32.4 C
Dhaka
Wednesday, June 25, 2025

১৩দিন পর শিক্ষকের লাশ মিললো পরিত্যক্ত পুকুরে

কক্সবাজারের পেকুয়া নিখোঁজের ১৩ দিন পর অপহৃত শিক্ষকের মরদেহ মিলেছে তার নিজ বাড়ির পরিত্যক্ত পুকুরে। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে সাড়ে তিনটার দিকে শিক্ষকের বাড়ির পাশের পরিত্যক্ত পুকুর থেকে বস্তাবন্দি হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সিরাজুল মোস্তফা। বস্তার ভেতর বেশকিছু ইটও ছিল।

নিহত শিক্ষক মোহাম্মদ আরিফ (৪৭) পেকুয়া সদর ইউনিয়নের মাতবরপাড়া এলাকার মরহুম মাস্টার বজল আহমদের ছেলে। তিনি পেকুয়া সেন্টার কেজি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন। গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। তাকে আহরণ করা হয়েছে জানিয়ে, বিভিন্ন মাধ্যমে তার পরিবার থেকে মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল।

আরও পড়ুনঃ  ইরানের হামলার পর বৈরুতে আরও বেশি হামলা ইসরায়েলের

শিক্ষক আরিফের ছোট ভাই রিয়াদ জানান, গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে তার বড় ভাই পেকুয়া সদরের চৌমুহনীতে অবস্থান করেছিল বলে বিভিন্ন জনের মাধ্যমে জেনেছি। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ এবং মুঠোফোন বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করে না পাওয়ায় স্ত্রী মেহবুবা আনোয়ার বাদি হয়ে থানায় প্রথমে ডায়রি করেন। তিনদিন পর অপহরণ মামলা হিসেবে রূপান্তর করা হয় ডায়েরিটি। শুক্রবার বিকালে বাড়ির পরিত্যক্ত পুকুরে বস্তা দেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।

তিনি আরো জানান, ব্যক্তিগত ভাবে অমায়িক শিক্ষক আরিফের কোন জ্ঞাত শত্রু ছিল না। কি কারণে, কারা তাকে হত্যা করা হলো তা বোধগম্য হচ্ছে না। তবে, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগ সভাপতি জাহাঙ্গির আলমদের পরিবারের সাথে আমাদের জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এজন্য ভাইয়ের এমন নৃশংস মৃত্যুর বিষয়ে আমাদের সন্দেহেরে দৃষ্টি তাদের (জাহাঙ্গীরদের) দিকে। অজ্ঞাত বিষয়টি তদন্ত করে বের করতে প্রশাসনের প্রতি জোর আবেদন জানান তিনি ও তার পরিবার।

আরও পড়ুনঃ  সত্যি হলো শঙ্কা, ভেঙে গেল গোমতীর বাঁধ

অপরদিকে, শিক্ষক আরিফের মরদেহ পাওয়ার পর সন্ধ্যায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির আলমদের দুটি বসতবাড়িতে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ মাতবরপাড়াবাসী। লুটপাট চালানো হয়েছে জাঙ্গাঙ্গীর আলমদের ভাড়া দেয়া চৌমহনীস্থ পরীস্থান টাইলস ও নাজিম ভাতঘর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে।

অভিযোগের বিষয়ে মুঠোফোনে অজ্ঞাত স্থান হতে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগ সভাপতি জাহাঙ্গির আলম বলেন, গত ৫ আগস্টের পর হতে আমাদের পরিবারের সবাই এলাকা ছাড়া। যেখানে এলাকায় নেই, সেখানে নৃশংস এমন হত্যাকাণ্ডে আমাদের উপর দোষ চাপানো অনৈতিক। দেশের এমন পরিস্থিতিতে আরিফকে কারা হত্যা করেছে তা বের করতে প্রশাসনের প্রতি তিনিও দাবি জানান।

আরও পড়ুনঃ  ‘মুই বিচার চাই না, সরকার যেন খালি মোর পোলার লাশের খোঁজডা দেয়’

পেকুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ সিরাজুল মোস্তফা জানান, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি পরিত্যক্ত পুকুর থেকে শিক্ষকের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় এনেছি। সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। কীভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তা নিশ্চিত হতে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, অন্তত ৫দিন আগে মরদেহটি পুকুরে ফেলে দেয়া হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ