31.1 C
Dhaka
Thursday, August 7, 2025

২৮ অক্টোবর: লগি-বৈঠা আন্দোলনে মানুষ মেরে লাশের ওপর নৃত্য করেছিল সেদিন

২০০৬ সালের অক্টোবর মাস। বিএনপির নেতৃত্বে চারদলীয় জোট সরকার তখন বিদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সদ্য অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি কে এম হাসান যাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধানের দায়িত্ব নিতে না পারেন সেজন্য আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোট তখন তুমুল আন্দোলন করছে।

এমন প্রেক্ষাপটে ২০০৬ সালের ২৮শে অক্টোবর ঢাকার পল্টন-বায়তুল মোকাররম এলাকায় জামায়াতে ইসলামী এবং আওয়ামী লীগের কর্মীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। সেদিন ঢাকার রাস্তায় প্রকাশ্যে অস্ত্র তুলে গুলি এবং মানুষ পিটিয়ে মারার ঘটনা গভীর আলোড়ন তৈরি করেছিল। রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকায় প্রকাশ্যে লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে জামায়াত-শিবিরের ৬ নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়। বিএনপি-জামায়াতের দাবি, একদলীয় শাসনের গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই সেদিন রাজপথে তাণ্ডব চালায় আওয়ামী লীগ।

আরও পড়ুনঃ  ‘মৃত্যুর জন্য তুমি দায়ী বাবা, আমার প্রিয় মানুষটাকে আদালতে ঘুরাবা না’

রাজপথে লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যার পর সেই লাশের ওপর নৃত্যের ঘটনাটি দেশের ইতিহাসে একটি অন্যতম নৃশংস ঘটনা। যা নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠে দেশে-বিদেশে। তবে বিষয়টি হঠাৎ করে ঘটেনি। লগি-বৈঠা নিয়ে রাজপথে এসে প্রতিপক্ষকে দমনের ঘোষণা ছিল আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের।

লগি-বৈঠার তাণ্ডব ছাড়াও রাজধানীর পল্টন-বায়তুল মোকাররম এলাকায় বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের দিনব্যাপী চলে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। এ ঘটনায় পল্টন ও শাহবাগ থানায় পৃথক ৫টি মামলা হয়। পল্টন থানায় করা পাল্টাপাল্টি দু’টি মামলার একটি ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর পরই প্রত্যাহার করা হয়।

আরও পড়ুনঃ  ‘মুই বিচার চাই না, সরকার যেন খালি মোর পোলার লাশের খোঁজডা দেয়’

ক্ষমতাসীন ১৪ দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা অন্য মামলাগুলোও পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। সে সব মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৪ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা আসামি ছিলেন। অপর দিকে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের আসামি করে যে মামলাটি হয়েছিল তা উচ্চ আদালত স্থগিত করে রেখেছেন।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘এটি ছিল স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের উত্থানের প্রথম মহড়া। সেদিনও বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় ছিল। তবে সরকারের যে ভূমিকা পালন করা দরকার ছিল তা তারা করেনি।’

আরও পড়ুনঃ  রাজবাড়ীতে ছাত্রলীগ নেতাকে কু*পিয়ে হ*ত্যা

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২৮ অক্টোবরে লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যা আওয়ামী লীগের স্বৈরাচারী মনোভাবেরই বহিঃপ্রকাশ। রক্তাক্ত এই দিনটি রাজনীতির ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায় হয়ে থাকবে বলে মনে করেন তারা।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ