30 C
Dhaka
Friday, February 21, 2025

পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু ‘আমার সামনে চুল ফ্যানের সঙ্গে বেঁধে আম্মুকে ঝুলিয়েছিল’ স্কুল ছাত্রের কান্না

যশোরের অভয়নগরে থানা-পুলিশের হেফাজতে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম আফরোজা বেগম (৪০)। আজ রোববার সকালে এ ঘটনা ঘটে। পরিবারের দাবি, নির্যাতনে ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, আফরোজার মৃত্যু হয়েছে হৃদ্‌রোগে।

আফরোজা বেগমের ছোট ছেলে নওয়াপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাব্বির মোল্লা বলেন, ‘গতকাল রাতে আম্মু বাড়ির পাশে পানি আনতে যান। এ সময় বাড়িতে পাঁচজন পুলিশ আসে। এর মধ্যে সিলন দারোগা (এএসআই সিলন আলী) আম্মুকে তাঁর কাছে যা আছে, বের করে দিতে বলেন। তাঁর কাছে কিছু নেই জানালে তিনি (সিলন আলী) একজন নারী পুলিশকে ফোন করে ডেকে আনেন। তিনি আম্মুর শরীর তল্লাশি করেও কিছু পাননি। এরপর সিলন দারোগা আম্মুকে চড় দিতে থাকেন। আম্মুকে মারতে নিষেধ করলে তিনি (সিলন দারোগা) আমাকেও দুটি চড় মারেন। এরপর আমাকে ঘর থেকে বের করে নারী পুলিশের সহায়তায় ঘরে দরজা দিয়ে কী করেছে, জানি না। তবে আমার সামনে চুল ফ্যানের সঙ্গে বেঁধে আম্মুকে ঝুলিয়ে দিয়েছিল।’

আরও পড়ুনঃ  ‘দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে গেছেন শেখ হাসিনা’

যশোর জেনারেল হাসপাতালে চত্বরে কান্নাজড়িত কণ্ঠে মৃত আফরোজা বেগমের বড় ছেলে মুন্না মোল্লা বলেন, স্থানীয় একটি মহলের ইন্ধনে এসআই সিলন ও শামছু শনিবার রাত ১২টার দিকে তাঁদের বাড়িতে আসে। পরে নিজেদের কাছে থাকা ইয়াবা দিয়ে তাঁর মাকে গ্রেপ্তার দেখায়। এ সময় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ আরও কয়েকজন পুলিশ তাঁর মাকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে মারধর করে।

পরে রাত ১টার দিকে থানায় নিয়ে যায়। সকালে থানায় গিয়ে দেখেন তাঁর মা খুব অসুস্থ। পুলিশকে অনুরোধ করে তাঁর মাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা কয়েকটি টেস্ট দিলেও পুলিশ সদস্যরা সেগুলো করতে না দিয়ে ফের থানায় নিয়ে যায়। আবারও অসুস্থ হয়ে পড়লে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মায়ের মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুনঃ  ‘যে ভাইকে বাবার স্নেহ দিয়ে বড় করেছি, সেই আমার সন্তানকে ৪ খণ্ড করল’

মুন্না অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ ঘরে থাকা ইজিবাইক বিক্রির এক লাখ ৮০ হাজার টাকা লুট করেছে। আরও দুই লাখ টাকা ঘুষের দাবিতে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।

অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আকিকুল ইসলাম বলেন, ৩০টি ইয়াবাসহ আফরোজা বেগমকে গতকাল রাত দেড়টার দিকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাতে তাঁকে মহিলা থানা হাজতে রাখা হয়। সকালে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে তাঁকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়।

আরও পড়ুনঃ  জামায়াত নিষিদ্ধ, তারেক রহমানের ফেরা এবং সরকারের মেয়াদ নিয়ে যা ভাবছে দলগুলো

হাসপাতালে আনার পর তাঁর মৃত্যু হয়। চিকিৎসক বলেছেন, তাঁর উচ্চ রক্তচাপ ছিল। অস্বাভাবিক কোনো কিছু ঘটেনি। ময়নাতদন্তের পর আজ এশার নামাজের পর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ