27 C
Dhaka
Sunday, October 19, 2025

জানা গেল ৮ মাসে কত হাজার কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ করলো সরকার

গত জুলাই মাসে গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে, এবং এরপর থেকে দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক, অর্থনীতি ও বাণিজ্যে নতুন গতি সৃষ্টি হয়েছে। রেমিটেন্সের রেকর্ড বৃদ্ধি, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে অগ্রগতি এবং অর্থনৈতিক সূচকগুলোর উন্নয়নে ইতিবাচক ধারা দেখা যাচ্ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৬.৭৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে, আইএমএফ-এর BPM6 পদ্ধতিতে হিসাব করলে এই রিজার্ভ ২১.৩৯ বিলিয়ন ডলার এবং প্রকৃত ব্যয়যোগ্য নেট রিজার্ভ প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার।

আরও পড়ুনঃ  সাবেক সেনা কর্ম-কর্তা মেজর জি*য়ার খোঁজ মিলেছে

রিজার্ভ বৃদ্ধির পেছনে প্রধান ভূমিকা রেখেছে রেকর্ড পরিমাণ রেমিটেন্স প্রবাহ। এপ্রিলের প্রথম ১২ দিনেই দেশে ১০৫.২৪ মিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছে। এর আগে, মার্চ মাসে প্রবাসী আয় ৩.২৯ বিলিয়ন ডলার ছুঁয়ে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শুরু থেকে টানা সাত মাস ধরে রেমিটেন্স ২ বিলিয়ন ডলারের উপরে রয়েছে। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যাংক-ভিত্তিক প্রণোদনা এবং বৈধ চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠানোর উদ্যোগ এই সাফল্যের পেছনে কাজ করছে।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় দেশের বৈদেশিক ঋণ ছিল প্রায় ৩.২ বিলিয়ন ডলার (৩৯ হাজার কোটি টাকা)। তবে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে যুগোপযোগী নীতি ও কঠোর পরিশোধ পরিকল্পনার মাধ্যমে এই ঋণ কমিয়ে ৮২৯ মিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনা হয়েছে। অর্থাৎ, মাত্র আট মাসে ২৯,০০০ কোটি টাকার ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  ২০০ টা*কায় মিলল ন*তুন বই, প্রধান শিক্ষক বললেন ব্যয় হবে উন্নয়নকাজে

সরকার জ্বালানি খাতে ৬,৫০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে, যার ফলে এলএনজির ইউনিট মূল্য ৭০ টাকা থেকে কমিয়ে ৩০ টাকায় বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে। এতে সরকারকে অতিরিক্ত ব্যয় বহন করতে হলেও, দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গ্যাস খাতেও ঋণের বোঝা কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত গ্যাস খাতের বকেয়া ছিল ৭৫ কোটি টাকা, যা এখন কমে ২৪ কোটি টাকায় নেমে এসেছে।

রেমিটেন্স বৃদ্ধি, ঋণ পরিশোধের গতি এবং জ্বালানি খাতের সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতি ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতার দিকে এগোচ্ছে। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া নীতিগত সিদ্ধান্তগুলোই এই ইতিবাচক পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি।

আরও পড়ুনঃ  বি*এনপি কারও কাছে মাথা নত করে না: দুদু

এই সংস্কার ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও দৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড়াবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ