22 C
Dhaka
Thursday, February 20, 2025

শেখ মুজিব মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের আপন করে নিতে পারেননি : তাজকন্যা

বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধকে ভালোভাবে গ্রহণ করতে পারেননি বলে মন্তব্য করেছেন তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা শারমিন আহমদ। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।

শারমিন আহমদ বলেন, “বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধকে ‘ওন’ করতে পারেননি। ইন্দ্রিরা গান্ধীর ঘনিষ্ঠ ও ভারতের সাবেক একজন পররাষ্ট্রসচিব বলেছিলেন, ‘মুজিব মুক্তিযুদ্ধে আগ্রহী ছিলেন না।

এর কারণ কী? কারণ হতে পারে, মনস্তাত্ত্বিক; সেটা হলো তার অবর্তমানে এত বড় একটা যুদ্ধ শেষে দেশ স্বাধীন হয়ে গেল; তিনি তখন নেতৃত্বে ছিলেন না।”

তিনি বলেন, ‘শেখ মুজিব মুক্তিযোদ্ধাদের আপন ভাবতে পারেননি। দেশ যখন স্বাধীন হলো, যুদ্ধের পরে মুজিব বাহিনী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করলেও মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর গুলি ছুড়েছিল। তারা তৎকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও উপরাষ্ট্রপতিকে হত্যা করার জন্য তিনবার পরিকল্পনা করেছিল।

আরও পড়ুনঃ  ইমিগ্রেশনে আটকে দেয়ার বিষয়ে যা বললেন মিজানুর রহমান আজহারী

তারা স্বাধীনতার পর সবচেয়ে ক্ষমতাবান হয়ে গেল, আর যারা মুক্তিযুদ্ধে লড়াই করলেন তারা সাইডে রয়ে গেলেন?’

তাজকন্যা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যদি মুক্তিযুদ্ধের নির্দেশনা দিয়ে যেতেন তাহলে তার মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা ও তৎকালীন সরকারকে নিয়ে খুশি থাকার কথা। কিন্তু তিনি সেই স্থানে একবারও গেলেন না, যেখানে প্রথম সরকার গঠিত হয়েছিল। তিনি দেশে ফিরে মুক্তিযোদ্ধাদের কথা শুনলেন না এবং কিভাবে যুদ্ধ হলো তা-ও জানতে চাইলেন না।’

শারমিন আহমদ বলেন, ‘যখন দেশ স্বাধীন হলো তখন আমার বাবা (তাজউদ্দীন আহমদ) একটা পরিকল্পনা করেছিলেন-ন্যাশনাল মিলিশিয়া বোর্ড গঠনের।

আরও পড়ুনঃ  ‘আয়নাঘরে হতো নির্মম নির্যাতন, অনেক রাত ঘুমাতে পারিনি’

এটা ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসেই বাংলাদেশের প্রথম সরকারের সভায় অনুগৃহীত হয়। এর মাধ্যমে এক লাখ এক হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে পূর্ণ প্রশিক্ষণ দিয়ে রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেক্টরে কাজে লাগানো হবে। আর তাদের ব্যবহৃত অস্ত্রগুলো থাকবে রাষ্ট্রের নিরাপদ কোনো স্থানে। দেশের জন্য প্রয়োজন হলে তারা আবারও অস্ত্র হাতে নেবে। দল-মত-নির্বিশেষে যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন সবাই এর আওতায় থাকবেন।’

তিনি বলেন, ‘এক লাখ এক হাজার মুক্তিযোদ্ধা থাকার বিষয়টি তাজউদ্দীন আহমেদ ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত তার অনেক বক্তব্যে বলেছেন। কিন্তু পরবর্তীতে জেনারেল ওসমানীর স্বাক্ষর জাল করে তিন লাখ ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ দেওয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা মুজিবনগর সরকারের বিরোধিতা করেছিল তাদেরই এসব জাল মুক্তিযোদ্ধা সনদ দেওয়া হয় এবং তাদের নিয়েই রক্ষী বাহিনী গঠন করা হয়। যার ফল বাংলাদেশে ভালো হয়নি।’

আরও পড়ুনঃ  শিক্ষাবোর্ডে তালা দিয়ে এইচএসসিতে ফেল করা পরীক্ষার্থীদের আন্দোলন

তিনি আরো বলেন, ‘রক্ষী বাহিনী ছিল একটি দলের, একটি গোষ্ঠী বা একটি পরিবারের। এই বাহিনী জনগণের ছিল না। এর মাধ্যমে ন্যাশনাল মিলিশিয়া বোর্ড গঠনের প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায়। এখন যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা যারা বলছেন, তারাই কিন্তু দেশ স্বাধীনের পর এমন সব কাজ করেছেন, যাতে এই চেতনা টিকে না থাকে।’

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ