ছাত্র-জনতার অংশীদারিত্ববিহীন সিদ্ধান্তে নতুন উপদেষ্টা নিয়োগ এবং এতে ফ্যাসিবাদী দোসরদের স্থান দিয়ে শহিদের রক্তের অবমাননার অভিযোগে বিক্ষোভ মিছিল করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভে ‘বিতর্কিত’ উপদেষ্টাদের অবিলম্বে অপসারণের দাবি জানানো হয়।
সোমবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হয়। পরে মিছিলটি ভিসি চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, জুলাই-আগস্টে ফেসবুকে ২/১টা পোস্ট দিয়েই উপদেষ্টা হয়ে যাচ্ছেন অনেকে।
ভারতের দালালী করা ব্যক্তিরাও ডাক পাচ্ছেন বঙ্গভবনে, যেটি অভ্যুত্থানের সঙ্গে বেঈমানী। মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে কীভাবে নিয়োগ দেয়া হলো সেটি স্পষ্ট করার আহবানও জানান তারা। বিক্ষোভে উত্তরবঙ্গের কোনো জেলার কেউ উপদেষ্টা নিয়োগ না পাওয়ার সমালোচনাও করেন আন্দোলনকারীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ৫ জুন থেকে শুরু হওয়া আন্দোলনের সবচেয়ে বড় আইরনি হলো তিন মাস পরেও হাসিনার বিচার চাইতে হয়। ধানমন্ডি ৩২ কে আদর্শ মনে করা লোকদের উপদেষ্টা দেয়া হয়। আমরা খুনি হাসিনাকে উৎক্ষাত করেছি, তার লিগ্যাসি রক্ষা করার জন্য না। আমাদের প্রতিবাদের মুখে গণভবন থেকে মুজিবের ছবি সরানো হয়েছে। যাদের সঙ্গে ফ্যাসিবাদের দূরতম সম্পর্ক রয়েছে তাদেরকে সরকারে দেখতে চাই না।
সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, যারা বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ধর্মীয় মূল্যবোধকে ধারণ করে না, ধানমন্ডি ৩২ কে কাবা মনে করে তাদেরকে আমরা লালকার্ড দেখাই। এমন কাউকে আমরা উপদেষ্টা প্যানেলে চাই না। উপদেষ্টা নিয়োগে আঞ্চলিকতাকে ইস্যু করা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গ থেকে কোনো উপদেষ্টা নাই, অথচ আন্দোলনের প্রথম শহিদ আবু সাঈদ উত্তরবঙ্গের। এই সরকারের যারা ফ্যাসিবাদের দোসর তাদেরকে অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মূখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, ফ্যাসিস্টের দোসর, সফট আওয়ামীলীগ ও সফট শাহবাগীদেরকে উপদেষ্টাদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। এর অর্থ হলো আহত ও শহিদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানী করা। রোববার যে উপদেষ্টা নিয়োগ দেয়া হয়েছে ছাত্র-জনতাকে জানানো হয়নি। এদেরকে অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। উপদেষ্টাদের কাজের স্পষ্টতা থাকতে হবে, নিয়োগ প্রক্রিয়া, দুর্নীতি দমন সবকিছু স্পষ্ট করতে হবে। আপনারা প্রতি সপ্তাহের কাজে বিবরণী তুলে ধরতে হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন উপদেষ্টাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে প্রস্তুত রয়েছে।
প্রসঙ্গত, রোববার নতুন করে শপথ নেন তিন উপদেষ্টা। তারা হলেন– ব্যবসায়ী সেখ বশির উদ্দিন, চলচ্চিত্র পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম।