32.4 C
Dhaka
Friday, June 20, 2025

এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মোমবাতি ও দিয়াশলাই আনতে নোটিশ!

আজ থেকে শুরু হচ্ছে ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষা। আর এই পরীক্ষার একদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কলেজের নিজস্ব পেজ থেকে একটি নোটিশের কারণে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছেন পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।

শনিবার (২৯ জুন) বিকেলে টাঙ্গাইল শহরের মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসান আদর্শ মহাবিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষের স্বাক্ষরে স্বাক্ষরিত একটি নোটিশ ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সেই নোটিশে উল্লেখ রয়েছে, ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের অবগত করা যাচ্ছে যে দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্ভবনা থাকায় তাদের সকলকে পরীক্ষা কেন্দ্রে মোমবাতি ও দেয়াশলাই সঙ্গে আনার জন্য নির্দেশ দেয়া হল।

অপরদিকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ভাসানী আদর্শ কলেজের পেইজে একটি নোটিশ দেয়া হয়েছে, সেখানে বলা আছে দূর্যোগ সম্ভাবনা আবহাওয়ার জন্য টর্চ লাইট ও মোমবাতি সঙ্গে আনার জন্য। এছাড়াও সখীপুর উপজেলার একটি কলেজেও এ ধরনের নোটিশ দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থী শান বলেন, এটি প্রথমে বুঝতে পারিনি। পরে বুঝলাম যে আবহাওয়ার কারণে সঙ্গে নিয়ে যেতে বলেছে। তবে আমরা মনে করি এটি সমস্যা হবে না। এটুকু নোটিশ না দিয়ে মৌখিকভাবে বললেও চলত।

আরও পড়ুনঃ  শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠান নিয়ে যা বললেন শিক্ষামন্ত্রী

মেজর জেনারেল আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের এক পরিক্ষার্থী নাদিয়াত সিদ্দিকী জারিন জানায়, আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এধরনের একটি নোটিশ দেয়া হয়েছে পরীক্ষার আগের দিন। এটা কিভাবে সম্ভব! এই নোটিশ পাওয়ার পর আমরা হতবাক হয়েছি যে, কিভাবে মোববাতি, দিয়াশলাই এবং চার্জার লাইট নিয়ে কেন্দ্রে যাবো! এই নোটিশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে এবং সমালোচনা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, এসব প্রস্তুতিতো কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের নেয়ার কথা।

সখিপুরের সরকারি মুজিব কলেজের পরিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন জানায়, আমি নোটিশটি আমাদের কলেজের ফেসবুক পেইজে দেখেছি। এই ডিজিটাল যুগে এমন প্রাচীন প্রযুক্তি ব্যবহার হবে ভেবেই অনেকটা হতবাক হয়েছি। কারন এখনতো রিচার্জেবল লাইটই পাওয়া যায়। সেগুলো লাগাতে পারতো পরীক্ষার হল গুলোতে। এমন নোটিশে অনেকটাই অস্বাভাবিক লেগেছে আমার কাছে।

আরও পড়ুনঃ  এসএসসি পরীক্ষায় বড় পরিবর্তন, থাকবে না জিপিএ

এ বিষযয়ে মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসান আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. ইউসুফ আলী বলেন, বিষয়টি দৃষ্টি কটু দেখাচ্ছে। এ বিষয়টি মৌখিক পরামর্শ দিতেও পারতেন তিনি।

মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসান আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম বলেন, আমার এই কলেজ থেকে ১ হাজার ৩৮১জন শিক্ষার্থী এ বছর এইচএসসি পরীক্ষা দিবে। আমাদের কেন্দ্র হচ্ছে সন্তোষের মাওলানা ভাসানী আদর্শ কলেজ। ওই কলেজের অধ্যক্ষ মো. দেলোয়ার হোসেন আমাকে ফোন করে এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন। সেই কারণে আমি মনে করেছি হঠাৎ যদি ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়, যদি বিদ্যুৎ চলে যায় সেজন্য শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে এমন নোটিশ দিয়েছি। তিনি আরো বলেন, এটা শুধু আমি না, মাওলানা ভাসানী আদর্শ কলেজের ফেইসবুক পেইজেও এই ধরনের নোটিশ করেছেন। তবে সে পরবর্তীতে লেখাটি ডিলিট করে দিয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  ১২ শিক্ষকের দুই শিক্ষার্থী, পাস করেনি কেউ

মাওলানা ভাসানী আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ মো. দেলোয়ার হোসেনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার এখানে চার প্রতিষ্ঠানের ২ হাজার জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিবে। বোর্ডের যে নির্দেশনা রয়েছে সে অনুযায়ী আমাদের প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থাই গ্রহণ করা হয়েছে। তবুও ভাবলাম এতগুলো শিক্ষার্থী যেনো বৈরি আবহাওয়ায় বৈদ্যুতিক জটিলতায় পরে পরীক্ষায় কোন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি না হয়, তাই এমন নোটিশ দিয়েছিলাম। তবে এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বিষয়টি না করে দেয়ায় আমরা লেখাটি সরিয়ে নিয়েছি।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. জিয়াউল ইসলাম বলেন, এটি কোনভাবেই সম্ভব না। এই নোটিশ যারা করেছে সেটি খতিয়ে দেখব। পরীক্ষার্থীরা কোনভাবেই এ সমস্ত জিনিস সঙ্গে আনতে পারবে না। পরীক্ষা কেন্দ্রে আলোকস্বল্পতা থাকলে সেটি পরীক্ষা ব্যবস্থাপনায় যারা আছেন তারাই দেখভাল করবেন।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ