26 C
Dhaka
Sunday, October 19, 2025

যে কারণে ঢাবি ছাত্রদল সভাপতিকে স্বাগত জানিয়েছেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রদল সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস জুলাই বিপ্লবকে ‘তথাকথিত’ বলার পর ভুল স্বীকার করে দুঃখপ্রকাশ করায় স্বাগত জানিয়েছেন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলীয় সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।

সোমবার (২১ এপ্রিল) দিবাগত রাতে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুকে একটি পোস্ট করে এ স্বাগত জানান তিনি। পাঠকদের জন্য হাসনাত আব্দুল্লাহর ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো- 

‘৫ই আগস্ট পরবর্তীতে রাজনৈতিক পরিসরে আমরা নীতি-নৈতিকতার চর্চা দেখতে চেয়েছি, সত্যকে সত্য ও মিথ্যাকে মিথ্যা বলে নিজের ইচ্ছা বা অনিচ্ছাকৃত ভুল অকপটে স্বীকার করার পরিসর দেখতে চেয়েছি। জুলাই বিপ্লবকে ‘তথাকথিত’ বলে আখ্যায়িত করার পর ঢাবি ছাত্রদল সভাপতি দুঃখপ্রকাশ করেছেন, কোনো ধরনের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ দিয়ে নিজের ভুলকে প্রতিষ্ঠিত করার বদলে তা বিনা দ্বিধায় স্বীকার করে নিয়েছেন। 

আরও পড়ুনঃ  ২ নারী শিক্ষার্থী কারা! হাসির কারনেই কি পারভেজ কে হত্যা! নাকি অন্য কোন রহস্য

ঢাবি ছাত্রদল সভাপতির এই মন-মানসিকতাকে আমরা শ্রদ্ধা করি এবং স্বাগত জানাই। আমরা আশা করি, আগামীতেও বাংলাদেশের রাজনীতিতে এমন সততা ও স্বচ্ছতার চর্চা বজায় থাকবে।

কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য বাংলাদেশে জুলাই আগস্ট বিপ্লব হয়ে যাওয়ার এত মাস পরেও বিপ্লব নিয়ে না আছে কোনো ঘোষণা, না আছে কোনো সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। যে যখন পারে যেভাবে ইচ্ছা এই দ্বিতীয় রিপাবলিক এর উত্থানের পেছনের লক্ষ কোটি সাধারণ জনতার সংগ্রাম কে অপমান করে যাচ্ছে কিংবা তাচ্ছিল্য করে যাচ্ছে।

২০১০-১১ তে জেসমিন বিপ্লবের পরে তিউনিসিয়ার স্বৈরশাসক বেন আলীর দীর্ঘ স্বৈরাচারী রেজিমের পতন ঘটে এবং একটি নতুন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় তিউনিসিয়ার যাত্রা শুরু হয়। সেই বিপ্লবকে সামনে রেখে ২০১৪ সালে যখন তিউনিসিয়া সংবিধান রচনা করলো সেখানে প্রিয়েম্বল এ সরাসরি বিপ্লবকে সংযুক্ত করে লেখা হলো – 

আরও পড়ুনঃ  এবার পাঠ্য*বইয়ে ঠাঁই পেলেন র‌্যাপার হা*ন্নান ও সেজান

‘In memory of our people’s martyrs, of the men and women who gave their lives to ensure the success of the revolution.’

বলিভিয়ার ২০০৬ সালের ডেমোক্রেটিক এন্ড কালচারাল বিপ্লবের পরে ২০০৯ সালের সংবিধানে লেখা হলো –

‘Bolivia is constituted as a social unitarian state of plurinational community, as a result of the democratic and cultural revolution.’

নেপালে রাজতন্ত্রের প্রবল অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে আপামর জনগন তীব্র আন্দোলনের মুখে ‘প্রচলিত রাজতন্ত্রের‘ উৎখাত করে ‘ People’s Movement – 1990s ‘ এর মাধ্যমে। পরবর্তীতে ২০১৫ সালের নেপালের সংবিধানে সরাসরি এই আন্দোলন কে এড্রেস করে সংবিধান লিখিত হলো এবং সরাসরি এই বিপ্লবে জনতার সংগ্রামের মাধ্যমে নতুন রিপাবলিক এর উত্থান এর কথা লিখিত হলো।

আরও পড়ুনঃ  ১৫৮ জন সমন্বয়*কের ঠিকানা সংগ্রহ শুরু হয়েছে, ‘একটিও পালাতে দেওয়া হবে না’

এহেন শত সহস্র উদাহরণ এই পৃথিবীতে রয়েছে যেখানে একটি বিপ্লবকে সংবিধানের মাধ্যমে জাস্টিফাই এবং রেটিফাই করা হয়েছে যাতে কেউ কোনোদিন জনতার বিপ্লবকে অপমান, তাচ্ছিল্য কিংবা ছোটো করার সাহস না পায়। এটাই নিয়ম। এটাই স্বাভাবিকতা।

যত দ্রুত সম্ভব জুলাই বিপ্লবকে সাংবিধানিক ভাবে বাধ্যবাধকতার মধ্যে নিয়ে না আসলে এরকম হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হওয়ার মতো বক্তব্য হয়ত সামনে আরো শুনতে হবে। 

আশা করি অতিসত্তর জুলাই বিপ্লবের ঘোষণা আসবে এবং সেই সাথে আসবে সাংবিধানিক সংযুক্তি। 

বেহাত বিপ্লবের মূল্য অনেক চড়া। জীবন দিয়ে সে মূল্য যেনো বাংলাদেশকে না দিতে হয় সেই ব্যবস্থা করা জরুরি।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ