বাড়ির দেয়ালে লাল রং দিয়ে লেখা ‘সমন্বয়ক মরার জন্য প্রস্তুত হ’। যাকে উদ্দেশ্য করে হুমকি দেওয়া হয়েছে, তিনি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমন্বয়কের কাজ করা মোহাইমিনুল ইসলাম। সোমবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় তার বাড়ির দেয়ালে দুর্বৃত্তরা হুমকি দিয়ে এমন লেখা লিখে যায়। এ অবস্থায় আতঙ্কে আছে তার পরিবার।
এ নিয়ে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) রাত আটটার দিকে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। মোহাইমিনুল ইসলাম ঈশ্বরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের আবদুল মোতালিবের ছেলে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের পাশাপাশি ঈশ্বরগঞ্জ এলাকায় সমন্বয়ক হিসেবেও তিনি কাজ করছেন।
মোহাইমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী এক চাচা মারা যাওয়ায় রাত একটার দিকে ঘুমাতে যাই। ধারণা করছি, ভোররাতের কোনো একসময় লাল রং দিয়ে হুমকি দেওয়া কথাগুলো লিখে গেছে দুর্বৃত্তরা। চাচার জানাজা শেষে জিডি করতে যেতে দেরি হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর পরিবারের সবাই উদ্বিগ্ন। বিষয়টি নিয়ে সবাই ভয়ে আছেন।
একই সঙ্গে জাতীয় নাগরিক কমিটির ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা শাখার সদস্য মো. আকাশ মিয়াকে (২৫) ৭ জানুয়ারি মুঠোফোনে হত্যার হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে আকাশ মিয়া ৮ জানুয়ারি ঈশ্বরগঞ্জ থানায় একটি জিডি করেন। আকাশ মিয়া উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামের মো. নাজমুজ্জামানের ছেলে। তবে আজ বিষয়টি সামনে এসেছে।
এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ময়মনসিংহের অন্যতম সমন্বয়ক আশিকুর রহমান প্রশাসনের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, জাতীয় নাগরিক কমিটির ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার প্রতিনিধি আকাশকে হত্যার হুমকির পর এখন আবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় নেতৃত্ব দেওয়া অন্যতম ছাত্র প্রতিনিধি মোহাইমিনুলের বাসার দেয়ালে লিখে হত্যার হুমকি দেওয়া হলো। তারা দ্রুত জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছেন।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, দেয়ালে হুমকির কথা লিখে যাওয়ার বিষয়টির সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া যায়নি। পুলিশ নিজেদের মতো করে বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছে। এ ছাড়া মুঠোফোনে হুমকির ঘটনায় থানার একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আদালতে এই ঘটনার তদন্তের জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছে। অনুমতি পেলে সেটির তদন্ত শুরু হবে।