24 C
Dhaka
Thursday, February 20, 2025

পদ্মা সেতু থেকে এক বছরের আয় এসেছে দুই বছরে

গত সাড়ে ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের নজর বেশি ছিল অবকাঠামো উন্নয়নে। একের পর এক মেগা প্রকল্পের নামে বিদেশি ঋণ নেওয়া হয়েছে। পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাগুলোর পরামর্শকে পাশ কাটিয়ে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে বিনিয়োগ হয়েছে সবচেয়ে বেশি।

সবচেয়ে আলোচিত পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পসহ সড়কের আরও অনেক প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। বেশ কিছু প্রকল্প শেষ হলেও এসব প্রকল্পের লাভ তো দূরের কথা, বিনিয়োগ তুলে আনাও এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পটি ছিল আওয়ামী সরকারের সবচেয়ে বড় প্রকল্পগুলোর একটি। বিশ্বব্যাংকের বিনিয়োগ বাতিল হওয়ার পর সেটি নির্মাণ করা হয়েছে দেশীয় অর্থায়নেই। ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার এ প্রকল্পটির ব্যয় নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। ২০২২ সালের জুনে এটি উদ্বোধন করা হলেও এখনো বেশ কিছু কাজ বাকি রয়েছে।

২০২২ সালে সেতুটি উদ্বোধনের পর সেতু কর্তৃপক্ষ ধারণা করেছিল শুধু টোল আদায়ের মাধ্যমে প্রথম বছরই আয় হবে ১ হাজার ৬০৪ কোটি টাকা। কিন্তু দুই বছর পর চলতি বছরের জুন শেষে এ সেতুর মোট আয় হয়েছে ১ হাজার ৬৪৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের প্রত্যাশিত আয় এসেছে দুই বছরে।

আরও পড়ুনঃ  ‘কোর্ট ১ মাস সময় দিয়েছে, শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ব্যবস্থা নেব’

সেতু কর্তৃপক্ষের হিসাবে প্রথম বছরে মোট ৫৭ লাখ ১৭ হাজার ৪৬টি যানবাহন পার হয় এবং টোল আদায় হয় মোট ৮০১ কোটি ৪৪ লাখ ২৭ হাজার ২০০ টাকা। দ্বিতীয় বছরে মোট যানবাহন পারাপার হয়েছে ৬৯ লাখ ৯৬ হাজার ২২৯টি এবং মোট টোল আদায় হয়েছে ৮৪৭ কোটি ৩১ লাখ ৯১ হাজার ১০০ টাকা।

এ ছাড়া ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথটি নির্মাণ হচ্ছে চীনের ২৬০ কোটি ডলার ঋণ অর্থায়নে। ঋণের সুদহার নির্ধারণ করা হয়েছে ২ শতাংশ। এর সঙ্গে সার্ভিস চার্জ হিসেবে আছে আরও দশমিক ২৫ শতাংশ। প্রকল্পের ঋণ পরিশোধে নির্ধারিত পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ড এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। তবে এখনো এর ঋণ পরিশোধ শুরু হয়নি। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছর থেকে ১৫ বছর ধরে এ ঋণ ও ঋণের সুদ পরিশোধ করতে হবে সরকারকে।

আরও পড়ুনঃ  বাংলাদেশি দুই জাহাজ সহ ৭৮ নাবিককে আটক করল ভারত

এ প্রকল্পগুলোতে ব্যবস্থাপনা জোরদার করার দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ এবং বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. মুস্তফা কে মুজেরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, যে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা হয়েছে এগুলোকে যদি সঠিকভাবে পরিচালনা করা যায়, ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে করা যায়, তাহলেই বিনিয়োগ তুলে আনা সম্ভব। কারণ এ টাকাগুলো ইতিমধ্যে সেখানে বিনিয়োগ হয়ে গেছে, তা বন্ধ করারও কোনো প্রশ্ন নেই। তাছাড়া দুর্নীতিও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, তা না হলে সফল হওয়া সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, দুর্নীতি বন্ধ ও ব্যবস্থাপনা যদি সঠিকভাবে না করা যায় তাহলে কোনো প্রকল্পই সফলতার মুখ দেখবে না।

উইকেটের পর অদ্ভুত উদযাপনে ভাইরা ক্যারিবিয়ান নারী ক্রিকেটাররাউইকেটের পর অদ্ভুত উদযাপনে ভাইরা ক্যারিবিয়ান নারী ক্রিকেটাররা
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এখনো আমাদের মেগা প্রকল্পগুলো যদি যাতায়াতের করিডর হিসেবে থেকে যায়, তাহলে অবশ্যই বড় শঙ্কার ব্যাপার ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে।

আরও পড়ুনঃ  মসজিদের ভেতরেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন কৃষক

এ প্রকল্পগুলো যাতায়াত করিডর থেকে অবশ্যই অর্থনৈতিক করিডরে রূপান্তর করতে হবে। সে ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক করিডর করতে হলে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ লাগবে। সেখানে শিল্পকারখানা ভারী কারখানা আমরা সুপরিকল্পিতভাবে বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য যা যা পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, তা যদি সময়মতো না নিতে পারি, সেখানে বড় ঝুঁকি দেখতে পাচ্ছি।’

এ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘এত বড় বিনিয়োগ শুধু যাতায়াতের করিডর হওয়ার সুযোগ আমরা দেখছি না। এ প্রকল্পগুলোর ঋণ টাকায় না, আমাদের ডলারে শোধ করতে হবে। আমরা বিনিয়োগ না আনতে পারি, ডলার না আনতে পারি তাহলে অবশ্যই বড় ঝুঁকি আছে।’

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ