ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেঘমল্লার বসু লাল সন্ত্রাসের ডাক দেওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ক্যাম্পাসের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এর প্রতিবাদে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেঘমল্লার বসুকে ‘লাল সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে গ্রেফতারের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছে একদল শিক্ষার্থী।
আজ শনিবার ১৮ জানুয়ারি দিবাগত রাত সোয়া ১২ টায় বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হল পাড়া থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে সন্ত্রাসবাদী রাজু ভাস্কর্য পাদদেশে মিলিত হয়।
এসময় তারা ‘লাল সন্ত্রাসীর ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘লাল সন্ত্রাসী, জঙ্গি বসু’, ’জঙ্গিবাদের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘দিকে দিকে খবর দে, জঙ্গিবাদের কবর দে’, ‘উদ্যানের গাঁজাখোর, উদ্যানে ফিরে যা’, ‘একশন টু একশন, লাল সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একশন’, ‘অ্যাকশন টু একশন, বাম রাজনীতির বিরুদ্ধে অ্যাকশন’, ‘অ্যাকশন টু একশন, শাহবাগীদের বিরুদ্ধে একশন’, ‘জঙ্গি বসুর ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’ ইত্যাদি, ‘হৈ হৈ রই রই’ মেঘ মল্লার গেলি কই’, ‘জঙ্গি বসু, গোসল দে’ স্লোগান দিতে থাকেন।
আরও পড়ুন: একমাত্র পথ লাল সন্ত্রাস: ঢাবি ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি
বিক্ষোভ সমাবেশে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দেক আলী ইবনে মুহাম্মদ বলেন, এদেশে যখনই দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয় খেয়াল করলে দেখবেন তার পেছনে এই লাল সন্ত্রাসীদের হাত রয়েছে। তারা যুগ যুগ ধরে লাল সন্ত্রাসের ঘোষণা দিয়েছে এবং দিবালোকে মানুষকে হত্যা করেছে। তারা সেই লাল সন্ত্রাসকে পুনরায় কায়েম করতে চায়। এখন ডাকসু হলে ২ টা ভোটও পাবে না, তাই আজকে তারা এমন সন্ত্রাস কায়েমের চেষ্টা করছে। যার ফলশ্রুতিতে তারা সেন্ট্রাল লাইব্রেরির পাশের দেয়ালে শিরাজ সিকদারের গ্রাফিতি এঁকেছে। কেউ যদি এমন সন্ত্রাসের চেষ্টা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের বিষদাঁত ভেঙে ফেলবে।
এ বি জোবায়ের বলেন, এনসিটিবির ঘটনার পর একটা গ্রুপ অপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। সেদিন যাদের মদদে হামলা হয়েছে তারাই আজকে লাল সন্ত্রাসের ঘোষণা দিয়েছে। আজকে লাল সন্ত্রাসের ঘোষণা প্রকাশ্যে জঙ্গিবাদের ঘোষণা। যারা লাল সন্ত্রাসের ঘোষণা দিয়ে দেশ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি খারাপ করতে চাচ্ছে তাদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে।
সূর্যসেন হলের আরেক শিক্ষার্থী আজিজুল হক বলেন, এই বামেরা গত ১৬ বছর আওয়ামীলীগের বি টিম কাজ করেছে। ছাত্তদল- শিবিরের উপর হামলা করেছে। আপনারা কি এই লাল সন্ত্রাসীদের আবার সুযোগ দিবেন? আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা এমন সন্ত্রাসীদের পুনরায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দিবো না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই সন্ত্রাসীদের কখনো সুযোগ দিবে না।
এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, বিগত বছরগুলোতে ছাত্রলীগ তাদের অনুগতদের রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছে৷ সেজন্য এই বামেরা এখনো আওয়ামী লীগের ন্যারেটিভ প্রচার করে যাচ্ছে। কিছুদিন আগে ক্যাম্পাসের নিরপত্তা ঠিক করতে উদ্যানের গেট বন্ধ করে দিলে বামেরা এর বিপক্ষে কথা বলে। গতকালও তারা প্রক্টর স্যারের সাথে চরম মাত্রার বেয়াদবি করেছে। আজকে তারা প্রকাশ্যে লাল সন্ত্রাসের ঘোষণা দিয়েছে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরে প্রতিটি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সাথে লাল সন্ত্রাসের হাত ছিলো। ৯২ সালের ডাকসু বন্ধের পেছনেও এই লাল সন্ত্রাসীদের হাত ছিলো। আমরা এই রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে এই লাল সন্ত্রাসী মেঘমল্লার বসুকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবি জানাই।
এরআগে, শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেঘমল্লার বসু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের টাইমলাইনে এক ইংরেজি বার্তায় উল্লেখ করেন, ‘লাল সন্ত্রাসই একমাত্র পথ বা উপায়।’