27 C
Dhaka
Sunday, October 19, 2025

যেভাবে ইরানের ভেতর থেকেই হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ১২ দিনের যুদ্ধের সময় শত শত ফাইটার জেট, ড্রোন ও রিফুয়েলিং বিমান ব্যবহার করলেও ইরানের ভেতর থেকে পরিচালিত গোপন অভিযানও ছিল এই হামলার মূল অংশ। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক বিশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

১৩ জুন ভোরে হামলা শুরু হওয়ার পরপরই ইসরায়েলি সেনা ও গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ ইরানের অজ্ঞাত স্থানে তোলা ভিডিও প্রকাশ করে। এতে রাতের অন্ধকারে মরুভূমির মতো এলাকায় ছদ্মবেশে মোসাদ সদস্যদের অস্ত্র মোতায়েন করতে দেখা যায়, যেগুলো ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের জন্য ব্যবহৃত হয়।

ভিডিওতে স্পাইক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা ধ্বংসের দৃশ্যও দেখা গেছে। ইরানি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এসব ক্ষেপণাস্ত্রের অবশিষ্টাংশ দেখিয়ে জানিয়েছে, সেগুলো “ইন্টারনেটভিত্তিক স্বয়ংক্রিয় ও রিমোট কন্ট্রোলড” প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোসাদ পরিচালনা করেছে।

আরও পড়ুনঃ  মক্কায় বন্যা*র পানিতে ভেসে গেল গাড়ি, ৪ বন্ধুর মর্মা*ন্তিক মৃত্যু

এ ধরনের হামলার ঘটনা ২০২০ সালের নভেম্বরে ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফখরিজাদেহকে হত্যা অভিযানকে মনে করিয়ে দিয়েছে, যেখানে দূর-নিয়ন্ত্রিত এক টন ওজনের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল।

ইরানের অভ্যন্তরে ড্রোন কারখানা

যুদ্ধে ইসরায়েল বিপুল সংখ্যক বিস্ফোরকবাহী ক্ষুদ্র ড্রোনও ব্যবহার করে। ইরানি গণমাধ্যম জানিয়েছে, দেশজুড়ে ক্ষুদ্র ও বড় ড্রোনের হামলা ঠেকাতে বিমান প্রতিরক্ষা সক্রিয় রাখা হয়েছিল, যদিও ঠিক কতগুলো ড্রোন হামলায় অংশ নেয় তা নিশ্চিত করা যায়নি।

তদন্তে দেখা গেছে, ইরানের অভ্যন্তরে পিকআপ ট্রাকের ওপর বিশেষভাবে তৈরি স্ট্যান্ড থেকে প্রোগ্রাম করা ড্রোন ছেড়ে টার্গেটে আঘাত হানার ব্যবস্থা করেছিল হামলাকারীরা। তেহরানের দক্ষিণের শহর শেহর-এ-রেই-তে এক তিনতলা ভবনে ড্রোন, বোমা ও বিস্ফোরক তৈরির গোপন কারখানার সন্ধানও পায় ইরানি নিরাপত্তা বাহিনী।

আরও পড়ুনঃ  ডিসি অফিসে চাকরির ভাইভা দিতে এসে আটক ২২ পরীক্ষার্থী!

রাষ্ট্রীয় টিভিতে ছয়জন “মোসাদ এজেন্ট” ধরা পড়ার ফুটেজও প্রকাশ হয়েছে, যেখানে তাদেরকে ড্রোন, টাইম-বোমা, গ্রেনেড ও অন্যান্য অস্ত্র তৈরি করতে দেখা যায়। কয়েকজন সন্দেহভাজনকে হাত বাঁধা ও চোখ ঢেকে টিভিতে স্বীকারোক্তি দিতে দেখা গেছে।

‘আমরা সবসময় নজরদারিতে’

ইসরায়েলি সেনাপ্রধান আইয়াল জামির স্বীকার করেছেন, ইসরায়েলি কমান্ডো বাহিনী “শত্রুপক্ষের ভেতর গোপনে অভিযান চালিয়ে আক্রমণ সহজ করেছে।” তবে ইরানি কর্তৃপক্ষ প্রকাশ্যে এ ধরনের হামলার ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি।

মোসাদের গোপন তথ্য ও হামলা ইরানের প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় বিপর্যয় সৃষ্টি করে যুদ্ধের সূচনালগ্নেই ইরানের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও পরমাণু বিজ্ঞানীদের হত্যা করতে সহায়তা করেছে। হামলার পরপরই ইরানে ইন্টারনেট সংযোগ ৯৭ শতাংশ পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়, যা দেশের ইতিহাসে অন্যতম বড় ব্ল্যাকআউট।

আরও পড়ুনঃ  পলকের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন সার্টিফিকেট পুড়িয়ে চাকরি পাওয়া ইডেন ছাত্রী!

যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার দুই দিন পর বৃহস্পতিবার ইন্টারনেট সংযোগ পুনরায় স্বাভাবিক করা হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ