29 C
Dhaka
Saturday, October 18, 2025

ভারতে এক দলিত কিশোরী*কে ৫ বছর ধরে ৬৪ জনের ধ-র্ষণ

ভারতে এক দলিত কিশোরীকে ৫ বছর ধরে ৬৪ জনের ধর্ষণ
ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালার এক দলিত কিশোরীকে গত পাঁচ বছর ধরে ৬৪ জন পুরুষ যৌন নির্যাতন চালিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে। এক সরকারি কর্মসূচির অধীনে কয়েকজন মনোবিদ তার বাড়িতে গেলে বিষয়টি সামনে আসে।

পুলিশ এ ঘটনায় ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছে। পুলিশ বলছে, অভিযুক্তদের বয়স ১৭ বছর থেকে ৪৭ বছর পর্যন্ত।

এর মধ্যে রয়েছেন ওই কিশোরীর প্রতিবেশীরা, তার খেলার প্রশিক্ষক এবং বাবার বন্ধুরাও।
রাজ্যের পতনমথিট্টা জেলার পুলিশ সুপার নন্দকুমার এস জানান, এ পর্যন্ত ১৮টি মামলা দায়ের হয়েছে।

যেসব আইনে এসব মামলা হয়েছে, এর মধ্যে রয়েছে দলিত শ্রেণির লোকেদের বিরুদ্ধে হওয়া অপরাধ রোধ আইন এবং শিশু-কিশোরদের ওপর যৌন নিগ্রহ রোধ আইন।
পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  ২০২৫ সালের সরকারি ছুটির তালিকা প্রকাশ

পরে আরও নতুন মামলা দায়ের করা হবে বলে পুলিশ জানাচ্ছে। পুরো ঘটনার তদন্তে ২৫ সদস্যের একটি দল গঠন করেছে রাজ্য সরকার। নিরাপত্তার খাতিরে একটি শিশু-কিশোর হোমে ওই কিশোরী ও তার মাকে রাখা হয়েছে।
ওই কিশোরীর বয়স যখন ১৩ বছর বয়সী ছিল, তখনই প্রথমবার সে যৌন নিগ্রহের শিকার হয়। তার পাড়ার ছোটবেলার এক বন্ধুই তাকে প্রথম যৌন নিগ্রহ করে এবং সেই ঘটনার কিছু ছবি-ভিডিও ধারণ করে রাখে সে। এই বন্ধুর নামই অভিযুক্তদের তালিকায় এক নম্বরে আছে।

পতনমথিট্টা জেলার ক্রাইম ব্রাঞ্চের মুখপাত্র সঞ্জীব এম বলেন, ধারণ করা ভিডিও দেখিয়েই ওই অভিযুক্ত বন্ধু কিশোরীকে ব্ল্যাকমেইল করে যৌন নিগ্রহ চালাত। আবার তার বন্ধুদের কাছেও নিয়ে যেত কিশোরীটিকে।

পরে ওই কিশোরীর বয়স যখন ১৬ বছর, তখন সেই বন্ধু আবারও যৌন নিগ্রহ করে। এবার সেই যৌন নিগ্রহের ভিডিও ধারণ করে তা বেশ কয়েকজনকে দিয়ে দেয়। তারা পরে কয়েক বছর ধরে যৌন নিগ্রহ চালাতে থাকে।

আরও পড়ুনঃ  ছাত্রলীগ কর্মীরা আন্দোলনে যাবে না, তাদের জন্য সরকার ভাবছে: শয়ন

জেলা শিশু-কিশোর কল্যাণ কমিটির প্রধান, আইনজীবী এন রাজীব বলেন, যৌন নিগ্রহের শিকার ওই কিশোরী একজন অ্যাথলেট। খেলার জন্য নানা শিবিরে তাকে যেতে হতো। সেখানেও যৌন নিগ্রহের শিকার হতে হয় তাকে।

পুলিশ বলছে, গত পাঁচ বছরে ওই কিশোরীকে অন্তত তিনবার সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করার অভিযোগ সামনে এসেছে। তদন্তকারীরা বলছেন, ওই কিশোরীর ছোটবেলার ওই বন্ধুও একবার তাতে যুক্ত ছিল। ওই কিশোরী প্রথমবার সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন তার বাড়ির পাশেই।

পতনমথিট্টা জেলা ক্রাইম ব্রাঞ্চের মুখপাত্র সঞ্জীব এম বলেন, অভিযুক্তরা ওই কিশোরীর বাবার ফোন নম্বরে কল করত। বাবার ফোনে আসা এরকম ৪০ জন অভিযুক্তদের কল সে সেভ করে রেখেছিল। ওই ফোন থেকে তথ্য যোগাড় করেই পুলিশ এখন বাকি অভিযুক্তদের সন্ধান করছে।

আরও পড়ুনঃ  মিয়ানমার থেকে গুলিবর্ষণের ঘটনা জাতিসংঘে তুলল বাংলাদেশ

ওই কিশোরীর পরিবার অবশ্য এসব ঘটনার কিছুই জানত না। গত মাসে যখন ওই কিশোরীর বাড়িতে কয়েকজন মনোবিদ যান, তখনই ব্যাপারটা জানা যায়। ওই মনোবিদরা শিশু-কিশোর কল্যাণ কমিটিকে জানায় ঘটনাটি।

শিশু-কিশোর কল্যাণ কমিটির প্রধান, আইনজীবী এন রাজীব বলছিলেন, আমাদের মনে হয়েছিল যে এটি অনেক গুরুতর ঘটনা। তাই সরাসরি জেলার পুলিশ সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করি।

একটি নারী অধিকার সংগঠনের আইনজীবী সন্ধ্যা জনার্দন পিল্লাই বলেন, এ ঘটনা প্রমাণ করে দিল যে শিশু-কিশোরীদের যৌন নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য শুধু আইন করা যথেষ্ট নয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২৫
আরএইচ

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ