28 C
Dhaka
Sunday, October 19, 2025

এক ব্যাগ র*ক্তে স্যালাইন মিশিয়ে ৩ ব্যাগ বানিয়ে বিক্রি, সাথে ভুয়া ক্রসম্যাচিং রিপোর্ট

ময়মনসিংহে মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে অবৈধভাবে রক্ত সংগ্রহ ও বিক্রি করার চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। অভিযুক্তরা রক্তে স্যালাইন মিশিয়ে এক ব্যাগ রক্ত থেকে তিনটি ব্যাগ তৈরি করতো এবং ভুয়া ক্রসম্যাচিং রিপোর্ট তৈরি করে রোগীদের শরীরে ভেজাল রক্ত পুশ করতো। এতে রোগীরা বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে এবং মৃত্যুর ঝুঁকিও তৈরি হয়েছে।

গত ১৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত চুরির সময় দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন জেলার তারাকান্দা উপজেলার আবদুর রহমান খানের ছেলে মো. নাঈম খান পাঠান (৩৮) এবং নগরীর আকুয়া মড়ল বাড়ি এলাকার আব্দুল্লাহ (২২)।

আরও পড়ুনঃ  বাবার মৃত্যুর আধাঘণ্টা পর মেয়ের আত্মহত্যা

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, এরা সরকারি ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত চুরি করে নিয়ে বিভিন্ন ক্লিনিক ও বেসরকারি হাসপাতালে বিক্রি করতো। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে এক ব্যাগ রক্ত উদ্ধার করা হয়েছে।

ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম খান সংবাদ সম্মেলনে জানান, এই চক্রটি অত্যন্ত বিপজ্জনক। তাদের বিক্রি করা রক্তে স্যালাইন মিশিয়ে একাধিক ব্যাগ বানানো হতো। এছাড়া মাদকদ্রব্য গ্রহণ করা মানুষের রক্তও তারা সংগ্রহ করত। এর ফলে রোগীরা অস্বাস্থ্যকর এবং মরণঘাতী রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ছিল।

আরও পড়ুনঃ  উপদেষ্টা পরিষদে রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে যে সিদ্ধান্ত

ওসি আরও বলেন, এই চক্রটি বেশ বিস্তৃত এবং নগরীর বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। চক্রের সদস্যরা সরকারি অনুমোদিত ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত সংগ্রহ না করে ভুয়া ব্লাড ব্যাংক চালিয়ে রক্ত বিক্রি করছিল।

এদিকে, ময়মনসিংহের সিভিল সার্জন ডা. ফয়সল আহমেদ জানান, এ ধরনের অবৈধ রক্ত বিক্রির ঘটনায় প্রশাসন সচেতন নয়। তিনি বলেন, অবৈধ রক্ত গ্রহণের ফলে রোগীরা এইডস, হেপাটাইটিস এবং অন্যান্য মরণঘাতী রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।

মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মোহাম্মদ মাইনউদ্দিন খান বলেন, রক্ত সংগ্রহে টাকা নেওয়ার পরেও তারা রক্ত দিচ্ছিল না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানার পর দ্রুত পদক্ষেপ নেয় এবং চক্রের সদস্যদের আটক করা হয়।

আরও পড়ুনঃ  ব্যবসায়ীকে জেলে পাঠিয়ে সুন্দরী স্ত্রীকে ভাগিয়ে নেন সালমান

ময়মনসিংহে বর্তমানে নিবন্ধিত তিনটি ব্লাড ট্রান্সফিউশন সেন্টার রয়েছে। এসব সেন্টারের বাইরে থেকে রক্ত গ্রহণ করা অত্যন্ত বিপজ্জনক, এবং এ বিষয়ে রোগীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

এ ঘটনায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মো. সেলিম মিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন এবং চক্রের বাকি সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ