22 C
Dhaka
Thursday, February 20, 2025

আশুলিয়ায় বর্বরতা চালানো পুলিশ কর্মকর্তা বরিশালের আ.লীগ নেতার ছেলে

‘ঢাকার আশুলিয়ায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের গুলি করে হত্যার পর মরদেহ ভ্যানে স্তূপাকারে রাখছে পুলিশ’ এমন একটি ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটিতে যেসব পুলিশ সদস্যদের দেখা গেছে তাদের মধ্যে একজনকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। শনাক্ত হওয়া ওই পুলিশ সদস্যের নাম আরাফাত হোসেন।

তিনি ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আরাফাত হোসেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগে লেখাপড়া শেষ করে ২০২২ সালে বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেন। তার গ্রামের বাড়ি বরিশাল জেলার হিজলা উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডে বলে স্থানীয় ও জনপ্রতিনিধিরা নিশ্চিত করেছেন।

আরাফাত হোসেনের পিতা আরিফ হোসেন ওই ওয়ার্ডের বদরটুনি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। ২০১৪ সালে অবসরগ্রহণ করেন বলে জানান বদরটুনি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক ইব্রাহিম খলিল।

আরও পড়ুনঃ  সাবেক বিমানমন্ত্রী ফারুক খান গ্রেপ্তার

তিনি বলেন, আরিফ হোসেন স্যার এলাকায় খুবই সজ্জন ব্যক্তি। তিনি একটি রাজনৈতিক দলের নেতা ছিলেন। কিন্তু সকলের সাথেই সহমর্মিতা ও সহাবস্থানে চলতেন।

হরিনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ তৌফিকুর রহমান বলেন, আরিফ হোসেন স্যার উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন অনেক আগে। এখন তার বয়স ৮৫ বছরের বেশি। বার্ধক্যজনিত কারণে খুব একটা বাইরে বের হন না। তার ছেলে আরাফাত হোসেন পুলিশে যোগ দিয়েছেন এবং ঢাকায় গোয়েন্দা বিভাগে আছেন বলে জানি।

এদিকে বর্বরতার ওই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর লোকচক্ষুর আড়ালে চলে গেছেন সেই পুলিশ সদস্য। তার সঙ্গে কোনো উপায়ে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। আরাফাতের টিমের সদস্যরা দাবি করেছেন, আন্দোলনকারী হত্যার সঙ্গে তারা জড়িত ছিলেন না। মূলত ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) আব্দুল্লাহিল কাফীর নির্দেশনা পালন করেছে। সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এর আগের ও পরের ঘটনার সঙ্গে তারা জড়িত নন।

আরও পড়ুনঃ  আমি পদত্যাগ করেছি: হাসিনা

উল্লেখ্য, শুক্রবার (৩০ আগস্ট) মরদেহ স্তূপাকারে জমা করার এই চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। ছড়িয়ে পড়া ১ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, দুজন পুলিশ সদস্যের একজন হাত ও একজন পা ধরে মরদেহ ভ্যানে নিক্ষেপ করছেন। এর আগেই ভ্যানে লাশ স্তূপ করে কাপড় দিয়ে ঢেকে দেন তারা। সর্বশেষ লাশটি তুলে একটি ব্যানার দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। শেষে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি দেখা মেলে। ভিডিওর ১ মিনিট ৬ সেকেন্ডে একটি পোস্টার দেখা যায়, যা স্থানীয় ধামসোনা ইউনিয়ন সভাপতি প্রার্থী ও ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী আবুল হোসেনের। সেই পোস্টারটি দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে ভিডিওটির ঘটনাস্থল আশুলিয়া থানার পাশে।

আরও পড়ুনঃ  আওয়ামী লীগের পাল্টা অভ্যুত্থান প্রসঙ্গে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জানা গেছে, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও শেখ হাসিনার পালানোর খবর ছড়িয়ে পড়লে আন্দোলনকারীরা আশুলিয়া থানার দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। এসময়ে আন্দোলনকারীদের গুলি করে হত্যা করেন পুলিশ সদস্যরা। নিহতদের লাশ ভ্যানে তুলে গোপন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিহতদের মরদেহ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে পুলিশ বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ