31 C
Dhaka
Saturday, October 18, 2025

বাংলাদেশ নৌ*বাহিনীর আয়না*ঘর! চোখ কপালে উঠার মত ঘটনা!

পারছিলাম না। তারপর আমাকে ১০ মিনিট দেয়া হয় সি,ও স্যারের অফিসের ওয়াশ রুমে গিয়ে ইউনিফর্ম পালটে সিভিল পোশাক পরার জন্য ।

ইউনিফর্ম পরিবর্তন করা শেষে আমাকে একটা জিন ফর্ম দেয়া হয় এবং আমার ফোন ও ল্যাপটপ ফিরিয়ে দেয়া হয় তারপর আমাকে একটা খামে আগস্ট মাসের আমার বেতনের হিসাব(যার কোনকিছুই আমার বোধগম্য হচ্ছিল না তখন) এবং একটি খামে প্রায় সাত হাজার টাকা ধরিয়ে জিপ যোগে জাহাঙ্গীর গেটে নামিয়ে দেয়া হয়। উল্লেখ্য যে আমাকে জিন ফর্ম ব্যাতিত কোন ধরনের নথিপত্র দেয়া হয়নি।

চাকরি হারানর কিছুদিন পরে আমি এম, আই, এস টি যাই তে একজন সিভিলিয়ান ছাত্র হিসাবে পড়ালেখা চালিয়ে যাবার কোন সুযোগ দেয়া হবে কিনা জানতে। আমাকে জানিয়ে দেয়া হয় এটা সম্ভব না এমনকি আমাকে ক্রেডিট ট্রান্সফার করার সুযোগ দিতেও অপারগতা প্রকাশ করা হয়।

আরও পড়ুনঃ  ‘দুই পায়ে গুলির পর দুই হাতের আঙুল কেটে দেন তারা’

যেহেতু আমি ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রাঞ্চের অফিসার ছিলাম কমিশনের পরে আমি বাংলা পরীক্ষা দিতে পারিনি। যার কারনে বি,ইউ,পি প্রদত্ত ডিগ্রীও আমার ছিল না। আমি বি,ইউ,পি তে এই ব্যাপারে যোগাযোগ করলে আমাকে সহায়তা করতে অপারগতা জানান হয়। এমনকি নেভাল হেডকোয়ার্টার্সে আমার এস,এস,সি এবং এইচ,এস,সি সার্টিফিকেট তুলতে গেলে গার্ড রুমে আটকে দেয়া হয় এবং ঢুকতে দেয়া হয়নি। তার প্রায় ২ বছর পরে আমি সার্টিফিকেট গুলা তুলতে সক্ষম হই।

তার প্রায় ২ মাস পরে আমার ফোনে একটা কল আসে। কল রিসিভ করার পর আমি কমোডোর সোহাইল স্যারের গলার আওয়াজ শুনতে পাই। স্যার আমাকে নেভাল হেডকোয়ার্টার্সে অবস্থিত তার অফিসে দেখা করতে বলেন। এই অপ্রত্যাশিত ঘটনায় আমি আবার হতবিহ্বল হয়ে পরি। কিন্তু ততদিনে উনার প্রতি আমার ভিতর এতটাই ভয় জন্মেছিল যে আমি না গিয়ে পারিনি।

আরও পড়ুনঃ  রেললাইনে আটকে গেল বাস, অতঃপর যা ঘটল

এইবার আমাকে আর গার্ডরুমে আটকানো হল না।তিন চার স্তরের নিরাপত্তা বলয় পার হয়ে আমি স্যারের রুমে গেলাম। উনি আমাকে বসতে বলে চা খেতে দিলেন এবং কি করছি না করছি এবং কি করার চিন্তা করছি সে বিষয়ে জানতে চাইলেন। কি বলব আমি বুঝতে পারছিলাম না। বিদায় নেবার পূর্বমুহূর্তে স্যার আমাকে বললেন “Talha you should have called me when I asked you to do so.” এই কথা এবং কথাটি বলার সময় উনার অভিব্যক্তি আমাকে আজও তাড়া করে বেরায়।

আরও পড়ুনঃ  আল-জাজিরার প্রতিবেদনে উঠে এল আয়না ঘরের বর্ণনা?

আমার জীবনের ঘটে যাওয়া এই ঘটনা আজ পর্যন্ত বিভিন্ন ভাবে আমাকে মানসিক ভাবে বিপন্ন করে। এখন পর্যন্ত আমি এর রেশ কাটিয়ে ঠিক মত নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারিনি।

আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই এবং আমার মত আরও যেসব অফিসার বিভিন্ন বৈষম্যের এবং অবিচারের শিকার হয়েছেন আমি চাই সবাই যেন সুষ্ঠু বিচার পান।

তালহা মোহাম্মাদ।
এক্টিং সাব লেফটেন্যান্ট (বরখাস্থ)
পি নংঃ ২৭৭৬
চিবা (শিন মাতসুদো সিটি),জাপান

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ