33 C
Dhaka
Friday, August 1, 2025

বাংলাদেশে সব রেল প্রকল্প স্থগিত করলো ভারত, এর পেছনে কারণ কী?

দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে অবকাঠামোগত সহযোগিতা দীর্ঘদিন ধরেই ছিল দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত অংশীদারিত্বের অন্যতম নিদর্শন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগের কারণে সেই সহযোগিতায় দেখা দিয়েছে অস্বস্তির ছায়া। ভারত সরকার হঠাৎ করেই বাংলাদেশে চলমান সব রেল প্রকল্প স্থগিত ঘোষণা করেছে। এই সিদ্ধান্ত আঞ্চলিক কূটনীতি ও বাণিজ্যিক স্বার্থে বড় ধরণের প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

কারণ কী দেখিয়েছে ভারত?
ভারতের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বিজনেস লাইন-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে—বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ভারতীয় প্রকৌশলী ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কারণেই এই স্থগিতাদেশ। বিশেষ করে চলমান প্রকল্পগুলোতে ভারতীয় নাগরিকদের কাজ করা নিয়ে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়েছে বলেই মত দিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতীয় কর্মকর্তারা।

আরও পড়ুনঃ  আপনা*দের আ*ম্মু আর দেশে ফিরবে না, আপনারা রিয়েলিটি মাইনে নেন

যে প্রকল্পগুলো স্থগিত হলো
ভারতের সহায়তায় পরিচালিত বাংলাদেশে চলমান তিনটি বড় রেল প্রকল্প ও পাঁচটি জরিপ কাজ আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। এই প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে:

আখাউড়া-আগরতলা রেল সংযোগ
এই প্রকল্পে প্রায় ১২.২৪ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল, যার মধ্যে ৬.৭৮ কিলোমিটার ভারতের ভূখণ্ডে। ভারত সরকার এতে ৪০০ কোটি রুপি অনুদান দেয়।

খুলনা-মংলা বন্দরের ব্রডগেজ রেল সংযোগ
প্রায় ৩৩০০ কোটি রুপির এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মংলার কার্যকারিতা বাড়ানোর পরিকল্পনা ছিল। উল্লেখযোগ্য যে, মংলা বন্দরের একটি টার্মিনাল ব্যবস্থাপনার অধিকার রয়েছে ভারতের।

আরও পড়ুনঃ  এক মাসে হুতির ৫০০ সদস্য নি*হত

ঢাকা-টঙ্গী-জয়দেবপুর রেল সম্প্রসারণ
এক্সিম ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার অর্থায়নে এই প্রকল্পের কাজও চলছিল, তবে অগ্রগতি ছিল মাত্র ৫০ শতাংশ।

এছাড়াও বাংলাদেশে সম্ভাব্য আরও পাঁচটি রুটে জরিপ কাজ চলছিল, যা আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।

ভারতের নতুন কৌশল কী?
বাংলাদেশে রেল প্রকল্প স্থগিত করার পর ভারত এখন নিজস্ব কৌশলে পরিবর্তন আনছে। দেশটি উত্তরপ্রদেশ ও বিহার অঞ্চলে নিজস্ব রেল অবকাঠামোকে দ্বিগুণ বা চারগুণ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। পাশাপাশি নেপাল ও ভুটানের সঙ্গেও রেল সংযোগ গড়ে তোলার কৌশলগত পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছে নয়া দিল্লি।

আরও পড়ুনঃ  ২০০ টা*কায় মিলল ন*তুন বই, প্রধান শিক্ষক বললেন ব্যয় হবে উন্নয়নকাজে

বাংলাদেশের জন্য বার্তা কী?
এই স্থগিতাদেশ শুধু অর্থনৈতিক নয়, কূটনৈতিকভাবেও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। ভারত যে দক্ষিণ এশিয়ায় অবকাঠামোগত নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তা স্পষ্ট। তবে একইসঙ্গে তারা অংশীদার রাষ্ট্রের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাকেও গুরুত্ব দিচ্ছে। বাংলাদেশের জন্য এটি একটি সতর্ক সংকেত—রাজনৈতিক অস্থিরতা শুধু অভ্যন্তরীণ সমস্যাই নয়, আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ