26.9 C
Dhaka
Friday, August 8, 2025

রাষ্ট্রপতির পদত্যাগসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৫ দফা

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগসহ ৫ দফা দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে এসব দাবি মানা না হলে পুনরায় রাজপথে নামার ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রদের আন্দোলনের প্ল্যাটফর্মটি।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টায় ‘রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ ও সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার’ দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত গণজমায়েতে এ ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

গণজমায়েতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে ছাত্র-জনতা জড়ো হয়। জাতীয় নাগরিক কমিটির ঢাকা মহানগর শাখা একই দাবি নিয়ে গণজমায়েতে যোগ দেয়। গণজমায়েত শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে কর্মসূচি শেষ হয়।

পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেন সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। দাবিগুলো হলো—
১. বিদ্যমান সংবিধান অনতিবিলম্বে বাতিল করে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে নতুন সংবিধান লিখতে হবে।

২. ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে এই সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ  টিএসসিতে গণত্রাণ কর্মসূচির পূর্ণাঙ্গ অডিট প্রকাশ, যা বললেন সমনন্বয়কেরা

৩. রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনকে এই সপ্তাহের মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে।

৪. এই সপ্তাহের মধ্যে জুলাই বিপ্লবের আলোকে ‘প্রোক্লেমেশন অব রিপাবলিক’ ঘোষণা করতে হবে। বাংলাদেশের বিদ্যমান গণতন্ত্রকামী ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দলের মতের ভিত্তিতে বাংলাদেশ চলবে।

৫. ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণা করতে হবে। এই তিন নির্বাচনে যারা নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে এবং তারা যেন কখনো বাংলাদেশে নির্বাচন করতে না পারেন, সেজন্য আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগসহ ফ্যাসিবাদী সব সংগঠন এবং মুজিববাদী চেতনার সাংস্কৃতিক সংগঠন ও গণমাধ্যমকে স্থায়ীভাবে বাংলাদেশের মাটি থেকে উৎখাত করতে হবে। ১৭ জুলাই যখন ছাত্রলীগ, যুবলীগ শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে, তখনই সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে—জঙ্গি সংগঠন ও তার মা শেখ হাসিনার এই বাংলাদেশে স্থান হবে না।

অনলাইনে সক্রিয় ছাত্রলীগ কর্মীদের উদ্দেশ্য করে হাসনাত বলেন, তোমরা আমাদের কী ভয় দেখাবে! আমরা পুলিশ লীগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তোমাদের বাংলার মাটি থেকে উৎখাত করেছি। তোমাদের ‘মাদার অব টেরর’ শেখ হাসিনা তোমাদের ছেড়ে দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন। শেখ হাসিনাকে বিচারের জন্য টেনে-হিঁচড়ে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হবে।

আরও পড়ুনঃ  বাউফলে কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ৭২ সালের বাকশালি সংবিধান বাতিল করে জাতীয় দলগুলোর সঙ্গে বসে যদি এই মাসের মধ্যে নতুন সংবিধান বাস্তবায়ন শুরু না করা হয়, তাহলে নাগরিক কমিটি অংশীজনদের সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে। যারা আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুম ও খুনের সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

সমম্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ৫ আগস্ট রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু এখন কী খেয়ে, কোন মানসিক অবস্থায় থেকে তিনি বলছেন যে, তার কাছে পদত্যাগপত্র নাই! শেখ হাসিনাকে যেভাবে পালাতে হয়েছে, সাহাবুদ্দিককেও সেভাবে পালাতে হবে। কোনো ফ্যাসিস্ট যদি গর্ত থেকে উঁকি দিতে চায়, ছাত্রজনতা ঐক্যবদ্ধভাবে তাকে প্রতিহত করবে।

আরও পড়ুনঃ  ৩ দফা দাবিতে বি*ক্ষোভ করছেন স*শস্ত্র বাহিনীর চাকরিচ্যুত সদস্যদের পরিবার

সমম্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ফ্যাসিবাদের মূল আদর্শ মুজিববাদিতা। ছাত্রলীগ ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠায় অগ্রনায়ক ছিল। শেখ হাসিনার সময় তারা এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম জারি রেখেছে। বিগত ১৫ বছরে তারা বাংলাদেশে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। হাজার হাজার মানুষকে গুম করেছিল। ছাত্রলীগ দিয়ে এই ফ্যাসিবাদের শুরু হয়। তাই এদের নিষিদ্ধ করতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা ৩ তারিখ অঙ্গীকার করেছিলাম, ফ্যাসিবাদের বিলোপ করব এবং একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করব। কিন্তু ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার সময়ে নিয়োগপ্রাপ্ত সাহাবুদ্দিন এখনো ক্ষমতায় আছে।

সমম্বয়ক আরিফ সোহেল বলেন, ৭২ সালের সংবিধান জনগণের মতামত নিয়ে তৈরি করা হয়নি। সেই ৭২ সালের সংবিধান রক্ষা করে বসে থাকা রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন, তাকে পদত্যাগ করতে হবে।

গণজমায়েতে আরও বক্তব্য দেন সমম্বয়ক লুৎফর রহমান, সহ-সম্বয়ক রিফাত রশীদ, শিক্ষার্থী আশরেফা খাতুন প্রমুখ।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ