28.4 C
Dhaka
Saturday, June 21, 2025

মনিরকে গুলির পর কাউসার

‘শালা নাটক করে মাটিতে পড়ে আছে’

রাজধানীর বারিধারার ডিপ্লোমেটিক জোনে অবস্থিত ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটির দায়িত্ব থাকা পুলিশ কনস্টেবল মনিরুল কে হত্যা করে একই দায়িত্বে থাকা আরেক পুলিশ কনস্টেবল কাউসার। এছাড়া এ ঘটনায় দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে জানা গেছে।

শনিবার (৮ জুন) রাত ১২ টার দিকে বারিধারা দূতাবাস রোডে ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

যে দুজন আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে একজন সাইকেল আরোহী এবং অপরজন জাপান দূতাবাসের ড্রাইভার।

জানা গেছে, কাউসার মনিরুলকে গুলি করে ফিলিস্তিনি দূতাবাসের প্রধান ফটক এসে দাঁড়ায়। তখন প্রধান ফটকের দুই থেকে তিনজন নিরাপত্তা রক্ষী ছিল। তারা গুলি শব্দ শুনতে পেলেও তখন ধারণা করতে পারিনি যে কাউসার মনিরুলকে গুলি করে এসেছে। তখন কাউসারকে ফিলিস্তিনি দূতাবাসের এক নিরাপত্তার রক্ষী জিজ্ঞেস করেন মনিরুল কেন রাস্তায় পড়ে রয়েছে। তখন মনিরুলের সামনেই দাড়িয়ে ছিল কাওসার। সে বলে কিছুই হয়নি, শালা এমনি নাটক করতাছে।

আরও পড়ুনঃ  সাহারা মরুভূমিতে বন্যা, সামনে এলো অবাক করা দৃশ্য

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ফিলিস্তিন দূতাবাসের এক নিরাপত্তা রক্ষী বলেন, ঘটনার সময় আমরা দূতাবাসের ভিতরে ছিলাম। হঠাৎ করে ৭ থেকে ৮ রাউন্ড গুলি শব্দ শুনে আমরা বাহিরে আসি। বাহিরে আসার পর কাউসার কে দেখি ফিলিস্তিনি দূতাবাসের প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আর একটু দূরেই পড়ে রয়েছে মনিরুলের মরদেহ। তখন আমরা কাউসারকে জিজ্ঞেস করি কি হয়েছে।

তখন সে বলে শালা (মনিরুল) নাটক করতেছে এমনি মাটিতে পড়ে রয়েছে। এই কথা বলে কাউসার দূতাবাসের বিপরীত পাশে রোডে চলে যায় ‌। এরই মধ্যে সবাই বুঝে উঠে যে কাউসার মনিরুলকে গুলি করেছে। এরপর ঘটনাস্থলে থাকা নিরাপত্তা রক্ষীরা কাউসারকে আটক করে।

নিহত কনস্টেবল মনিরুল পুলিশের ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি বিভাগে কর্মরত ছিলেন। গতরাতে ফিলিস্তিন দূতাবাস লাগোয়া উত্তর পাশের গার্ড রুমে তার ডিউটি ছিল। একই সময়ে ডিউটিরত আরেক কনস্টেবল কাউসার আহমেদ গুলি করে বলে পুলিশ জানিয়েছে। পরে কনস্টেবল কাউসার আহমেদকে আটক করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  রাতে মেয়ের জামাইয়ের বন্ধুর ফোন পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান বাবা, অতঃপর...

ওই কনস্টেবলের এলোপাতাড়ি গুলিতে আতঙ্ক ছড়ায়। গুলির খবরে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও শুরুর দিকে আতঙ্কে কেউ সামনে যেতে পারছিলেন না।

গুলশান থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, তারা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন, মানসিক বিকারগ্রস্থ হয়ে কনস্টেবল কাউসার সহকর্মী কনস্টেবল মনিরুলকে গুলি করেছে। এতে তিনি ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান। একই ঘটনায় আরও দুইজন আহত হন।

রাত সোয়া ১ টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ফিলিস্তিন দূতাবাসের অদূরে ফুটপাত পেরিয়ে সড়কের পাশে কনস্টেবল মনিরুলের গুলিবিদ্ধ দেহ উপড় হয়ে পড়ে আছে। তখনও তার ব্যবহৃত রাইফেলটি তার পিঠের উপর পড়েছিল। পুরো এলাকা পুলিশের সোয়াট টিম ঘিরে রেখেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছুটে যান।

আরও পড়ুনঃ  দাফনের পরই কবর থেকে লাশ উধাও, এলাকায় আতঙ্ক

ঘটনার সময়ে ওই সড়ক ধরে কর্মস্থল থেকে অফিসের গাড়িতে ফিরছিলেন একাত্তর টিভির কর্মী হাসান আহমেদসহ কয়েকজন। হাসান আহমেদ কালবেলাকে বলেন, তারা ডিউটি শেষ করে অফিসের গাড়িতে ফিরছিলেন। হঠাৎ ফিলিস্তিনী দূতাবাসের সামনে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পুলিশের এক সদস্যকে পড়ে থাকতে দেখেন।

পাশেই অস্ত্রধারী আরেক পুলিশ সদস্য দাঁড়িয়ে ছিল। তাদের চালক গাড়ির গতি থামালে তিনি গাড়ি থেকেই জিজ্ঞেস করেন কি হয়েছে? দাঁড়িয়ে থাকা অস্ত্রধারী পুলিশ সদস্য হুঙ্কার দিয়েই তাদের দিকে অস্ত্র তাক করে। তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

তিনি জানান, ওই সময়ে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শুনতে পান তারা। তখন আশপাশের লোকজন উকিঝুঁকি দিলেও গুলির কারণে কেউ সামনে আসতে সাহস পাচ্ছিল না।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ