29 C
Dhaka
Thursday, February 20, 2025

রাতে মেয়ের জামাইয়ের বন্ধুর ফোন পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান বাবা, অতঃপর…

ফরিদপুরে যৌতুকের দাবিতে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ডিগ্রি ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী তানজিলা আক্তার তহেরাকে (২১) পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী জিসান আহমেদের (২১) বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নিহত তানজিলার বাবা ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।

এদিকে, বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকালে অভিযুক্ত জিসানকে আটক করে পুলিশ। এর আগে বুধবার রাতে জিসান তার ভাড়া বাসায় তানজিলাকে পিটিয়ে আহত করে আত্মহত্যার চেষ্টা দেখিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎধীন অবস্থায় মারা যান তানজিলা।

নিহত তানজিলার বাবা তোবারেজ মোল্লা বলেন, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য জিসান ও তার মা জবেদা বেগম আমার মেয়ের ওপর নির্যাতন করতো। জিসানকে মোটরসাইকেল দেয়ার জন্য চাপ দিয়ে আমাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিতো। আবার জিসানকে বিদেশে পাঠাবে বলে টাকা চেয়ে পাঠাতো।

আরও পড়ুনঃ  ৯০ ফিলিস্তিনি নারী-শিশুকে মুক্তি দিলো ইস*রাইল

তিনি আরও বলেন, গতকাল রাত ৮টার দিকে আমার মেয়ের সঙ্গে কথা হয়। রাত ১২টার দিকে আমার মেয়ের নাম্বার দিয়ে জিসানের এক বন্ধু ফোন করে বলে তানজিলা আত্মহত্যা করতে চেয়েছে আমরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। খবর পেয়ে রাতেই আমরা হাসপাতালে গিয়ে মেয়ের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখি। জিসান বা কাউকে আমরা তখন কাছে পাইনি।
তিনি আরও বলেন, আমার মেয়ের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। জিসান নেশাগ্রস্ত ছিলো। যৌতুক না পেয়ে আমার মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। ভাড়া বাড়িতে থাকার আগে যখন শ্বশুর বাড়ি ছিলো তখন শ্বশুর বাড়ির লোকজনও তাকে নির্যাতন করত।

এ বিষয়ে জিসানের মা জবেদা বেগম বলে, জিসান ও তানজিলা দুজন ভালবেসে বিয়ে করেছিলো। তাকে কেন নির্যাতন করতে যাবে। আর আমিও কখনও যৌতুকের জন্য তানজিলাকে নির্যাতন করিনি। জিসান আমাকে গতকালের ঘটনা যা বলেছে তা হলো, জিসান বাড়ির বাইরে একজনের কাছ থেকে টাকা আনার জন্য রাত অবদি অপেক্ষা করছিলো। রাত ১০টার পরে তানজিলার ফোনে সে বাড়ির উদ্দ্যেশে রওনা হন টাকা না নিয়েই। বাড়িতে গিয়ে সে দরজা বন্ধ দেখতে পান। পাশের এক দোকান থেকে রড নিয়ে দরজা ভেঙ্গে জিসান দেখতে পায় তানজিলা ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে। তারপর স্থানীয় লোকজনদের সহায়তায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

আরও পড়ুনঃ  ‘বাংলাদেশ পরিস্থিতি’ নিয়ে বৈঠকে বসছেন ভারতীয় কমান্ডাররা, কারণ কী?

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মো. সালাউদ্দিন জানান, জিসান ও তানজিলার মধ্যে দাম্পত্য কলহ ছিলো। যৌতুকের জন্য তানজিলার ওপর নির্যাতন করা হতো। জিসানের পরিবারের পক্ষ থেকে আত্মহত্যার কথা বলা হলেও তানজিলার শরীরে স্বাভাবিক কিছু জখমের চিহ্ন রয়েছে।

এ ঘটনার মেয়ের বাবা একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। আমরা জিসানকে আটক করেছি। তবে এখনেই এটিকে হত্যা বলতে পারছি না। এটি হত্যা না আত্মহত্যা এ বিষয়ে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরে বলা যাবে। আমাদের আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ হস্তান্তর করা হবে।

আরও পড়ুনঃ  ছুরিকাঘাতে ‘ব্লেড বাবু’ নি*হত

নিহত তানজিলা আক্তার তহেরা ফরিদপুর সদরের ডোমরাকান্দি উত্তর পাড়া গ্রামের তোবারেজ মোল্লার মেয়ে। প্রায় ৫ মাস আগে প্রেমের সর্ম্পক করে সদরের পূর্ব গঙ্গাবর্দী এলাকার জাহিদ ফকিরের ছেলে জিসান আহমেদের ছেলের সঙ্গে বিয়ে হয়।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ