দেশের সব সরকারি অফিসসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে কাল মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। সোমবার (৫ আগস্ট) রাতে এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
আইএসপিআর জানায়, আজ সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা থেকে মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) ভোর ৬টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে বাংলাদেশের সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে।
আরও পড়ুনঃ পদত্যাগ করে দেশ ছাড়লেন শেখ হাসিনা
পদত্যাগের পর বোনকে নিয়ে দেশ ছেড়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সোমবার (৫ আগস্ট) দুপুর আড়াইটার দিকে বঙ্গভবন থেকে সামরিক একটি হেলিকপ্টারে করে উড্ডয়ন করেন শেখ হাসিনা। এ সময় তার সঙ্গে ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হেলিকপ্টারে করে তারা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।
এদিকে বিকেল ৩টার দিকে গণভবন দখলে নিয়েছে ছাত্র-জনতার ঢল। ইতোমধ্যে সব বাধা পেরিয়ে গণভবনের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়েছেন হাজারো মানুষ।
অন্যদিকে, দুপুর থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা সড়ক থেকে সরে যেতে থাকলে রাজধানীর শাহবাগে মিছিলে মিছিলে জড়ো হতে থাকেন হাজার হাজার মানুষ। এ সময় তাদের উল্লাসে মেতে উঠতে দেখা যায়। একই সময় রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সময়ের সঙ্গে শাহবাগ অভিমুখে খণ্ড খণ্ড মিছিলে ছাত্র-জনতার স্রোত নামে শাহবাগে।
এর আগে রোববার একদিন এগিয়ে আনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার জন্য সোমবার সকাল ১০টার পর থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কিছু শিক্ষার্থী। তবে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার গ্যাসের শেল ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এদিকে, দুপুরে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন বলে জানায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। প্রথমে দুপুর ২টায় জাতির উদ্দেশে তার ভাষণ দেয়ার কথা থাকলেও পরবর্তীতে এক ঘণ্টা সময় পিছিয়ে বিকেল ৩টায় নির্ধারণ করার কথা জানানো হয়। এরপর আরও এক ঘণ্টা সময় পিছিয়ে বিকেল চারটায় ভাষণ দেন সেনাপ্রধান।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা কর্মসূচি ঘিরে রোববার ঢাকাসহ সারাদেশে সরকার সমর্থিত নেতাকর্মী ও পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১০০ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় ১৩ জন ছাড়াও কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জে পৃথক হামলায় হাইওয়ে থানার এক পুলিশসহ মোট ১৪ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন।
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোটাপ্রথা সংস্কারের দাবিতে গত জুলাইয়ের প্রথম থেকে আন্দোলন করে আসছিলেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় গত ১৫ জুলাই রাজধানী ঢাকাসহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালায় ছাত্রলীগ। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বন্ধে গুলি চালায় পুলিশ।
শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ ও আওয়ামী লীগ এবং দলটির সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের হামলায় কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী ও মানুষের মৃত্যু হয়। এ অবস্থায় শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ ও আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে দেশ ছাড়লেন শেখ হাসিনা।