30 C
Dhaka
Sunday, August 10, 2025

‘দুই পায়ে গুলির পর দুই হাতের আঙুল কেটে দেন তারা’

স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিমের নির্দেশে পুলিশ ও সন্ত্রাসী বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হওয়ার এবং মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ এনে চট্টগ্রামের রাউজানে সংবাদ সম্মেলন করেছেন পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে পা হারানো এক বিএনপিকর্মী।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের পলোয়ান পাড়ার বাসিন্দা কামরুল হাসান ওই সংবাদ সম্মেলনে তার ওপর নির্যাতনের ভয়ংকর গল্প তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ২০১৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি আমি বোয়ালখালী উপজেলায় মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে ছিলাম। সেখানে রাউজান থানার উপপরিদর্শক টুটন মজুমদার কয়েকজন পুলিশ সদস্য নিয়ে হাজির হন। তাদের সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন সন্ত্রাসী। রাত ১২টার পর তারা আমাকে গ্রামের দুই কিলোমিটার দূরের সূর্যসেন পল্লি এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে আমার দুই পায়ে গুলির পর দুই হাতের কয়েকটি আঙুল কেটে দেন তারা। পরদিন পুলিশ ঘটনাটিকে বন্দুকযুদ্ধ দাবি করে আমাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলে পাঠায়।

আরও পড়ুনঃ  এমপি আজিমকে ওজন মেপে প্যাকেট করেছে কসাই জিহাদ

যদিও পুলিশ বলছে তার ওপর এ ধরনের নির্যাতন করা হয়নি। গ্রেপ্তারের পর গেলে অস্ত্র উদ্ধারে গেলে কামরুলের সহযোগীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি করায় হতাহতের ঘটনা ঘটেছিল।

কামরুল হাসানের অভিযোগ করে বলেন, গ্রেপ্তারের সময় আমার কাছে কিছুই ছিল না। কিন্তু পরবর্তী সময়ে পুলিশ আমার কাছ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও পেট্রোল বোমা উদ্ধার দেখায়। পুলিশের গুলির পর আমার একটি পা সম্পূর্ণ কেটে ফেলা হয়। আরেকটি পাও পুরোপুরি সুস্থ হয়নি। রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ও নোয়াপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ বাবুল মিয়ার নির্দেশে পুলিশ তাকে এ নির্যাতন করে।

আরও পড়ুনঃ  লেফটেন্যান্ট কর্নেল আজমত উল্লাহর পদত্যাগের ভাইরাল দাবির ফ্যাক্টচেক

২০১৫ সালের ওই ঘটনার পরও তাকে নির্যাতন এবং হয়রানি করা হয়েছে দাবি করে কামরুল বলেন, ২০১৫ সাল থেকে একটি পা বিচ্ছিন্ন। অন্যটিও পঙ্গু। এরপরও ২০২২ সালের ১৬ আগস্ট আমাকে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর ভাড়া বাসা থেকে তুলে নিয়ে অস্ত্র দিয়ে আরেকটি মামলায় ফাঁসানো হয়। আবারও জেলে যেতে হয়েছে। শুধু তাই নয়, আমাকে রাঙামাটির কাউখালী থানার একটি চাঁদাবাজি মামলায়ও আসামিও করা হয়। শুধু বিএনপি করার কারণে আমার ওপর এসব নির্যাতন করা হয়েছে। এ ঘটনায় আমি অভিযুক্তদের বিচার দাবি করছি। শিগগিরই মামলা করব।

আরও পড়ুনঃ  ভুয়া ভুয়া স্লোগানে উত্তাল শাহবাগ, পিছু হাঁটলো পুলিশ

অভিযুক্ত সাবেক সংসদ সদস্য বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। এছাড়া নোয়াপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ বাবুল মিয়াও এখন আত্মগোপনে।

অভিযোগের বিষয়ে পুলিশের এসআই টুটন মজুমদার বলেন, দুটি মামলায় পরোয়ানা থাকায় কামরুলকে বোয়ালখালী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে গেলে সহযোগীদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি গোলাগুলি। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের অভিযোগ সত্য নয়।

সংবাদ সম্মেলনে নিজের ওপর সংঘটিত নির্যাতনের বিচার দাবি করেন কামরুল হাসান। এসব ঘটনায় মামলা করবেন বলেও জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে তার স্ত্রী পারভিন আকতার, মেয়ে রুনা আকতার, রেশমি আকতার, সানজিয়া হাসান ও কয়েকজন গ্রামবাসী উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ