32.4 C
Dhaka
Wednesday, June 25, 2025

উদ্দেশ্য ক্ষয়ক্ষতি নয় সন্ত্রাস*সৃষ্টি! যু*দ্ধবিরতি চুক্তির পরও থামেনি ইসরায়েলিদের হিং*স্রতা

সানদুস আল-ফুকাহা ঘরে বসে খবর দেখছিলেন। হঠাৎ বাইরে থেকে দৌড়ানোর শব্দ এবং কয়েকজনের কণ্ঠ শোনা গেল। মুহূর্ত পরেই, একটি মলোটভ ককটেল ইসরায়েলি বসতিস্থাপনকারীরা তার বাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙে জানালা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলে তার ঘরের ভেতর, যা তার সোফা এবং পর্দা জ্বালিয়ে দেয়।

‘আমরা কম্বল দিয়ে আগুন নেভাই’
সানদুসের এক আত্মীয় ধারণকৃত ভিডিওতে দেখা যায়, তার ১২ বছরের মেয়ে আগুনে পানি ঢালার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে, তার ১৪ বছরের মেয়ে একটি কুশন দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে।
“পানি দিয়ে আগুন নিভল না। শেষে কম্বল দিয়ে তা নিভাতে সক্ষম হই,” বললেন ৩৭ বছর বয়সী সানদুস। “আমাদের ঘরে আমরা আটজন – শিশু, বৃদ্ধ এবং প্রতিবন্ধী নারী। আগে ফসলের মাঠে সমস্যা হয়েছে, তবে এমন ভয়াবহ অভিজ্ঞতা কখনো হয়নি।”

আরও পড়ুনঃ  বিজেপি জোট ৩০০ ছুঁই ছুঁই, আভাস পেরোল বিরোধীরা

হিংস্র আক্রমণ ও আতঙ্ক
সিনজিল, যেখানে প্রায় ৫,০০০ মানুষের বাস, সেখানেই হিংস্র বসতিস্থাপনকারীদের হানা। এই ঘটনাগুলো ঘটেছে গাজা যুদ্ধের যুদ্ধবিরতির চুক্তি এবং বন্দি বিনিময়ের প্রতিবাদে। অন্তত ছয়টি গ্রামে হামলা চালানো হয়, যেখানে পাথর ও মলোটভ ককটেল দিয়ে বাড়িঘর ও যানবাহন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
পশ্চিম তীরে ২১ জন আহত হয়েছেন বলে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানায়।

সিনজিলের দোকানদার রফিক তাফিশ বলেন, “এটা শুধু খরচ বা ক্ষতির বিষয় নয়, আতঙ্কটাই আসল সমস্যা।” তার ট্রাকটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। “আমার গাড়ি তো কিছু করেনি। কিন্তু তারা সন্ত্রাস ছড়াতে কোনো অজুহাত লাগে না।”

আরও পড়ুনঃ  জাতির ক্রান্তিলগ্নে নিজ নিজ অবস্থান থেকে নেমে পড়ুন: নাহিদ

‘এটাই আমাদের জমি’
মুহাম্মদ আল-ফুকাহা জানান, তার ৬৮ বছরের বৃদ্ধা মায়ের ঘরেও পাথর ছোঁড়া হয়।
“এখন আর রাস্তা পার হয়ে আমাদের জলপাই গাছের কাছে যেতে পারি না। ওরা গুলি চালায়,” বললেন মুহাম্মদ। “এটা আমাদের ঘরবাড়ি, আমাদের জমি। কিন্তু তারা চায় আমরা চিরতরে চলে যাই।”

যুদ্ধের প্রভাব ও বর্ধিত সহিংসতা
বসতিস্থাপন অবৈধ এবং দুই-রাষ্ট্র সমাধানের পথে প্রধান বাধা। ২০২২ সালে উগ্র দক্ষিণপন্থী নেতারা ইসরায়েলের সরকারে আসার পর থেকে এই সহিংসতা বেড়েছে।
যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সহিংসতার মাত্রা এতটাই বেড়েছে যে, কিছু গ্রাম সম্পূর্ণ খালি হয়ে গেছে। অনেক সময় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এই সহিংসতা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়, এমনকি এতে অংশগ্রহণ করতেও দেখা যায়।

আরও পড়ুনঃ  গাজীপুরে তরুণকে কুপিয়ে ১০ তলা ভবন থেকে ফেলে হত্যা

আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ ও ভবিষ্যৎ
পশ্চিমা দেশগুলো বসতিস্থাপন সহিংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। কিন্তু আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রথম দিনে ইসরায়েলি বসতিস্থাপনকারীদের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন। তার এই পদক্ষেপ ইসরায়েলি ডানপন্থীদের উৎসাহিত করেছে।

সিনজিলের মতো গ্রামে, এই হিংস্রতা শুধু বাড়িঘর নয়, মানুষের মনোবলকেও ধ্বংস করছে। আর এই পরিস্থিতি সমাধানের কোনো পথ দেখা যাচ্ছে না।

তথ্যসূত্রঃ https://www.theguardian.com/world/2025/jan/23/its-not-the-damage-its-the-terror-israeli-settlers-run-riot-after-ceasefire-deal

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ