টাঙ্গাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা স্থানীয় এক চেয়ারম্যানের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। বুধবার (২১ আগস্ট) দুপুরে মির্জাপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই অভিযোগ করেন। অন্যদিকে, অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রউফ।
জানা যায়, ৫ আগস্ট বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ফতেপুর এলাকায় বিজয় মিছিল করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এরপর ৬ আগস্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কয়েকজন ছাত্রকে হুমকি দেন। অন্যদিকে, চেয়ারম্যানের ছেলে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসও দেন শিক্ষার্থীদের দেখে নেবেন বলে। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত ৩ নম্বর ফতেপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতিও।
হাট ফতেপুর গ্রামের মৃত মো. পরান সিকদারের ছেলে মো. সৌরভ সিকদার বলেন, এলাকায় ৫ আগস্ট একটি বিজয় মিছিল বের করি। এর পরদিন ৬ আগস্ট আমাদের চেয়ারম্যান মামলার হুমকি দেন এবং তিনি বলেন, আমরা কীভাবে এলাকায় থাকি সেটি তিনি দেখে নেবেন। এই ভয়ে রাতে ঠিকমতো বাড়িতে থাকি না। দিনে এলাকায় ঘোরাঘুরি করলেও সতর্ক অবস্থায় থাকি কখন জানি আমাদের ওপর চেয়ারম্যানের লোকজন অতর্কিত হামলা চালায়।
ঢাকা সিটি ইউনিভার্সিটির অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের এই ছাত্র বলেন, আমাদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজন এনেছিলেন চেয়ারম্যান।
ছাত্র আন্দোলনকারী পারভেজ মিয়া জানান, চেয়ারম্যান ইউনিয়ন পরিষদটি একটি আওয়ামী লীগ অফিস বানিয়েছিলেন। সেখান থেকেই সব সিদ্ধান্ত নেন। দেশের সব জায়গাতেই ছাত্র আন্দোলন করা হয়েছে। আমাদের এলাকায় তিনি বাধা দেন। শুধুই এটুকু নয়, চেয়ারম্যানের ছেলে মো. আলামিন ফেসবুকে আমাদের হুমকি দিচ্ছেন। তিনি কত বড় নেতা আওয়ামী লীগের সেটা বোঝা যায়। তিনি সরকারের কাছে দাবি করেন, দ্রুত এই আওয়ামী লীগের নেতাকে অপসারণ করার জন্য।
ফতেপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আনোয়ার হোসেন রফিক বলেন, ছাত্রদের আন্দোলনে বাধা দেওয়ার জন্য গত ৪ আগস্ট ইউনিয়ন পরিষদে একটি মিটিং ডাকেন তিনি। সেই মিটিংয়ের মাধ্যমেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন এলাকার ছাত্রদের আন্দোলন করতে দেবেন না।
মির্জাপুর উপজেলার সমন্বয়ক ইমন সিদ্দিকী কালবেলাকে জানায়, মির্জাপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মাঠে নামেন। এতে ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ক্ষমতাবান হওয়ায় ছাত্রদের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকমের হুমকি দিচ্ছেন। তিনি শুধু এলাকাতেই ক্ষান্ত হননি। তিনি ফেসবুকেও হুমকি দিচ্ছেন।
অভিযোগের বিষয়ে ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রউফ কালবেলাকে জানায়, আমি তো নিজেই পলাতক ছিলাম। ছাত্ররা আমাকে ধরে মির্জাপুরে নিতে চেয়েছিল। এ ভয়ে আমার প্রেশার, ডায়বেটিস বেড়ে যায়। এ কারণে আমি মির্জাপুর হাসপাতালে চার দিন ভর্তি ছিলাম। আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ বানোয়াট।