যশোরের চৌগাছায় ‘হানি ট্রাপ’ বা যৌন ফাঁদ পেতে অর্থ আদায়কারী একটি চক্রের ছয় সদস্যকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) রাতে চৌগাছা পৌর এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। বুধবার বিকেলে আটককৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন চৌগাছার যাত্রাপুর গ্রামের আলমগীর হোসেনের স্ত্রী রূপালী খাতুন, উত্তরকয়ারপাড়া গ্রামের শাহজাহান আলীর ছেলে নান্নু মিয়া, মহেশপুর উপজেলার মান্দারবাড়িয়া গ্রামের আয়ুব হোসেনের ছেলে জাহিদ হোসেন, মনমতপুর গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে দেলোয়ার হোসেন, একই গ্রামের আবদুল মান্নানের ছেলে হৃদয় মহিফুল এবং উত্তর কয়ারপাড়া গ্রামের নান্নু মিয়ার স্ত্রী জাকিয়া সুলতানা।
জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের প্রকাশিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, চৌগাছার রুস্তমপুর গ্রামের এক যুবক আব্দুর রহমান ‘হানি ট্রাপ’ চক্রের শিকার হয়ে তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েন। তাকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে মহিলাকে দিয়ে ডেকে নিয়ে যায় চক্রটি। পরে তাকে ‘হানি ট্রাপের’ মাধ্যমে ফাঁদে ফেলে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ সুপারের নির্দেশে জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি টিম অভিযান চালায়।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে কলেজে তালা
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) চৌগাছা চান্দা আফরা গ্রামে অভিযান চালিয়ে ভিকটিম আব্দুর রহমানকে উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যে চৌগাছা পৌর এলাকায় অভিযান চালিয়ে হানি ট্রাপ চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, আটক রূপালী খাতুনের সঙ্গে ভিকটিম আব্দুর রহমানের পূর্ব পরিচয় ছিল। তিনি প্রলোভন দেখিয়ে মঙ্গলবার বেলা ১১টা ১৫ মিনিটের দিকে আব্দুর রহমানকে তার বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত থাকা ৭ থেকে ৮ জন ব্যক্তি আব্দুর রহমানকে ঘরের ভিতরে নিয়ে মারপিট শুরু করে। পরে তাকে চান্দা আফরা গ্রামের জহুরুলের বাড়িতে আটকে রাখা হয়।
আসামিরা ভিকটিমের সঙ্গে থাকা নগদ দুই হাজার চারশ’ টাকা এবং মোবাইল ফোন কেড়ে নেন। ভিকটিমের মোবাইল থেকে তার বড় ভাইয়ের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে এক লাখ টাকা দাবি করা হয়। এরপর ভিকটিমকে জহুরুলের বাড়িতে আটকে রেখে বারবার মুক্তিপণ দাবি করা হয়। মুক্তিপণ না দিলে তাকে হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি দেয় চক্রের সদস্যরা।
মঙ্গলবার রাতে ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয় এবং রাত পৌনে ১০টার দিকে চৌগাছা পৌরসভার ধনী প্লাজার সামনে থেকে রূপালী খাতুনকে আটক করা হয়। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর অন্য আসামিদের নাম ও ঠিকানা জানানো হয়। পরে তাদেরও আটক করা হয়। আটককৃতরা পুলিশের কাছে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় ভিকটিমের ভাই মোস্তাক হোসেন বাদী হয়ে চৌগাছা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। বুধবার গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।