29 C
Dhaka
Saturday, October 18, 2025

নব্য আওয়ামী লীগের রূপরেখা : ভারতের বার্তা ও নেতাদের পরিকল্পনা

বাংলাদেশে একটি তথাকথিত ‘পরিচ্ছন্ন আওয়ামী লীগ’ বা ‘নব্য আওয়ামী লীগ’-এর পরিকল্পনা এখন আর গুজবের স্তরে নেই।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনটিতে উঠে এসেছে, দলটির এই পরিকল্পনা নিয়ে বাংলাদেশে দৃশ্যত সক্রিয় একটি মহল। বিষয়টি নিয়ে দৃষ্টিপাত করেছে দিল্লীও । প্রশ্ন উঠেছে—এই নব্য রূপরেখায় থাকবেন কি শেখ হাসিনা?

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আওয়ামী লীগ থাকবে, কিন্তু নেতৃত্বে থাকবেন না শেখ হাসিনা। তার ঘনিষ্ঠদেরও রাখা হবে না সামনে। বরং কিছু পরিচিত নেতা-নেত্রীকে সামনে এনে তৈরি করা হবে একটি নতুন ধরনের আওয়ামী লীগ, যার ভাবমূর্তি পরিচ্ছন্ন বলে দাবি করা হবে।

প্রতিবেদনে ভারতের কূটনীতিকদের একাংশ মনে করছেন, শেখ হাসিনাহীন আওয়ামী লীগ ভারতীয় স্বার্থের জন্য সুখকর হবে না। কারণ, যাদেরকে সামনে আনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে, তাদের কারও কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, আবার কেউ কেউ পাকিস্তান-ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত।

আরও পড়ুনঃ  ডেকে নিয়ে ছাত্র*দলকর্মীকে গু*লি করে হ*ত্যা

এ বিষয়ে এক সাবেক ভারতীয় কূটনীতিক জানান, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে দিল্লির সরাসরি করণীয় না থাকলেও, আওয়ামী লীগ ঐতিহাসিকভাবে ভারতের আস্থাভাজন শক্তি। সেই নেতৃত্ব যদি পাকিস্তানপন্থিদের হাতে যায়, তা হবে ভারতের জন্য ভয়াবহ।

আওয়ামী লীগের একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এই পরিকল্পনাকে সরাসরি ‘প্রতারণা’ ও ‘দল ধ্বংসের ষড়যন্ত্র’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ২০০৬ সালেও একই রকমভাবে শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়ে একটি বিকল্প আওয়ামী লীগ গঠনের চেষ্টা হয়েছিল। তখনও তা ব্যর্থ হয়েছে, এবারও হবে।

তিনি আরও বলেন, যারা আজ পরিচ্ছন্ন নেতার মুখোশ পরে সামনে আসছেন, তাদের কেউই আসলে পরিচ্ছন্ন নন। তাদের অনেকেই চীন বা পাকিস্তানের সঙ্গে ব্যবসায়িকভাবে যুক্ত।

আরও পড়ুনঃ  দুই দফা বাধা, গোসল ও কাফন ছাড়াই দাফন

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি গঠিত জাতীয় নাগরিক দল (এনসিপি)-এর নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ একটি ফেসবুক পোস্টে দাবি করেন, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান নাকি তাদের সঙ্গে একান্ত বৈঠকে বলেন—পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির নেতা শিরিন শারমিন চৌধুরি, শেখ ফজলে নুর তাপস ও সাবের হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ গঠন করলে সেটিকে মেনে নেওয়া হবে।

হাসনাতের ভাষ্য, আমাদের বলা হয়— এপ্রিল-মে মাস থেকে এই নেতারা শেখ পরিবারের অপরাধ স্বীকার করবেন, হাসিনাকে অস্বীকার করবেন এবং তারা ‘বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ’ গঠনের প্রতিশ্রুতি নিয়ে জনগণের সামনে হাজির হবেন।

আওয়ামী লীগের এক সূত্র জানায়, কলকাতায় আশ্রয় নেওয়া কিছু নেতা এই পরিকল্পনায় গোপনে সহযোগিতা করছেন। এমনকি হাসিনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে নিরাপত্তা ও নির্বাচনে অংশগ্রহণের গ্যারান্টি দেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হচ্ছে অনেক নেতাকে। এই প্রস্তাব দিচ্ছেন সেনা সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও কিছু বিএনপি ঘনিষ্ঠ মহল, এমনটাও দাবি করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  তুমি আমার এমন জায়গায় স্প*র্শ করেছো যা এখন পর্যন্ত আর কেউ পারেনি : প্রভা

প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, এদিকে দলটির বর্তমান নেতৃত্ব বসে নেই। শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশের বিভিন্ন জেলায় ভার্চুয়াল বৈঠক করছেন শীর্ষ নেতারা। ইতোমধ্যে ২৩টি জেলায় ভার্চুয়াল বৈঠক সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে শেখ হাসিনা সরাসরি যুক্ত হয়ে কর্মীদের বলেছেন, আমি দেশ ছাড়তে চাইনি, ইস্তফাও দিইনি। আমাকে জোর করে দেশ থেকে তাড়ানো হয়েছে। এই চক্রান্তের শেষ দেখে ছাড়ব।

তিনি কর্মীদের আশ্বস্ত করে আরও বলেন, তোমাদের উপরে যে-সব নির্যাতন হয়েছে, আমি বেঁচে থাকলে তার বিচার হবেই। এরা বেশিদিন টিকবে না।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ