24 C
Dhaka
Thursday, February 20, 2025

মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোক জড়ো করে পালিয়ে যান যুবলীগ নেতা

সুনামগঞ্জের একটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও যুবলীগের নেতাকে ধরতে তার কার্যালয়ে গিয়েছিল একদল পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গে ফেসবুক লাইভে গিয়ে তাকে গ্রেপ্তারের পক্ষে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে বলেন পুলিশকে। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোক জড়ো করেন। এক পয়ায়ে মোটরসাইকেলে করে পুলিশের সামনেই কার্যালয় ছেড়ে যান তিনি।

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার সিংচাপইড় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের এ ঘটনা ঘটে। ওই চেয়ারম্যানের নাম সাহাব উদ্দিন ওরফে সাহেল। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ছাতক উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাহাব উদ্দিন গত নির্বাচনের নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হন। তিনি উপজেলা যুবলীগের সভাপতি পদপ্রত্যাশী ছিলেন।

সাহাব উদ্দিনের ফেসবুক লাইভে দেখা যায়, একদল পুলিশ তার কার্যালয়ে ঢুকে তাকে বের হওয়ার অনুরোধ করছেন। কিন্তু সাহাব উদ্দিন চেয়ারে বসে তাকে গ্রেপ্তারের পক্ষে কোনো কাগজপত্র আছে কিনা পুলিশকে দেখাতে বলছেন। পুলিশের অনুরোধে কাজ হচ্ছে না। তার সঙ্গে সেখানে থাকা অন্যা লোকজনও পুলিশকে কাগজপত্র বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিষয়ে জিজ্ঞেস করছেন।

আরও পড়ুনঃ  রাতে মেয়ের জামাইয়ের বন্ধুর ফোন পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান বাবা, অতঃপর...

এক পর্যায়ে তিনি সেখানে থাকা লোকজনকে এলাকার মসজিদের মাইকে তাকে ধরে নেয়ার চেষ্টার বিষয়টি জানিয়ে ঘোষণা দেয়ার জন্য বলেন। এ সময় ঘরের মধ্যে থাকা কিছু লোককে পুলিশের সঙ্গে তর্ক করতে দেখা যায়। প্রায় ২০মিনিট এভাবে পুলিশের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। লাইভের শেষ দিকে তার পাশে থাকা লোকজনকে বাইরে একটি মোটরসাইকেল প্রস্তুত রাখতে নির্দেশ দেয়ার বিষয়টি শোনা যায়।

একই সঙ্গে পুলিশদের যাতে কেউ মারধর না করে এটিও বলেন একজন। এরপর সাহাব উদ্দিন বলেন, তিনি যেখানেই থাকেন না কেন ইউনিয়ন পরিষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম চলবে বলে এলাকাবাসীকে লাইভে আশ্বস্ত করেন।

আরও পড়ুনঃ  ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে এমন ইতিহাস আর হবে না’

এ ব্যাপারে ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কিবরিয়া হাসান জানান, ছাতক উপজেলার জাউয়াবাজার পুলিশ ফাঁড়ি থেকে কয়েকজন পুলিশ ওই ইউপি চেয়ারম্যানকে ধরতে গিয়েছিলেন। সদর মডেল থানার রিকুজশনে তাকে ধরতে গিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু পুলিশের সংখ্যা কম হওয়ায় সমস্যা হয়েছে।

ওসি গোলাম কিবরিয়া আরও জানান, মাইকে ঘোষণা দিয়ে এলাকার লোকজনকে জড়ো করা হয়। পরে পুলিশকে মারধর করে ওই ইউপি চেয়ারম্যান পালিয়ে যান। আমরা আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছি।

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য সাহাব উদ্দিনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

আরও পড়ুনঃ  হাসি*নার নাম মুখে নেওয়াদের খুঁজে বের করতে হবে: সারজি'স

প্রসঙ্গত, ইউপি চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন ২০১৭ সালের ১৭ মে তার এলাকায় হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের অতিরিক্ত বিলের জন্য ছাতক উপজেলার তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান। সেখানে ইউএনও এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং বিষয়টি তিনি নিজে ফেসবুক লাইভে ৫৫ মিনিট প্রচার করেন। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয় এবং ওই বছরের ১ অক্টোবর তিনি চেয়ারম্যান পদ থেকে বরখাস্ত হন। এ ঘটনায় তিনি গ্রেপ্তার হয়ে জেলও খেটেছেন।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ