ছাত্রলীগ কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা
বরিশালের গৌরনদীতে রাশেদ সিকদার (২২) নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে যুবদল নেতার বিরুদ্ধে। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) দিবাগত রাত ৮টার দিকে উপজেলার বার্থী বাসস্ট্যান্ডে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রাশেদ বার্থী ইউনিয়নের বড়দুলালী গ্রামের আবুল কালাম শিকদারের ছেলে। নিহতের মা হাসনু বেগম বলেন, আমার ছেলে রাশেদ নাতি রাফসানকে (২) দেখতে শুক্রবার দুপুরে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি গৌরনদীতে গিয়ে জুম্মার নামাজ পরে বাসায় যায়।
নিহতের স্ত্রী সুমী আক্তার বলেন, মোবাইলে কল করে ছাত্রদল কর্মী সাইমুন আমার স্বামীকে সন্ধ্যার পর বার্থী বাজারে যেতে বলেন। এরপর আমার স্বামী বাজারে যায়। সেখানে তাকে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে।
নিহতের বড় ভাই রাসেল শিকদার বলেন, রাশেদ ঢাকা ইসলামবাগ এলাকায় আমার ব্যবসা দেখাশুনা করে আসছিল। বার্থী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আলামিন তালুকদার ও তার ভাই হামিম তালুকদার আমার ভাই রাশেদ শিকদারের কাছে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। নয় তো এলাকায় থাকতে দেবে না বলে হুমকি দিয়ে আসছিল।
চাঁদা না দেওয়ায় শুক্রবার রাত ৮টার দিকে রাশেদকে ডেকে নিয়ে আলামিন তালুকদার, ছাত্রদল কর্মী সাইমুন তালুকদার, হামিম তালুকদারসহ ১০/১৫ জনে মারধর করে। আত্মরক্ষার জন্য রাশেদ দৌড়ে বার্থী বাজারের কামরুলের দোকানে আশ্রয় নেয়। সেখান থেকে ধরে বার্থী বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে হামলাকারীরা রাশেদকে বেধড়ক পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয়। এরপর তাকে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকরা ঢাকায় নিতে বললে আমরা ঢাকায় নেওয়ার পথেই মারা যায়।
ব্যবসায়ী কামরুল বলেন, রাশেদ আমার দোকানে আশ্রয় নেওয়ায় হামলাকারীরা আমার দোকান ও মোটরসাইকেলে ভাঙচুর চালায়।
এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিন্টু বলেন, হত্যাকারী যে-ই হউক না কেন তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
বার্থী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক বিপুল সরকার বলেন, রাশেদ শিকদার মাঠে নেমে রাজনীতি করত না। সে (রাশেদ) তার ফেসবুক আইডিতে ছাত্রলীগের সমর্থনে বিভিন্ন সময় পোস্ট দিয়ে আসছিল। ছাত্রলীগ সমর্থন করায় তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেন বিপুল সরকার।
গৌরনদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, খবর পেয়ে রাশেদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে রাশেদকে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ এনে নিহতের ভাই রাসেল শিকদার বাদি হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাতনামা পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।