22 C
Dhaka
Thursday, February 20, 2025

বিদুৎ বিল পরিশোধে তাড়া, কত কোটি ডলার পাবে আদানি গ্রুপ?

বকেয়া বিদ্যুত বিল দ্রুত পরিশোধের তাগিদ দিয়েছে ভারতের বিদ্যুত সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান আদানি পাওয়ার। বাংলাদেশের কাছে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ ৫০০ মিলিয়ন বা ৫০ কোটি ডলারের বেশী পাওনা রয়েছে। মার্কিন গণমাধ্যম ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

আদানি গ্রুপের একটি সূত্র জানিয়েছে, বকেয়া দ্রুত পরিশোধের জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরিতে অর্থলগ্নিকারীদের চাপে আছে বলেও জানায় আদানি গ্রুপ।

৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর ক্ষমতায় আসে অন্তর্বর্তী কালীন সরকার ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ভারত থেকে বিদ্যূৎ কেনা ক্রয় ও শেখ হাসিনার আমলে করা ব্যয়বহুল অবকাঠামোগত চুক্তির নিন্দা করেন তিনি। এই বকেয়া পরিশোধ মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের জন্য একটি গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে বলে ইকোনমিক টাইসের প্রতিবেদনে জানানো হয়।

আরও পড়ুনঃ  সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ নিয়ে যে তথ্য দিলেন আবহাওয়াবিদ পলাশ

ফিন্যানশিয়াল টাইমসের কাছে পাঠানো এক বিবৃতিতে আদানি গ্রুপ বলে, আর্থিক চাপ থাকা সত্বেও বাংলাদেশে বিদ্যুতের নির্ভরযোগ্য সরবরাহ বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে। ‘আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি এবং তাদের জানিয়েছি যে পরিস্থিতি আর টেকসই পর্যায়ে নেই। কারণ আমরা একদিকে যেমন বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়ে প্রতিশ্রুতি বজায় রাখছি, অন্যদিকে তেমনি আমাদের ঋণদাতা ও সরবরাহকারীদের কাছে দেওয়া অঙ্গীকারও রয়েছে।’

অর্থ পরিশোধের এই দায় বাংলাদেশের সার্বিক জ্বালানি সংকটেরই একটি অংশ। বাংলাদেশের বিদ্যূৎ খাতে দায়ের পরিমাণ ৩৭০ কোটি ডলারে উঠেছে। জ্বালানি উপদেষ্টা ফওজুল কবির খান ফিন্যানশিয়াল টাইমসকে বলেছেন, আদানি বাংলাদেশের কাছে ৮০ কোটি ডলার পায়, এর মধ্যে ৪৯ কোটি ২০ লাখ ডলার পরিশোধ বিলম্বিত হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  হাসিনার পতনে বাংলাদেশে অনিশ্চিত ভারতের ভবিষ্যৎ

জ্বালানি চুক্তিগুলো পর্যালোচনা করতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার ড.মুহাম্মদ ইউনুস।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এখন বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক ঋণদাতার কাছে অর্থ সাহায্যের হাতা বাড়িয়েছে , উদ্দেশ্য হলো অর্থনীতি স্থিতিশীল করা। আদানি গ্রুপ অবশ্য বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে। ড. ইউনূসের প্রশাসন এমন ইঙ্গিত দিয়েছে যে আগের করা জ্বালানি চুক্তিগুলো পর্যালোচনা করা হবে। এর উদ্দেশ্য হলো প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র পুনরায় চালু করা এবং নিয়ন্ত্রণমূলক তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করা।

বিদ্যুৎ সরবরাহ বাংলাদেশ থেকে না সরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে আদানির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বর্তমানে আমাদের গড্ডা কেন্দ্র ভারতীয় বিদ্যুত্ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত নয়। তাই অন্য কোথাও এই বিদ্যুৎ সরবরাহ করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।’

আরও পড়ুনঃ  শে*খ হাসিনার আমলের প্রবৃদ্ধির পুরোটাই ভুয়া: রয়টার্সকে ড. ইউনূস

বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের একমাত্র রাষ্ট্রীয় সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)। প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) আদানি গ্রুপের দুই ইউনিটের বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে গড়ে প্রায় এক হাজার ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির সক্ষমতা এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট।

বাংলাদেশ যদি আদানির বিদ্যুৎ কেনা বন্ধ করে দেয়-এমন আশঙ্কা থেকে ভারত সরকার তাদের বিদ্যুৎ নীতিতে পরিবর্তন এনেছে। এতে বলা হয়, যেসব বিদ্যুৎ কেন্দ্র শুধুমাত্র বিদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে তৈরি করা হয়েছে, তারা চাইলে স্থানীয় বাজারেও বিদ্যুৎ দিতে পারবে।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ