বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়েছে। এটি বৃহস্পতিবার মধ্যরাত নাগাদ ভারতের পুরী ও সাগর দ্বীপের মাঝখান দিয়ে উত্তর উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ হয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এর প্রভাবে দেশের উপকূলীয় জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের পাশাপাশি ১৪ জেলায় ২ থেকে ৩ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া সংস্থাটি। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১১ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক জানিয়েছেন, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে একই এলাকায় (১৯.৮° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৭.৪° পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে।
এটি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৪০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪০৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড় দানা আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং বৃহস্পতিবার মধ্যরাত নাগাদ ভারতের পুরী ও সাগর দ্বীপের মাঝখান দিয়ে উত্তর উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ হয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
সেই সঙ্গে এর অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের ওপর দিয়ে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪-৮৮ মি.মি.) থেকে অতি ভারি (≥৮৯ মি.মি.) বর্ষণ হতে পারে।
বর্তমানে প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
এই অবস্থায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এছাড়া প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, বরগুনা, বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং এসব জেলার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। এই অবস্থায় উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।