24 C
Dhaka
Saturday, April 19, 2025

ট্রেনের নিচে ঝাঁপ, সেই বৃদ্ধের মৃত্যু নিয়ে যা জানা গেল

রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এক বৃদ্ধ। গত ১৪ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার আড়ানী রেলস্টেশনে রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। এরপর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার আত্মহত্যার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে পড়ে।

বৃদ্ধ রুহুল আমিন (৬০) বাউসা ইউনিয়নের মাঝপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। ভিডিও ভাইরালের পর থেকে তার আত্মহত্যার কারণ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। তবে তার মৃত্যু নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে দাবি করেছে পরিবার।

রুহুল আমিনের মৃত্যুর বিষয় নিয়ে তার ছেলে মীর মশিউর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার বাবা মানসিকভাবে কিছুটা অসুস্থ ছিলেন। এক রোখা মানুষ। ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি, তিনি কারও কথা শোনেন না। মন যা চায় তাই করেন। ঘটনার দিন বাবা আড়ানী স্টেশন বাজারে গিয়েছিলেন পরিবারের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে। তিনি পেঁয়াজ ঢেকে রাখার জন্য পলিথিনও কিনেছেন। সেটাও লাশের পাশেই পাওয়া যায়।

আরও পড়ুনঃ  সংক্ষিপ্ত তালিকায় পুলিশের পোশাকের ৬ রং, ২০ লোগো

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বাবার মৃত্যু নিয়ে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন। অনেকেই লিখেছেন- বাবাকে না খেতে দিয়ে ছেলের বৌ নির্যাতন করত, মেয়ে বাবাকে দেখে না ইত্যাদি। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, বাবা-মায়ের আমরা দুই সন্তান। বড় বোন মৌসুমী আক্তারের ২০ বছর আগে বিয়ে হয়েছে পাবনা জেলার ঈশ্বরদীতে। বোন শ্বশুরবাড়িতে থাকে। আর আমি চাকরির সুবাদে স্ত্রী নিয়ে ঢাকায় থাকি। যারা মৃত্যু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখছেন তারা গুজব ছড়াচ্ছেন।

স্থানীয় স্কুল শিক্ষক এনামুল হক বলেন, তিনি সহজ-সরল মানুষ ছিলেন। কম কথা বলতেন। তবে জেদি মানুষ ছিলেন। তার মৃত্যু নিয়ে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা কথা রটিয়েছে। এটা ঠিক করেনি। আগে প্রকৃত ঘটনা জানতে হবে। তারপরে না হয় লিখল। এসব কারণে পরিবারের সম্মান নষ্ট হয়।

আরও পড়ুনঃ  একটা পলাতক দল অস্থিতিশীল করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছে: ড. ইউনূস

বাঘা উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফ আলী মলিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, রুহুল আমিন সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। তারা পারিবারিকভাবে ভালো মানুষ। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে। বিয়ের পরে মেয়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকে। ছেলে চাকরির সুবাদে ঢাকায় থাকে। জানা মতে, সন্তানরা তার বাবা-মাকে দেখে। এই দিক থেকে কোনো সমস্যা নেই।

তিনি আরও বলেন, রুহুল আমিন দীর্ঘদিন ধরে কোমর আর পা ব্যাথায় ভুগছিলেন। যেহেতু বয়স হয়েছে শারীরিক নানা জটিলতা দেখা দেওয়া স্বাভাবিক। তবে মানসিকভাবে বুদ্ধি কম। যাকে বলে প্রতিবন্ধী। তিনি ঋণগ্রস্ত ছিলেন কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের জানা মতে অভাব নেই। তারপরও যদি ঋণ থাকে খুব বেশি হওয়ার কথা নয়।

আরও পড়ুনঃ  দেশে রয়েছে ২০ হাজার অ*বৈধ ভারতীয়, নতুন ষড়যন্ত্রের আভাস!

ঈশ্বরদী রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, তিনি বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। টাকার পরিমাণ ২-৩ লাখ টাকা হবে। সেই টাকা নিয়ে তিনি পেঁয়াজের চাষ করেছিলেন। আশানরূপ ফলন পাননি। লোকসান হওয়ার কারণে হয়তো দুশ্চিন্তায় ছিলেন। এছাড়া শারীরিকভাবেও তিনি অসুস্থ ছিলেন। এ বিষয়ে থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ