খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় ১৬ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন দুই শিশু সন্তানের মা এমন বালা ত্রিপুরা (২৫)। মা না থাকায় ক্ষুধা আর কান্নায় দিন কাটছে দুই শিশুর। উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় দিন গুণছেন পরিবার।
নিখোঁজ এমন বালা ত্রিপুরা বাজার সদর ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়ার বাসিন্দা শরৎ কুমার ত্রিপুরার স্ত্রী। সুষ্মিতা ত্রিপুরা (৬) ও সুভাষ ত্রিপুরা (৪) নামে তাদের দুই শিশুসন্তান রয়েছে।
জানা গেছে, গত ৩ এপ্রিল বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বিকাশ থেকে টাকা উত্তোলনের কথা বলে এমন বালা ত্রিপুরা বাড়ি থেকে বের। এরপর ১৬ দিন পার হলেও বাড়ি ফেরেননি তিনি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এমন বালা ত্রিপুরার দুই অবুঝ শিশুসন্তান ঘরে সামনে নীরবে দাঁড়িয়ে আছেন। মায়ের জন্য প্রতিদিন অপেক্ষায় থাকেন তারা। তাদের চোখে মুখে মায়ের শূন্যতার ছাপ স্পষ্ট। কথা হয় তাদের সাথে। দুই শিশু বলেন, মা কোথায়, মাকে খুব মিস করছি। বহুদিন হচ্ছে মা ঘরে ফিরে আসছে না।
স্থানীয়রা জানান, এমন বালা ত্রিপুরা গত ৩এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকাশ থেকে উত্তোলনের কথা বলে মাটিরাঙ্গা বাজারে যাওয়ার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছে। সেদিন রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরও এমন বালা ত্রিপুরা বাড়ি ফিরে না আসায় তার স্বামী,বাড়ির লোকজন ও তাদের আত্মীয়-স্বজনসহ প্রতিবেশীরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান পাওয়া যায়নি।
তার হাতে মোবাইল ফোন না থাকায় কেউই তার সাথে যোগাযোগ করতে পরেনি। পরে কোন উপায় না পেয়ে গত ১২এপ্রিল তার স্বামী ও স্বজনেরা মাটিরাঙ্গা থানায় জিডি করেছেন।
তারা আরও জানান, এমন বালা ত্রিপুরার স্বামী শরৎ কুমার ত্রিপুরা ইটভাটায় কাজ করেন। এমন বালা ত্রিপুরাও একটি ইটভাটায় দিনমজুরির কাজ করে কোনোমতে সংসার চালান। শরৎ কুমার ত্রিপুরা স্ত্রীর খোঁজে বের হন প্রতিদিন। দুই শিশুর দেখভাল করার কেউ থাকে না। মায়ের জন্য তারা প্রচণ্ড কান্না-কাটি করে। তাদের ঠিকমতো খাওয়াও হয় না। আমরা যতটুকু পারছি সাহায্য করছি।
এমন বালা ত্রিপুরাকে ফিরে পাওয়ার জন্য স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে সহযোগিতার আহ্বান জানান তারা।
এ বিষয়ে মাটিরাঙ্গা সদর থানার এসআই (নিরস্ত্র) মো. আব্দুর রহিম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, পুলিশ খুব আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে। এমন বালাকে খুঁজে বের করার জন্য আমাদের তৎপরতা চলছে। খুব শীঘ্রই ভালো একটা রেজাল্ট পাওয়া যাবে আশা করছি। আমাদের থানায় জিডি করার পরপরেই বাজারের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে আমরা সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।