27 C
Dhaka
Sunday, October 19, 2025

রাবি শিবির সভাপতির ওপর ছাত্রলীগের লোমহর্ষক নির্যাতনের বর্ণনা

দীর্ঘ ১৭ বছর পর প্রকাশ্যে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতির নাম। এরপর প্রকাশ পেয়েছে ঢাবি সেক্রেটারির নাম। এবার জানা গেল ছাত্রশিবিরের রাজধানী খ্যাত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতির নাম।

রাবি সভাপতির নাম প্রকাশ্যে আসতে না আসতেই তার ওপর ছাত্রলীগের লোমহর্ষক নির্যাতনের ঘটনা সামনে এসেছে।বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের হাতে নির্যাতিত হওয়ার পর প্রশাসনের বিরুদ্বে কোনোরকম সহযোগিতা না করারও অভিযোগ রয়েছে।

আহমাদ আহসানুল্লাহ ফারহান নামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় শিবির সভাপতিসহ কর্মীদের ওপর লোমহর্ষক নির্যাতনের বর্ণনা দেন। ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ’ নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ক্লোজ ফেসবুক গ্রুপে ঘটনাটি তুলে ধরা হয়।

পোস্টে বলা হয়, সময়টা ২০১৮ সাল। রাজশাহী ইউনিভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষার আগেরদিন রাতের ঘটনা। বর্তমান প্রেসিডেন্টসহ (তখন ২য় বর্ষে ছিল) প্রায় ১৫-২০ জন ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা রাতে ক্যাম্পাস ঘুরে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি ক্যাম্পাস দেখছিলেন। এই ১৫-২০ জনের মধ্যে ফার্স্ট, সেকেন্ড ইয়ারের অনেক স্টুডেন্ট ছিল।

আরও পড়ুনঃ  জুনে বিএনপি নেতার মৃত্যু হলেও আগস্টে হত্যা দেখিয়ে মামলা, এলাকায় চাঞ্চল্য

তারা হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ ছাত্রলীগের ৩টা বাইক এসে তাদের পথরোধ করে বিভিন্ন প্রশ্ন করে, একপর্যায়ে তারা একজনকে চিনতে পারে শিবিরের নেতা হিসেবে। তারা তাকে রেখে বাকি সবাইকে চলে যেতে বলে ক্যাম্পাস থেকে। কিন্তু উপস্থিত কেউই তাকে রেখে আসতে চাননি।

পোস্টে বলা হয়েছে, একপর্যায়ে ছাত্রলীগ না পেরে ফিরে যায়। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই তৎকালীন লীগের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারিসহ (রুনু কিবরিয়া) প্রায় ১৫/২০টা বাইক এসে তাদের ঘিরে ফেলে। সবাইকেই ওই রাতে বঙ্গবন্ধু হলে নিয়ে প্রচুর পরিমাণে মারতে থাকে তাদের কাছে থাকা হকস্টিক, লাঠিসোঁটা, স্টাম্প, পাইপ, রডসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে। ফার্স্ট ইয়ারের ছেলেগুলাও রক্ষা পায়নি এদের নির্যাতন থেকে।

আরও পড়ুনঃ  আইসক্রিমে পাওয়া আঙুল কারখানা কর্মীর?

নির্যাতনের নির্মম বর্ণনা দিয়ে পোস্টে বলা হয়, দীর্ঘক্ষণ ধরে মাইরের একপর্যায়ে তিনজন বাদে বাকি সবাইকে ওরা ছেড়ে দেয়। কিন্তু বাকি তিনজনকে ওরা ২০ জন মিলে মারতেই থাকে, একজন ক্লান্ত হইলে আরেকজন পালাক্রমে; তারমধ্যে একজন ছিলেন আজকের যিনি প্রেসিডেন্ট। একজনের দুইটা পা ভেঙে দেয় ওই সন্ত্রাসীরা, আর বাকিরা মারাত্মক লেভেলের আহত।

এরপর পুলিশ এসে উল্টো তাদের তিনজনকেই ধরে নিয়ে যায়, প্রথমে মেডিকেলে এরপর জেলখানায়। বাকি দুজন দ্রুত মুক্তি পেলেও বর্তমান প্রেসিডেন্ট ৬০ দিন জেলখেটে বের হন (মাত্র ২য় বর্ষের ছাত্র)। এই নির্যাতনের কোনো বিচার ওই দলকানা ভিসি-প্রক্টররা কেউ করেনি আজ অব্দি।

আরও পড়ুনঃ  ক্ষমা চাওয়া ও ক্ষতিপূরণের দাবি নিয়ে যা জানালো পাকিস্তান

পোস্টে আরও বলা হয়, কিন্তু ওই যে- ‘আল্লাহ যাকে সম্মান দেন তাকে কেউ অসম্মানিত করতে পারে না।’ সেই মজলুম ব্যক্তিটি এখন ছাত্রশিবিরের দুর্গখ্যাত রাবি শিবিরের রানিং প্রেসিডেন্ট।

এতে আরও বলা হয়, ২১ শহীদের রক্তস্নাত মতিহারের এই সবুজ চত্বর শহীদের উত্তরসূরিদেরই থাকবে ইনশাআল্লাহ। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের এই আন্দোলনে শেষ সপ্তাহে গোটা রাজশাহীর মানুষকে রাজপথে নামিয়ে আনতে যে প্রচেষ্টা চালিয়েছেন তা অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ওই পোস্টের শেষে রাবি শিবির সভাপতির পরিচয়ও তুলে ধরা হয়।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ