ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একটি বাসের সুপারভাইজারের খারাপ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এর জেরে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে শিক্ষার্থীরা বাসটি আটকে ভাঙচুর করে। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েক সমন্বয়ক শিক্ষার্থীদের বাস ভাঙচুরে বাধা দেয়। এতে ভাঙচুরকারী শিক্ষার্থীরা সমন্বয়কদের ওপর চড়াও হন। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে রাত দেড়টার দিকে ভাঙচুর করা বাসটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, বুধবার জিওগ্রাফি বিভাগের ১৩ শিক্ষার্থী কুষ্টিয়া শহরের কাউন্টারে কথা বলে এসবি পরিবহনের বাসে উঠেন। পরে বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আরও ১৫ জন শিক্ষার্থী কাউন্টারে কথা না বলে বাসে উঠেন। পরে বাসের সুপারভাইজার কাউন্টারে কথা বলা ১৩ জনের বাইরে অন্য শিক্ষার্থীদের নেমে যেতে বলেন। এ নিয়ে সুপারভাইজার ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে শিক্ষার্থীরা তাঁদের অন্য বন্ধুদের খবর দিলে তাঁরা ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে থেকে বাসটি আটকে দেয়। একই সময় এসবি পরিবহনের আরও একটি বাস আটক করেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু ওই বাসে অসুস্থ ও বিদেশি যাত্রী থাকায় তা ছেড়ে দেওয়া হয়।
বাস আটকে দেওয়ার সময় মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান আহত হন। তখন বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁকে কুষ্টিয়ায় পাঠানো হয়। আহত শিক্ষার্থী ও তাঁর বন্ধুদের দাবি, বাস আটক করার সময় অজ্ঞাত ব্যক্তির ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তাঁর পা কেটে গেছে। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বাস আটক করার সময় মোস্তাফিজ বাসের দরজার গ্লাসে লাথি দিলে পা কেটে যায়।
আহতের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের দায়িত্বরত চিকিৎসক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘তেমন কোনো সিরিয়াস ইনজুরি না। সার্প কাটিং হয়েছে। এমন আঘাত গ্লাস বা ধারালো কিছুতে হয়।’
এদিকে, মোস্তাফিজ আহত হওয়ায় তাঁর বিভাগের কয়েকজন প্রধান ফটকে আটক থাকা বাসটিতে ভাঙচুর চালায়। ইটের আঘাতে বাসের সামনের গ্লাসটি ভেঙে যায়। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা গাড়ি ভাঙচুরে বাধা দেন। তখন ভাঙচুর চালানো শিক্ষার্থীরা সমন্বয়কদের ওপর চড়াও হন। এর জেরে দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে প্রক্টরিয়াল বডির উপস্থিতিতে রাত দেড়টার দিকে বাসটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক ইয়াশিরুল কবির সৌরভ বলেন, ‘হঠাৎ করে একদল শিক্ষার্থী এসে এলোপাতাড়ি বাসে ইট ছুঁড়তে থাকে। এ সময় আমরা তাঁদের বাধা দিলে তারা উল্টো আমাদের ওপর চড়াও হয়। পরে নিরাপত্তাকর্মীরা পরিবেশ শান্ত করেন।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনা জানার পরপরই আমরা ঘটনাস্থলে যাই। কে বা কারা বাস ভাঙচুর করেছে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাসটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’