কক্সবাজার সরকারি কলেজ মাঠে বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ‘যেমন খুশি তেমন সাজো’ প্রতিযোগিতায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ব্যঙ্গ করার অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ সোলাইমানের পদত্যাগ ও ওই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের দাবি উঠেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসের অনুষ্ঠানে ‘যেমন খুশি তেমন সাজো’ প্রতিযোগিতায় মাঠে যে যার মতো করে নিজেকে উপস্থাপন করছিল। তাতে এক শিক্ষার্থী খালেদা জিয়ার অবয়ব নিয়ে অংশ নেন। সেখানে ওই ছাত্রী বেগম জিয়ার মিমিক্রি (নকল করে কথা বলা) করেন। তবে মিমিক্রির বিভিন্ন পর্যায়ে বলা কথাগুলো নানা ইঙ্গিতপূর্ণ হওয়ার অভিযোগ তোলেন কলেজ শিক্ষার্থীরা। মিমিক্রিটি ব্যঙ্গার্থক দাবি করে ওই ছাত্রীর অংশগ্রহণ বাতিল করতে বলেন তারা।
কক্সবাজার সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক আতাহার সাকিব বলেন, অভিযোগ উঠার সঙ্গে সঙ্গে ওই ছাত্রীকে প্রতিযোগী তালিকা থেকে বাতিল করে দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ।
সাকিব বলেন, বিষয়টি নিয়ে আপত্তি উঠায় পরবর্তীতে কলেজ অধ্যক্ষের কক্ষে নিয়ে গিয়ে ওই ছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তখন সে এটি নিছক একটি অভিনয় ছিল বলেই দাবি করে। তারপরও অভিনয়টি সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে না পারায় সে ওই মুহূর্তে সবার কাছে দুঃখ প্রকাশ করে বলেও জানান সাকিব।
এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ভিডিওটি। বৃহস্পতিবার রাতেই কক্সবাজার জেলা বিএনপি কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন কক্সবাজার জেলা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। কয়েক হাজার নেতা-কর্মী শহরের প্রধান সড়কে মিছিল করে পরে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে এসে সমাবেশ করেন।
সমাবেশে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শাহাদাত হোসেন রিপন বলেন, কলেজ অধ্যক্ষের গাফিলতির কারণে বেগম জিয়াকে নিয়ে কটাক্ষ করার সাহস দেখিয়েছে ওই শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থী ও কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ সোলাইমানকে বহিষ্কারের দাবি তোলেন তিনি।
রাতেই কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ সোলাইমান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ওই প্রতিযোগীকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিযোগিতা থেকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের উপস্থিতিতে অধ্যক্ষের কক্ষে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়। এ ব্যাপারে কোনো পক্ষকে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ করা হলো।’
এদিকে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে কক্সবাজারের সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজল কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষকে বিতর্কিত মন্তব্য করে তিনিও অপসারণ দাবি করেন।