29 C
Dhaka
Thursday, February 20, 2025

আঘাত হানল প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় কং-রে, বিশালাকার ঝড়টির ব্যাস ৫০০ কি.মি.

তাইওয়ানের পূর্ব উপকূলে সরাসরি আঘাত হেনেছে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ‘চার মাত্রার টাইফুন’ কং-রে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে বিশালাকৃতির এই ঝড় যার ব্যাস প্রায় ৫০০ কিলোমিটার উপকূলে (আছড়ে পড়তে) ল্যান্ডফল শুরু করে।

এর কেন্দ্র বা চোখের কাছে বাতাসের বেগ ঘণ্টায় প্রায় ৩৩ কিলোমিটার। কং-রেকে ক্যাটাগরি ৪ টাইফুন হিসেবে তালিকাবদ্ধ করা হয়েছে, যা প্রায় সুপার টাইফুনের কাছাকাছি। ‘ টাইফুন কং-রে গত ৩০ বছরের মধ্যে দ্বীপরাষ্ট্রটিতে আঘাত হানা সবচেয়ে বিশালাকার টাইফুন। খবর বিবিসির।

হতাহত এড়াতে মহা প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার সম্পূর্ণভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে গোটা দ্বীপরাষ্ট্রটি। দেশটির সব শহর ও কাউন্টিতে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়। আর্থিক লেনদেনের বাজার বন্ধের পাশাপাশি হাজারো ফ্লাইট বাতিল করা হয়।

আরও পড়ুনঃ  ব্যক্তিগত জীবনে আমি যেকোনো আগ্রাসনের বিপক্ষে: অভিনেতা জীবন

তাইওয়ানের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া প্রশাসন জানিয়েছে, ঝড়টি স্থানীয় সময় দুপুর ২টার দিকে পূর্ব উপকূলে আঘাত হানতে পারে এবং ঝোড়ো বাতাস ও প্রবল বৃষ্টিতে প্রায় পুরো দ্বীপ তছনছ করে দিতে পারে। এক সময় এটি সুপার টাইফুন ছিল (ঘণ্টায় ৩০০ কি.মি. বেগ), তবে কং-রে রাতারাতি কিছুটা দুর্বল হয়েছে, কিন্তু এখনো ক্যাটাগরি ৪ মাত্রার হারিকেনের মতো শক্তিশালী এটি এবং ঘণ্টায় ২৫০ কি.মি. গতিতে আঘাত হানতে পারে। দেশটির আবহাওয়া প্রশাসন জানিয়েছে, ঝড়টি ১৯৯৬ সালের পর থেকে তাইওয়ানে আঘাত হানা আকারে সবচেয়ে বড় টাইফুন হতে পারে।

প্রশাসনের পূর্বাভাসকারী জিন হুয়াং বলেন, পূর্ব উপকূলে আঘাত হানার পর এটি তাইওয়ান প্রণালীর দিকে এগিয়ে যাবে এবং অনেক দুর্বল হয়ে যাবে। দ্বীপের সব বাসিন্দাকে বাড়ির ভেতরে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে, কারণ ঝোড়ো বাতাসের কারণে বিপদ হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ  তিনদিন ধরে নি*খোঁজ বৈষম্যবি*রোধী ছাত্র আন্দো*লনের সহ-সম*ন্বয়ক

এর আগে বুধবার (৩০ অক্টোবর) ভারী বৃষ্টিপাত এবং প্রবল বিধ্বংসী ঝড়ো বাতাস নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। ঘণ্টায় প্রায় ৩০০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসা এই বিপজ্জনক ঝড়টি (ঘণ্টায় ১৮৬ মাইল) ইতোমধ্যে সুপার টাইফুনে পরিণত হয়েছে। তাইতুং কাউন্টিতে আঘাত হানার পূর্বে এটি আরও শক্তিশালী হতে পারে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর যৌথ টাইফুন সতর্কতা কেন্দ্র। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের বরাতে এ খবর প্রকাশ করেছে ব্যাংকক পোস্ট।

তাইওয়ানের কেন্দ্রীয় আবহাওয়াবিষয়ক প্রশাসন জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি প্রথমে তাইওয়ানের দক্ষিণ অঞ্চল অতিক্রম করবে এবং তারপর তাইওয়ান প্রণালী দিয়ে চীনের দিকে এগিয়ে যাবে।

আরও পড়ুনঃ  অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতাই কি দেশে ফেরাবে শেখ হাসিনাকে?

তাইপে সিটি কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবারকে টাইফুনের কারণে ছুটি ঘোষণা করেছে এবং অর্থবিষয়ক বাজারও বন্ধ থাকবে। পূর্ব তাইওয়ানের পার্বত্য অঞ্চলে ১ দশমিক ২ মিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত এবং উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ধ্বংসাত্মক ঝড়ো বাতাসের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।

তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-টে জনগণকে পাহাড় এবং উপকূলীয় এলাকা থেকে দূরে সরে আসার পরামর্শ দেন।তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা সারা দ্বীপে প্রায় ৩৬ হাজার সৈন্যকে প্রস্তুত রেখেছে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ স্ট্যান চ্যাং বলেছেন, বছরের এই সময়ে তাইওয়ানের উপর সরাসরি আঘাত হানতে আসা এমন শক্তিশালী টাইফুন খুবই বিরল, কারণ প্রশান্ত মহাসাগরে উষ্ণ সাগরের তাপমাত্রা এবং উত্তর থেকে দেরিতে আসা ঠান্ডা বাতাসের কারণে পরিবেশটি এখনও টাইফুনের জন্য সহায়ক।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ