27.1 C
Dhaka
Wednesday, June 25, 2025

‘মানুষের ঘৃণা নিয়ে চাকরি করব না’ লিখে অবসরে অতিরিক্ত ডিআইজি

সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে একের পর এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা পদত্যাগ করছেন। এরইমধ্যে স্বেচ্ছায় অবসর নিলেন ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. মনিরুজ্জামান টুকু। মনিরুজ্জামান খুলনা-বরিশাল বিভাগের ট্যুরিস্ট পুলিশে কর্মরত। তিনি ২০ ব্যাচের পুলিশ কর্মকর্তা। মানুষের ঘৃণা নিয়ে চাকরি করব না লিখে স্বেচ্ছায় অবসরের গেলেন তিনি।

রবিবার (১১ আগস্ট) অবসর চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে আবেদন করেন তিনি।

আবেদনপত্রে তিনি লেখেন, মহান আল্লাহ তার কিতাবের সর্বশেষ পরিপূর্ণ সংস্করণ আল কোরআনের জ্ঞান ও ন্যায়-অন্যায় প্রজ্ঞা দান করায় আমি বুঝতে পারছি যে, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে আর চাকরি করা আমার জন্য সমীচীন নয়। এ কারণে ১১ আগস্ট আমি পুলিশে আমার পদ থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করলাম।

আরও পড়ুনঃ  প্রবল শক্তি নিয়ে আছড়ে পড়ল হারিকেন বেরিল, বিদ্যুৎ বিভ্রাট-দুর্ভোগ

পদত্যাগপত্রে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে পুলিশকে দেয়া মন্ত্রীদের আদেশকে অবৈধ বলেন তিনি। ছাত্র-জনতার সঙ্গে তৎকালীন সরকারের আচরণকে নিষ্ঠুরতম উল্লেখ করেন।

মনিরুজ্জামান টুকু লেখেন, বিগত ১০ বছরে বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীদের অবৈধ আদেশ পালন ও পুলিশের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বর্বর আদেশে শিশু-কিশোরসহ বহু মানুষকে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যরা হত্যা করেছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে। এ অবস্থায় মানুষের ঘৃণার পাত্র হিসেবে আমি পুলিশ বাহিনীতে চাকরি করতে ইচ্ছুক নই। তাই আমি চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করলাম।

আরও পড়ুনঃ  সাবেক সংসদ সদস্যের বাসায় ছাত্র জনতার তল্লাশি

এ ছাড়া তার ফেসবুকের পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ! আলহামদুলিল্লাহ! আলহামদুলিল্লাহ! বিগত ১৭ বছর ধরে পরাধীন দাস থেকে আজকে আমার মহান প্রভু স্বাধীন মানুষে পরিণত করলেন! মহান আল্লাহ আমাকে বিবেক দিয়েছেন বলেই বিসিএস পুলিশ অফিসারদের মধ্যে প্রথম নিরস্ত্র শিশু-কিশোর, ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যাকারী বিগত সরকার টিকে থাকা অবস্থাতেই আমি চাকরি ও মৃত্যুর ভয়কে উপেক্ষা করে সরকারকে পৃথিবীর নিষ্ঠুরতম গণহত্যাকারী হিসেবে অভিহিত করেছিলাম। যা প্রায় এক কোটি মানুষ দেখেছে-শুনেছে।

তিনি আরো লেখেন, এর মধ্যে মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ সন্দেহ প্রকাশ করেছে, ভেবেছে সরকারের নিশ্চিত পতন হবে বুঝতে পেরে আমি পরবর্তী সরকারের নিকট থেকে পদোন্নতিসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নেয়ার জন্যই এটা করেছি। আমি মুনাফিক বা ভণ্ড নই। সরকারি অর্থ গরীবের দেয়া ট্যাক্স থেকে আসে; তা আমাকে আল্লাহ বুঝিয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ  উপদেষ্টা নাহিদকে সতর্ক করলেন সোহেল রানা

এ দরিদ্র দেশে আমার জন্য বরাদ্দ কোটি টাকার গাড়ি, দুজন বডিগার্ড, দুজন ড্রাইভার, অফিসের অর্ডারলি ইত্যাদিসহ মোটা অংকের বেতন ভাতা, সোর্স মানি নেয়া অন্যায় কাজ বলে আমার বরাবরই মনে হয়েছে। তারপরেও আমাকে এসব সুবিধা নিতে হয়েছে।

কারণ, আমি একটা বিবেকহীন আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে ছিলাম। আজ আমি মুক্ত বিহঙ্গ। আহ কী শান্তি! আল্লাহর পথে স্বাধীনভাবে আমি আজ থেকে কাজ করতে পারব। আলহামদুলিল্লাহ।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ