27 C
Dhaka
Monday, March 17, 2025

শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালানো সেই দুজন যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা

কোটা সংস্কারের দাবিতে চট্টগ্রামে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর গুলি করা দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে মো. ফিরোজ নিজেকে যুবলীগ নেতা বলে পরিচয় দেন। এন এইচ মিঠু নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনির অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

এর আগে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেল ৩টায় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রামের মুরাদপুরে জড়ো হন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে হঠাৎ করে ছাত্রলীগ–যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা–কর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হন। এ সময় দুপক্ষই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের মধ্যে শিক্ষার্থীদের মিছিল লক্ষ্য করে চার ব্যক্তিকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়। এতে তিনজন নিহত হন। আহত হন অন্তত ৫০ জন।

আরও পড়ুনঃ  বিধ্বংসী হবে ঘূর্ণিঝড় ‌‘ডানা’, বাংলাদেশে আঘাত হানবে যেদিন যেখানে

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যুবলীগ নেতা ফিরোজ চট্টগ্রামের আলোচিত স্কুলছাত্রী তাসফিয়া আমিন হত্যা মামলার অন্যতম আসামি। তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার দুপুর ২টা থেকে সাবেক যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের নেতৃত্বে ষোলশহর স্টেশনে অবস্থান নেন ছাত্রলীগ–যুবলীগের কর্মীরা। অন্যদিকে মুরাদপুরে অবস্থান নেন কোটা আন্দোলনকারীরা। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নুরুল আজিম রনির নেতৃত্বে ষোলশহর রেলস্টেশন স্টেশন থেকে একটি মিছিল যায় মুরাদপুরের দিকে। কোটা আন্দোলনকারীরা ধাওয়া দিলে পিছু হটেন তারা।

এরপর মিছিল থেকে গুলি করতে দেখা যায় ফিরোজকে। একপর্যায়ে গুলি থামিয়ে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘গুলি দে, গুলি দে’। কিছুক্ষণ পর একজন গুলি এনে দেন তাকে। গুলি লোড আবারও শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন ওই যুবক।

আরও পড়ুনঃ  ‘আমি তো ব্যারিস্টার সুমনের বউ লাগি না’

সংঘর্ষে নিহত তিনজনের মধ্যে ওয়াসিম আকরাম চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের সদস্য। তিনি কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মেহেরনামা এলাকার শফিউল আলমের ছেলে। অপরজন ফারুক, তিনি পথচারী ছিলেন। ফারুকের বাড়ি কুমিল্লায়। তিনি ফার্নিচারের দোকানে চাকরি করতেন। আরেকজন চট্টগ্রাম নগরের ওমরগণি এমইএস কলেজের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী মো. ফয়সাল আহমেদ শান্ত।

অস্ত্রধারীদের বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোখলেছুর রহমান, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. জাহাঙ্গীর ও পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমাকে একাধিকবার ফোন করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুনঃ  সরাসরি সম্প্রচারে হবে শেখ হাসিনার বিচার

ঘটনাস্থলে প্রকাশ্য অস্ত্রধারীদের বিষয়ে নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আবদুল মান্নান মিয়া বলেন, অস্ত্রধারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। কে বা কাদের গুলিতে দুজন নিহত হয়েছেন, সে বিষয়টিও পুলিশ তদন্ত করছে।

জানা গেছে, মো. ফিরোজ নিজেকে যুবলীগের নেতা দাবি করে আসছেন ২০১৫ সাল থেকে। ওই বছরের ডিসেম্বরে নগরে বিলবোর্ড টাঙিয়ে আলোচনায় আসেন। ওই সময় যুবলীগের মিছিল–সমাবেশে সামনের সারিতে দেখা যেত। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে এবং ২০১৩ সালের জুলাই মাসে অস্ত্রসহ দুবার পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। সর্বশেষ চট্টগ্রামের আলোচিত স্কুলছাত্রী তাসফিয়া আমিন হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ছিলেন তিনি।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ