28 C
Dhaka
Sunday, October 19, 2025

হিজাব পরতে বলায় ধর্মী*য় নেতার পাগড়ি খুলে মাথায় পরলেন নারী

ইরানে নারীদের অধিকার আদায় আন্দোলনে নতুন এক অধ্যায় যোগ হয়েছে তেহরান বিমানবন্দরে নারীর প্রতিবাদে। ঘটনাটি ইরানে চলমান হিজাববিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য সানের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, তেহরানের মেহরাবাদ বিমানবন্দরে বাধ্যতামূলক হিজাব না পরায় এক ধর্মীয় নেতা (আলেম) ওই নারীর সঙ্গে তর্কে জড়ান। তখন ওই নারী উত্তেজিত হয়ে ওই আলেমের পাগড়ি খুলে নিজের মাথায় পরেন।

পরে তিনি রেগে গিয়ে আলেমকে প্রশ্ন করেন, এখন আপনার সম্মান হয়েছে? এরপর তিনি চিৎকার করে বলেন, তুমি আমার স্বামীর সঙ্গে কী করেছ? তার এই বক্তব্যে তীব্র প্রতিবাদ এবং সরকারের বাধ্যতামূলক হিজাব আইন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ পায়।

আরও পড়ুনঃ  এখন নির্বাচন হলে কোন দল কত ভোট পাবে, উঠে এল জরিপে

এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে এবং নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। তবে, ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) সঙ্গে সম্পর্কিত সংবাদমাধ্যম মাশরেগ নিউজ দাবি করেছে, এটি হিজাব নিয়ে কোনো প্রতিবাদ নয় এবং ওই নারী মনের সমস্যায় ভুগছেন।

সংবাদমাধ্যমটির দাবি অনুযায়ী, ওই নারীকে কিছু সময়ের জন্য আটক করা হয়েছিল এবং অভিযোগকারীদের সম্মতিতে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

ঘটনাটি এমন একটি সময়ে ঘটেছে, যখন ইরানে নারীদের হিজাব পরার বাধ্যবাধকতা নিয়ে তীব্র আলোচনা চলছে। বিশেষ করে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে মাহসা আমিনির পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু এবং তার পরবর্তী প্রতিবাদ আন্দোলনের পর হিজাববিরোধী আন্দোলন আরও জোরালো হয়ে উঠেছে।

আরও পড়ুনঃ  জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

ইরানের সরকার নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে এবং বিমানবন্দরসহ জনসমাগমস্থলে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এই ধরনের ঘটনাগুলোর পর সরকার প্রায়ই ভিন্নমত পোষণকারীদের ‘মানসিক রোগ’ হিসেবে চিত্রিত করে, যদিও ইরানি মনোবিজ্ঞানী সংগঠনগুলো একে নিন্দা করেছে।

মাশরেগ নিউজের দাবি প্রত্যাখ্যান করে, অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ঘটনার প্রশংসা করেছেন এবং একে ‘অসাধারণ প্রতিবাদ’ বলে অভিহিত করেছেন। ২০২৩ সালে হিজাব না পরার কারণে হাজার হাজার নারী গ্রেপ্তার, জরিমানা ও বিচারিক প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হয়েছেন। সরকারের নতুন পদক্ষেপের আওতায় নারীদের হিজাব আইন অনুসরণে বাধ্য করতে নানা আইন প্রয়োগের চেষ্টা

আরও পড়ুনঃ  আওয়ামী লীগের গণজমায়েত প্রতিহত করার ঘোষণা ‘শিশুবক্তা’ মাদানীর

এ পরিস্থিতিতে মানবাধিকার সংস্থা এইচআরএনএ রিপোর্ট করেছে যে, গত বছর ৩০ হাজারের বেশি নারীর বিরুদ্ধে বাধ্যতামূলক হিজাব আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে এবং তাদের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

উল্লেখ্য, ইরান সরকার সম্প্রতি ‘চরিত্র ও হিজাব আইন’ কার্যকর করার উদ্যোগ নিয়েছে, যা নারীদের স্বাধীনতার ওপর আরও বিধিনিষেধ আরোপ করবে। তবে, আইনটি কার্যকর করতে সরকারের সতর্কতা রয়েছে, কারণ এতে জনগণের বিরোধিতা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ