30.2 C
Dhaka
Tuesday, July 1, 2025

হঠাৎ যে কারণে মোদিকে যু’দ্ধ বন্ধের নির্দেশ দেয় যু’ক্তরাষ্ট্র

দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা তীব্র উত্তেজনা ও রক্তক্ষয়ের পর ভারত এবং পাকিস্তান অবশেষে একটি পূর্ণাঙ্গ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় কূটনৈতিক তৎপরতায় এই যুদ্ধবিরতি সম্ভব হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলেও নতুন তথ্য বলছে, সংঘাত শুরু হওয়ার পর এক পর্যায়ে এমন কিছু ‘ভীতিকর’ গোয়েন্দা তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের হাতে আসে, যা উভয় দেশের মধ্যে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের আশঙ্কা সৃষ্টি করেছিল।

সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে এমন কিছু গোয়েন্দা তথ্য আসে যা স্পষ্ট করে দেয়, যুদ্ধ যদি অব্যাহত থাকে তবে তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। এরপরই মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সরাসরি ফোন করেন এবং অবিলম্বে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় বসার অনুরোধ জানান।

আরও পড়ুনঃ  অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে কাদের রাখা উচিৎ, মত দিলেন আজহারী

সিএনএনের তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসনের একটি উচ্চপর্যায়ের দল- ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মার্কো রুবিও এবং হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ সুজি ওয়াইলস টানা ৪৮ ঘণ্টা ভারত-পাকিস্তানের উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছিলেন।

উক্ত ‘ভয়াবহ গোয়েন্দা তথ্য’ পাওয়ার পরই জেডি ভ্যান্স প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে পুরো পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে মোদিকে ফোন করে ভারতকে সামরিক উত্তেজনা থেকে সরার আহ্বান জানান। ফোনালাপে ভ্যান্স হোয়াইট হাউসের উদ্বেগ তুলে ধরে বলেন, ‘এই সংঘাত বড় ধরনের যুদ্ধের দিকে গড়াতে পারে- এমনকি পরমাণু সংঘর্ষেও গড়াতে পারে।’

খবরে বলা হয়, মার্কিন প্রশাসনের ধারণা ছিল, সংঘাত চলাকালীন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কোনো কূটনৈতিক যোগাযোগ হচ্ছিল না। সেই শূন্যতা পূরণে এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খোলার জন্যই যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ জরুরি হয়ে পড়ে। ভ্যান্স ফোনালাপে মোদিকে একটি সম্ভাব্য বিকল্প প্রস্তাব দেন, যা যুক্তরাষ্ট্র মনে করেছিল- পাকিস্তানের পক্ষে গ্রহণযোগ্য হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ  আওয়ামী লীগের গণজমায়েত প্রতিহত করার ঘোষণা ‘শিশুবক্তা’ মাদানীর

এরপর রাতভর কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং অন্য সিনিয়র কর্মকর্তারা। তারা ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেন এবং আলোচনা শুরু করার পরিবেশ তৈরিতে ভূমিকা রাখেন।

হোয়াইট হাউসের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, ‘ভ্যান্স ও মোদির ফোনালাপ ছিল এই সংকট নিরসনে একটি টার্নিং পয়েন্ট। মোদি কৌশলগতভাবে পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে সংযম দেখিয়েছেন।’ সূত্র আরও জানায়, ভ্যান্স পূর্বে মোদির সঙ্গে একটি ব্যক্তিগত বৈঠকে অংশ নেন এবং এই সম্পর্ককেই কূটনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।

আরও পড়ুনঃ  আবারো এমএসএন ত্রয়ী এক হওয়ার ইঙ্গিত নেইমা*রের!

যদিও ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশই তাদের আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা উল্লেখ করেনি, তবে সিএনএন বলছে, মার্কিন প্রশাসন সরাসরি যুদ্ধবিরতির খসড়া তৈরিতে যুক্ত ছিল না, তবে উভয় পক্ষকে আলোচনার টেবিলে ফেরাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।

মার্কিন কর্মকর্তারা বলেন, তাদের লক্ষ্য ছিল দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগের ঘাটতি পূরণ করা, যুদ্ধের বদলে কূটনীতিকে অগ্রাধিকার দেওয়া। সেই কৌশল এখন বাস্তবে সফল হয়েছে বলেই মনে করছেন তারা।

এই ঘটনাবলিতে স্পষ্ট, হঠাৎ শুরু হওয়া ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত সংঘাত একটি বিপজ্জনক মোড় নিতে পারত। তবে ‘ভয়ংকর গোয়েন্দা তথ্য’ পেয়ে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে দ্রুত কৌশলগত পদক্ষেপ নেয় এবং ভারতকে আলোচনার পথে আনার জন্য চাপ দেয়- তা এই সংঘাতকে যুদ্ধ হওয়ার আগেই থামিয়ে দেয়।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ