30.2 C
Dhaka
Tuesday, June 24, 2025

দেয়াল টপকে পালানো প্রসঙ্গে যা বললেন হারুন

আওয়ামী লীগের শাসনামলে যে সকল পুলিশ কর্মকর্তা সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ছিলেন, তাদের মধ্যে অন্যতম মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের তার আর হদিস মিলছে না।

গত ২৯ আগস্ট খবর পাওয়া যায় হারুন রাজধানী উত্তরার একটি বাসায় অবস্থান করছেন! এমন সংবাদের ভিত্তিতে ওই বাসা ঘিরে রাখেন স্থানীয়রা। পরে তাকে পাওয়া যায়নি। এবার অজ্ঞাত স্থান থেকেই একটি বেসরকারি টেলিভিশনের এক সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেছেন আলোচিত এই পুলিশ কর্মকর্তা।

সাংবাদিকের সঙ্গে কথোপকথনে হারুন বলেন, ‘আমাকে ঘিরে নানা ধরনের গুজব ছড়ানো হচ্ছিল। তখনো আমি চুপ ছিলাম। সরকার যখন বলল, সবাইকে কাজে যোগ দিতে। তখন আমি গত ৮ আগস্ট ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি আমাকে তখনই যোগ দিতে নিষেধ করেন। আমাকে নিরাপদ স্থানে থাকতে বলেন।

আমি যোগদান করতে গেছি। কিন্তু আমি যোগ দিতে পারিনি। দুই দিন পর দেখি আমার নামে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। যেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি, কমিশনার ও আমাকে হুকুমের আসামি করা হয়। তখন আমি অবাক হলাম। আমি তো ডিবিতে কাজ করি। ডিবির কাজ হলো মামলা তদন্ত করা।

আরও পড়ুনঃ  নামাজরত অবস্থায় সাবেক চেয়ারম্যানের স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা

ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নির্দেশ দিলে আমরা গ্রেফতার করি। মোহাম্মদপুরে তো আমি গিয়ে মারামারি করিনি, এটা তো আমার কাজ না। অতিরিক্ত কমিশনার কি মারামারি করতে যায়? আর ডিএমপিতে কমিশনারের পরে ছয়জন অতিরিক্ত কমিশনার। আমি হলাম ৬ নম্বর কমিশনার। সেখানে আমার নামে যখন মামলা হলো তখন তো একটু…।

আবার বলা হলো মামলা হলেও সমস্যা নেই। ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকলে গ্রেফতার করা হবে না। আমি মনে করলাম ভালো কথা। ভাবলাম জয়েন করব। পরের দিন দেখলাম একজন উপদেষ্টা বললেন, যেসব পুলিশ কর্মকর্তা জয়েন করেননি আপনারা তাদের ধরে নিয়ে আসেন। আমি তখন আরো অবাক হলাম। আমি ‍যদি চাকরিতে জয়েন না করি তাহলে প্রসিডিং করবে। আর যোগ দিলে আমাকে দিয়ে জোর করে চাকরি করাবেন। এটা শোনার পরে আমার মনে হলো রিস্ক। মানে আমার লাইফ ঝুঁকির মধ্যে। এখন মানুষকে ধরে যেভাবে পেটানো, ডিম মারা হচ্ছে। যদি আমাকে…। আগে তো বাঁচতে হবে। আমি ইচ্ছাকৃতভাবে একটু চুপ আছি।

আরও পড়ুনঃ  দাবা*নলের পেছনের আসল কারণ কী?

পুলিশ সদর দপ্তরের দেয়াল টপকে পালাতে গিয়ে ব্যথা পাওয়ার বিষয়ে সাবেক ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি পুলিশ সদর দপ্তরে যাইনি।’

সরকারপ্রধান (শেখ হাসিনা) সবাইকে বিপদে ফেলে চলে গেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে হারুন বলেন, এ নিয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। আমি ছোট মানুষ। আমি ডিএমপির প্রধানও না, পুলিশের প্রধান না। আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমাকে মোয়া বানানো হচ্ছে। আমি কেন আলোচিত-এর একটাই কারণ যেখানে অপরাধ হয়েছে সেখানে আমি মানুষকে সেবা দিয়েছি। মানুষ যখন যে সমস্যায় পড়েছে তারা থানায় না গিয়ে ডিবিতে আসত। ডিবিতে আমার চাকরিজীবনে মানুষের উপকার করেছি। কারো ক্ষতি করিনি।

আরও পড়ুনঃ  কুমিল্লায় শিশুকে ধর্ষ.ণের পর হ*ত্যা, একমাত্র আসামির মৃত্যু*দণ্ড

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি অনেক বড় বড় কাজ করেছি, তবে পুরস্কার পাইনি। আমি আমার বিবেকের তাড়নায় কাজ করেছি।

দেশবাসী কেন আপনাকে ঘৃণা করে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ১২ বছর চাকরি করেছি। আমার কোনো অন্যায় থাকলে আপনি আমাকে ছাড়তেন? তখন আপনারা কোথায় ছিলেন? এখন আমি একটু অড পজিশনে পড়ে গিয়েছি, এখন যদি বলে হারুন খুব খারাপ… তাহলে আমি কী খারাপটা করেছি বলেন। আমি কার ক্ষতি করেছি? আমার কাছে যারা-যেসকল আসামিরা ছিল… এমনও বড় বড় বিএনপি নেতারা আমার কাছে গিয়েছিল.. তারা আমাকে বলতো আমার ফ্যামিলি প্রবলেম আছে, আমার ফ্যামিলি প্রবলেম সলভ করে দিও। এসব বিষয়ে আমি আরেকদিন কথা বলব।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ