32.5 C
Dhaka
Saturday, June 21, 2025

‘বাংলাদেশের পরিস্থিতি জানেন না? এত তাড়াহুড়োর কী ছিল?’

সংশোধিত ওয়াক্ফ আইন ইস্যুতে বাংলাদেশের উদাহারণ টেনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তীব্র সমালোচনা করেছেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে মুসলিমদের ধৈর্যধারণ এবং ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ‘নিয়ন্ত্রণ’ করতে মোদিকে আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

গতকাল মঙ্গলবার কলকাতায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পশ্চিমবঙ্গের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সম্মেলনে বক্তব্য দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের পরিস্থিতি জানেন না? এত তাড়াহুড়োর কী ছিল? পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশের সীমান্ত লাগোয়া রাজ্য। আপনি ইউনূসের (বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূস) সঙ্গে গোপনে মিটিং করছেন, চুক্তি করছেন। করেছেন করুন। তাতে দেশের ভালো হলে আমার কিছু বলার নেই।”

আরও পড়ুনঃ  সর*কারকে কড়া বার্তা দিলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

গত ২ এপ্রিল গভীর ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভা এবং পরের দিন উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় পাস হয় ‘সংশোধিত ওয়াক্ফ বিল,২০২৫’। গত ৫ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর স্বাক্ষরের মধ্যে দিয়ে আইনে পরিণত হয় সেই বিল এবং তা কার্যকর হয় ৮ এপ্রিল।

এদিকে আইন কার্যকর হওয়ার পরপরই ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভ শুরু করেন মুসলিমরা ও বিজেপিবিরোধী বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দ। সবচেয়ে বেশি বিক্ষোভ হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। এই বিক্ষোভকে ঘিরে আক্ষরিক অর্থেই রণক্ষেত্রে রূপ নিয়েছিল রাজ্যের মুর্শিদাবাদ, মালদহ, নদীয়াসহ বিভিন্ন জেলা। পুলিশ-বিক্ষোভকারী সংঘাতে বেশ কয়েক জনের নিহতের সংবাদও পাওয়া গেছে।

গত ১১ এপ্রিল এক দলীয় কর্মসূচিতে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধীদলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, স্থিতিশীলতার নিরিখে রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি বাংলাদেশের চেয়েও খারাপ।

আরও পড়ুনঃ  ছাত্রদল এখন থেকে আর শোডাউনের রাজনীতি বিশ্বাস করে না : সভাপতি

বাংলাদেশের পরিস্থিতি যে এপার বাংলাতেও প্রভাব ফেলছে তা মানেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতারাও। আরজি কর আন্দোলনে যে বাংলাদেশের নাগরিক আন্দোলনের প্রভাব ছিল, তা-ও মনে করেন তারা। সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, সেখানেও বাংলাদেশের পরিস্থিতির কথা টানলেন মমতা।

ওয়াকফ আইন নিয়ে যে সহিংসতা ছড়িয়েছে রাজ্যে, তাতে ভুয়া খবরের ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন মমতা। এর আগে রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকেও বার বার এই অভিযোগ তোলা হয়েছে। মমতার কথায়, ‘‘আমি নাম বলি না। কিন্তু আজকে বলছি। এখানে অমিত শাহের কোম্পানি বেশি আছে।’’ এর পরেই শাহের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘‘আপনি কোনও দিন প্রধানমন্ত্রী হবেন না। মোদীজির প্রধানমন্ত্রিত্ব গেলে আপনার কী হবে? আপনাকে তো হামাগুড়ি দিতে হবে।’’ সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘‘আমি মোদীজিকে অনুরোধ করছি, ওই লোকটাকে নিয়ন্ত্রণ করুন। একটা লোকের হাতে সব এজেন্সি। যেমন পারছে ব্যবহার করছে।’’

আরও পড়ুনঃ  দায়িত্ব নিতে সম্মত হয়েছেন ড. ইউনূস

মুসলিমদের উদ্দেশে মমতা বলেন, “সংখ্যালঘুদের উদ্দেশে মমতার অনুরোধ, ‘‘এক বছর ধৈর্য ধরুন। দিল্লিতে অনেক পরিবর্তন হবে। নতুন সরকার হলে আশা করি হামাগুড়িবাবু ঢুকবেন না।’’

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ