28.7 C
Dhaka
Wednesday, August 27, 2025

‘ড্রাইভার যদি কামায় কোটি কোটি, তাহলে মালিক তো বিলিয়ন বিলিয়ন’

বিসিএসসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (বিপিএসসি) ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তাসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। একটি বেসরকারি টেলিভিশনে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর সাঁড়াশি অভিযানে নামে সিআইডি। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।

জানা গেছে, গ্রেপ্তারদের মধ্যে রয়েছেন পিএসসির শীর্ষ কয়েকজন কর্মকর্তা, একজন অফিস সহকারী এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত-সমালোচিত পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক ড্রাইভার সৈয়দ আবেদ আলীও।

এদিকে, আলোচিত এই ঘটনার পর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন সরকারের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলন। তিনি লিখেছেন, ‘আমার অফিসের গাড়ির ড্রাইভার যদি কামায় কোটি কোটি টাকা, তাহলে আমি তো কামিয়েছি বিলিয়ন বিলিয়ন!!

আরও পড়ুনঃ  বাতিল এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রক্রিয়া নিয়ে বৈঠক আজ

প্রসঙ্গত, ওই বেসরকারি টেলিভিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভিযুক্ত পিএসসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হলেন উপপরিচালক মো. আবু জাফর, উপ-পরিচালক জাহাঙ্গির আলম, সহকারী পরিচালক এস এম আলমগীর কবির, সহকারী পরিচালক নিখিল চন্দ্র রায়, চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবন ও অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান। বিপিএসসির কোনো নিয়োগ পরীক্ষা এলেই প্রশ্নফাঁস করে অর্থ লোপাটে মেতে উঠতো সংঘবদ্ধ চক্রটি।

প্রশ্নফাঁসকারী চক্রটি গত ৫ জুলাই (শুক্রবার) অনুষ্ঠিত রেলওয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলীর নিয়োগ পরীক্ষাকে বেছে নেয়। এই পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ও জালিয়াতির তথ্য ফাঁস করতে ছদ্মবেশ ধারণ করে অনুসন্ধানী সাংবাদিক টিম। ছদ্মবেশী এক নিয়োগপ্রত্যাশী প্রার্থীকে তুলে দেওয়া হয় চক্রের সদস্যদের হাতে। এরপর ৫ জুলাই সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত যে প্রশ্নে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, হোয়াটসঅ্যাপে তার একটা কপি পাঠানো হয় পরীক্ষার অন্তত এক ঘণ্টা আগে। আর অজ্ঞাত স্থানে রেখে চুক্তিবদ্ধ শিক্ষার্থীদের তা পড়ানো হয় আগের রাতেই।

আরও পড়ুনঃ  ঘাস কাটতে গিয়ে বাসায় না ফেরায় সন্দেহ হয় পরিবারের, অতঃপর...

চক্রটির প্রধান বিপিএসসির অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম বলেন, উপ-পরিচালক মো. আবু জাফরের মাধ্যমে ২ কোটি টাকার বিনিময়ে শুক্রবার (৫ জুলাই) অনুষ্ঠিত রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস করা হয়। তিনি বড় কর্মকর্তাদের ট্রাঙ্ক থেকে পরীক্ষার আগের দিন আমাকে প্রশ্ন সরবরাহ করেন। আমি এটাও জানি ৪৫তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নও ফাঁস করা হয়।

এ ব্যাপারে সিআইডির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, প্রশ্নফাঁসকারী চক্রের ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, গ্রেপ্তারদের মধ্যে রয়েছেন পিএসসির উপ-পরিচালক মো. আবু জাফর ও মো. জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর কবির, অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান ও অফিস সহায়ক (ডিসপাস) সাজেদুল ইসলাম।

আরও পড়ুনঃ  এবারের হজে জন্ম নেয়া প্রথম শিশুটির নাম ‘মোহাম্মদ’

এছাড়াও রয়েছেন- সাবেক সেনা সদস্য নোমান সিদ্দিকী, ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের রাজনীতি করা এবং বর্তমানে মিরপুরের ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো. সোহেল, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, ব্যবসায়ী মো. জাহিদুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শাহাদাত হোসেন, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত মো. মামুনুর রশীদ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মেডিকেল টেকনিশিয়ান মো. নিয়ামুন হাসান, ব্যবসায়ী সহোদর সাখাওয়াত হোসেন ও সায়েম হোসেন ও বেকার যুবক লিটন সরকার।

প্রকাশিত সংবাদে বিসিএসের প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে আলোচনায় আসেন সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যানের গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী ও তার ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম। সোমবার দুপুর থেকে বাবা-ছেলের দুজনের নানান কর্মকাণ্ডের ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ