24 C
Dhaka
Thursday, February 20, 2025

‘দারোগা আম্মুর চুল ফ্যানের সঙ্গে বেঁধে ঝুলিয়ে দেয়’

‘নারী পুলিশ আম্মুর শরীর তল্লাশি করেও কিছু না পেলে সিলন দারোগা আম্মুকে চড় দিতে দিতে মাটিতে ফেলে দেন। আমাকেও চড় মারেন। ঘরে নিয়ে আমার সামনে আম্মুর চুল ফ্যানের সঙ্গে বেঁধে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।’

মায়ের মৃত্যুতে এভাবেই পুলিশের ওপর অভিযোগ এনেছেন যশোরের অভয়নগরের মৃত আফরোজা বেগমের (৪০) ছোট ছেলে সাব্বির মোল্যা। সে নওয়াপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র ও নওয়াপাড়া গ্রামের নর্থ বেঙ্গল রোডের আব্দুল জলিল মোল্যার ছেলে। তার অভিযোগ, পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের কারণে তার মায়ের মৃত্যু হয়েছে।

ওই নারীর আরেক ছেলে আরিফ হোসেন মুন্না জানায়, ‘পুলিশ কোনো পরীক্ষা ছাড়াই আমার মাকে থানায় নিয়ে আসে। কোনো ওষুধ বা খাবার খেতে দেওয়া হয়নি। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে আমার মায়ের মৃত্যু হয়। মায়ের কাছে টাকা দাবি করা হয়। টাকা না দিলে ২০০ পিস ইয়াবাসহ চালান করে দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়।’

আরও পড়ুনঃ  হিজাব-বোরকা নিয়ে কঠোর অবস্থান থেকে সরে এল আইইউবিএটি

পুলিশ জানায়, শনিবার রাত দেড়টার দিকে উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রাম থেকে ৩০ পিস ইয়াবাসহ আফরোজাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসআই সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে তাকে গ্রেপ্তার অভিযানে অংশ নেন এএসআই সিলন আলী, এএসআই শামসুল হক ও কনস্টেবল রাবেয়া খানম। গ্রেপ্তারের পর তাকে মহিলা হাজতে রাখা হয়। রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর সুস্থতা বোধ করলে থানায় আনা হয়। সকাল পৌনে ১০টার দিকে আফরোজা ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে সকাল ১১টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন জরুরি বিভাগের চিকিৎসক। আফরোজার বিরুদ্ধে অভয়নগর থানায় মাদক আইনে মামলা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  ‌পরিস্থিতির কারণে নাহিদের বোন পরিচয় দিয়েছিলাম, বললেন সেই ফাতিমা

হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন যশোর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক হাসিব মো. আলী হাসান।

এদিকে এএসআই সিলন আলী নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘থানায় এনে ওই নারীকে কোনোভাবেই নির্যাতন করা হয়নি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য যশোর সদর হাসপাতালে রাখা হয়েছে। নির্যাতন করা হলে তা অবশ্যই ময়নাতদন্তে ধরা পড়বে।’

অভয়নগর থানার ওসি এস এম আকিকুল ইসলাম বলেন, ‘৩০টি ইয়াবাসহ আফরোজা বেগমকে শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাতে তাঁকে মহিলা থানা হাজতে রাখা হয়। সকালে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে তাঁকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালে আনার পর তাঁর মৃত্যু হয়। চিকিৎসক বলেছেন, তাঁর উচ্চ রক্তচাপ ছিল।

আরও পড়ুনঃ  আধুনিক পিতৃত্ব এবং জেন্ডার সমতা নিয়ে ফটো*গ্রাফি প্রদর্শনী

অস্বাভাবিক কোনো কিছু ঘটেনি। ময়নাতদন্তের পর আজ এশার নামাজের পর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ