28.9 C
Dhaka
Monday, June 30, 2025

আন্দোলনে কাঁদানে গ্যাসে অসুস্থ স্কুলছাত্র, ১৬ দিন পর মৃত্যু

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকে গ্রামের ছেলেদের সঙ্গে মাঠে নেমেছিল দশম শ্রেণির ছাত্র মাহিম। গত ৪ আগস্ট কুমারখালীতে মিছিলে থাকা অবস্থায় পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের মধ্যে পড়ে গুরুতর আহত হয় মাহিম। বিগত কয়েকদিন অসুস্থ থাকার পর মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সকাল ৭টার দিকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রক্তবমি আর শ্বাসকষ্টে মারা যায় সে। বিকেলে গ্রামের বাড়িতে তাকে দাফন করা হয়।

নিহত মাহিম হোসেন (১৭) কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের বামন পাড়া গ্রামের ইব্রাহিম হোসেনের বড় ছেলে। সে চাঁদট গ্রামের ইয়াকুব আহমদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

নিহতের বাবা ইব্রাহিম হোসেন জানান, গ্রামের ছেলেদের সঙ্গে তার ছেলে আন্দোলন করেছে। উপজেলা সমন্বয়করা তার সঙ্গে ছিল। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে মামলাও তুলে নেওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুনঃ  গণতন্ত্র হত্যার জন্য আওয়ামী লীগকে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে: হাসনাত

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রথম থেকেই অংশগ্রহণ করে আসছিল মাহিম হোসেন। ৪ আগস্ট সঙ্গীদের ডাকে সাড়া দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে যোগ দিতে খোকসা উপজেলা সদরে যায়। সেখানে পুলিশের বাধার মুখে সঙ্গীদের ছেড়ে কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে বাসে ওঠে।

পাশের উপজেলা কুমারখালীতে গিয়ে বাস থেকে নেমে সেখানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দেয় সে। সেখানে পুলিশের ছোড়া টিয়ারশেলের গ্যাসে মারাত্মকভাবে আহত হয় মাহিম। এতদিন চিকিৎসা চলছিল। মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রক্তবমি আর শ্বাসকষ্টে মারা যায় সে। পরে বিকেলে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায় মাহিমের মরদেহ। ইয়াকুব আহমদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে চাঁদট কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

আরও পড়ুনঃ  ‘নতুন বউকে সময় দিও’, স্বামীর উদ্দেশে শেষ বার্তা রেমির

নিহতের স্বজনরা বলেন, শনিবার (১৭ আগস্ট) সকাল থেকে প্রচণ্ড জ্বর ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয় সে। সোমবার রাতে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে সে মারা যায়।

নিহত মাহিমের বন্ধু জুয়েল ও রফিক জানান, আন্দোলনের শুরু থেকে মাহিম তাদের গ্রুপে ছিল। অন্য ছেলেদের মতো সেও বাড়িতে না জানিয়ে জেলা ও থানা সদরের কর্মসূচিতে অংশ নিতো। সহকর্মীর মৃত্যুতে তারা চরম ব্যথিত।

আরও পড়ুনঃ  মেজরের কলার ধরলেন গুলশান জোনের এসি সোহেল, ক্ষমা চেয়েও পার পেলেন না

নিহত মাহিমের ফুুপু রহিমা বলেন, দেশ স্বাধীন করতে ভাইদের ডাকে আমার সোনা মিছিলে গিয়েছিল। সেখান থেকে ফিরে আমাকে সব ঘটনা জানিয়েছিল। কিন্তু এতটা অসুস্থ তা বুঝতে দেয়নি। ওর মৃত্যু আমরা মানতে পারছি না।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রফিকুল ইসলামবলেন, চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা গেছে। তবে কী কারণে মারা গেছে সেটি বলতে পারছি না। ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যুর কারণ বলা সম্ভব না।

খোকসা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আননূর জায়েদ বলেন, শুনেছি একটা ছাত্র মারা গেছে। এবিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ জানাননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ