26.4 C
Dhaka
Thursday, August 28, 2025

‘অসদুপায় অবলম্বন করিনি, গায়ে খেটে ভাগ্য পরিবর্তন করেছি’

‘আমার জীবনে কোনোদিন অসদুপায় অবলম্বন করিনি। গায়ে খেটে ভাগ্য পরিবর্তন করেছি’— ফেসবুকে এমনটাই লিখেছিলেন বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যানের সাবেক ড্রাইভার সৈয়দ আবেদ আলী। গত ১২ জুন ফেসবুকে নিজের আইডিতে পোস্ট করা এক ভিডিওর ক্যাপশনে এ কথা লিখেছিলেন তিনি।

রোববার (৭ জুলাই) রাতে বিসিএসের প্রশ্নফাঁস নিয়ে পিএসসির বিরুদ্ধে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর ফেসবুকে সৈয়দ আবেদ আলীর পোস্টগুলো ভাইরাল হতে থাকে।

উল্লেখ্য, মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার বাসিন্দা আবেদ আলী একজন ড্রাইভার হলেও তার কোটি কোটি টাকার সম্পদের তথ্য সামনে এসেছে। প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য সামনে আসার পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় তার বিপুল সম্পদের তথ্য তুলে ধরছেন নেটিজেনরা।

আরও পড়ুনঃ  আগের স্বামীকে ডিভোর্স না দিয়েই চাচাতো ভাইকে বিয়ে করেন ইভা !

ছেলে ছাত্রলীগ নেতা, পড়েছেন বিদেশে, এরপর দেশের একটি ব্যয়বহুল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকার ভেতর তার দুটি বহুতল ভবন, মাদারীপুরে আলিশান বাড়ি রয়েছে এমন তথ্যও সামনে এসেছে।

সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের জন্য প্রচারণা চালিয়েছিলেন আবেদ আলী। আবেদ আলী সমাজের বিত্তবান ও প্রভাবশালীদের সঙ্গে নিয়মিত চলাফেরা করতেন। প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের সঙ্গেও উঠবস করতেন।

ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম। ডাসার উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি জীবন মানুষকে সাহায্য করে সেই ভিডিও প্রচার করেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সিয়াম চড়েন দামি গাড়িতে।

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ১২ বছরে বিসিএস পরীক্ষাসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের পেছনে জড়িত পিএসসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা হলেন, পিএসসির উপপরিচালক মো. আবু জাফর, উপ-পরিচালক জাহাঙ্গির আলম, সহকারী পরিচালক এস এম আলমগীর কবির, সহকারী পরিচালক নিখিল চন্দ্র রায়, চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবন ও অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান। বিপিএসসির কোনো নিয়োগ পরীক্ষা এলেই প্রশ্নফাঁস করে অর্থ লোপাটে মেতে উঠতো সংঘবদ্ধ চক্রটি।

আরও পড়ুনঃ  আদালতে হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফেরা হলো না বিএনপি-জামায়াতের ২ নেতার

প্রশ্নফাঁসকারী চক্রটি গত ৫ জুলাই (শুক্রবার) অনুষ্ঠিত রেলওয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলীর নিয়োগ পরীক্ষাকে বেছে নেয়। এই পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ও জালিয়াতির তথ্য ফাঁস করতে ছদ্মবেশ ধারণ করে অনুসন্ধানী সাংবাদিক টিম।

ছদ্মবেশী এক নিয়োগপ্রত্যাশী প্রার্থীকে তুলে দেওয়া হয় চক্রের সদস্যদের হাতে। এরপর ৫ জুলাই সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত যে প্রশ্নে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, হোয়াটসঅ্যাপে তার একটা কপি পাঠানো হয় পরীক্ষার অন্তত এক ঘণ্টা আগে। আর অজ্ঞাত স্থানে রেখে চুক্তিবদ্ধ শিক্ষার্থীদের তা পড়ানো হয় আগের রাতেই।

আরও পড়ুনঃ  ‘হয় এবার, না-হয় নেভার’

চক্রটির প্রধান পিএসসির অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম বলেন, উপ-পরিচালক মো. আবু জাফরের মাধ্যমে দুই কোটি টাকার বিনিময়ে শুক্রবার (৫ জুলাই) অনুষ্ঠিত রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস করা হয়। তিনি বড় কর্মকর্তাদের ট্রাঙ্ক থেকে পরীক্ষার আগের দিন আমাকে প্রশ্ন সরবরাহ করেন। আমি এটাও জানি ৪৫তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নও ফাঁস করা হয়।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ